সকাল সকাল পিহুর ফোনটা বেজে উঠল। বিতনুদার ফোন।
-‘পিহু একটা অনুগল্প লেখোতো ঝটপট। কালকের মধ্যেই। পরে সব কথা জানাবো।’
-‘কী দাদা, কালই! আর আজকে বলছেনা?
- ‘সরি, একদম খেয়াল ছিল না।’
পিহু রাতুলকে সব কথা জানাল। রাতুল পিহুর বর। ওদের বিবাহিত জীবনের পাঁচ বছরের মাইলস্টোন ছুঁতে এখনও মাস কয়েক বাকি। রাতুলই ঠিক করল পিহু একটা প্রেমের গল্প লিখবে। একটা হ্যাপি এন্ডিং থাকবে। সারাদিনের কাজ সেরে দুপুরের খাওয়া সেরে, বছর চারেকের ছেলে ঋককে ঘুমগাড়িয়ে পিহু লিখতে বসল।
পিহু বরাবরই রোম্যান্টিক। প্রেমের গল্প লিখতে ভালোবাসে। লিখতে লিখতেই ফোনটা বেজে উঠলো। অচেনা নাম্বার।
- হ্যালো
কা….র গলা!
-‘কে বলছেন?’
অরিন।
পিহুর বুকের গভীরে তখন অতলান্তিক ঢেউ।
- তুমি ফিরে এসেছো? কেন? কী চাও?
- একবার দেখা কর। খুব দরকার।
সেদিন আমার আর আমার মধ্যে বেড়ে ওঠা প্রাণটারও তোমাকে খুব দরকার ছিল। তুমি পালিয়েছিলে।
- নাম্বার কোত্থেকে পেয়েছে?
ওপার থেকে ভেসে এলো, দেখা কর নাহলে….
- নাহল? নাহলে কী? চীৎকার করে বলল পিহু। নৈঃশব্দ। ওপারে তখন কেউ নেই। ফোনটা কেটে গেছে আগেই। ঘুমন্ত ছেলেকে বুকে আঁকড়ে সমস্ত ভয় ভাবনা ঝেড়ে ফেলতে চাইল পিহু। বিছানায় পড়ে থাকা ফোনটা টেনে নিয়ে ভাবল গল্পটা শেষ করবেই। কিন্তু মুহূর্তেই অতীতটা কোলাজ হয়ে জট পাকিয়ে গেল। মাথার মধ্যে জমা কাহিনীটা এলোমেলো হয়ে গেছে ততক্ষণে। শেষটুকু আর লেখা হল না। গল্পটাও শেষ হল না।।