এইদিন ওয়েবডেস্ক,শ্রীবরদী(বাংলাদেশ),২৫ জুন : বোরখা পড়ে শ্বশুরবাড়িতে ঢুকে স্ত্রী,শ্বশুর, শাশুড়িসহ ৪ জনকে কুপিয়ে খুন করল জামাই মিন্টু মিয়া । ঘটনাটি ঘটেছে বাংলাদেশের শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলার কাকিলাকুড়া ইউনিয়নের পুটল গ্রামে । নিহতরা হলেন মিন্টু মিয়ার স্ত্রী মনিরা বেগম (৪০), শাশুড়ি শেফালী বেগম (৬০) ও জ্যাঠাশ্বশুর নুর মোহাম্মদ ওরফে মাহমুদ হাজী (৬৫) এবং শ্বশুর মনু মিয়া (৪৬) । ওই ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ৩ জন। আহতদের গুরুতর অবস্থায় ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে ।শ্রীবরদী থানার ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক বিপ্লব কুমার বিশ্বাস জানান, প্রাথমিকভাবে জানা গেছে পারিবারিক কলহের জের এই খুনের ঘটনা ঘটেছে । ঘাতক মিন্টু মিয়া পলাতক । তার সন্ধানে তল্লাশি অভিযান চলছে ।
জানা গেছে,প্রায় ১৭ বছর আগে শ্রীবরদীর পুটল গ্রামের মনু মিয়ার মেয়ে মনিরা বেগমের বিয়ে হয় পার্শ্ববর্তী গেরামারা গ্রামের আব্দুল হাইয়ের ছেলে মিন্টু মিয়ার সঙ্গে। বর্তমানে তাদের ২ সন্তান রয়েছে । কিন্তু মিন্টু অলস প্রকৃতির । কাজকর্ম করত না । এনিয়ে স্বামী স্ত্রীর মধ্যে প্রায়ই ঝগড়াঝাটি হত । শেষে গত রমজান মাসে সন্তানদের নিয়ে বাপের বাড়ি চলে আসেন মনিরা বেগম । মিন্টু তার স্ত্রীকে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছিল । কিন্তু মনিরা রাজি হননি ।
পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার (২৩ জুন) রাত সাড়ে ৮টার দিকে মিন্টু মিয়া বোরকা পরে শ্বশুরবাড়িতে আসে । মেয়েলি গলায় ডাকাডাকি করায় প্রথমে তাকে মেয়ে মনে করেছিলেন তাঁরা । তাই খাতির করে তাকে বাড়ির ভিতরে এনে বসানো হয় । আর তখনই স্বমূর্তি ধারন করে মিন্টু । বোরখার ভিতরে লুকিয়ে আনা একটি ধারালো অস্ত্র বের করে পরিবারের লোকজনকে এলোপাথাড়ি কোপাতে শুরু করে । ঘটনাস্থলেই মারা যান মনিরা বেগম । মিন্টু মিয়ার অস্ত্রের কোপে গুরুতর জখম হন শ্বাশুরি শেফালী বেগম ও জ্যাঠাশ্বশুর নুর মোহাম্মদ ওরফে মাহমুদ হাজী, শ্বশুর মনু মিয়া (৭৫), বাচ্চুনী বেগম (৫২) ও শাহাদাৎ হোসেন (৪০) । স্থানীয়রা ওই ৫ জনকে উদ্ধার করে পার্শ্ববর্তী বকশীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মাহমুদ হাজী ও শেফালী বেগমকে মৃত ঘোষণা করেন। অপর ৩ জনকে গুরুতর অবস্থায় ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। শুক্রবার সকালে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মনু মিয়ার মৃত্যু হয় । খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন পুলিশের শীর্ষ স্থানীয় আধিকারিকরা । মিয়ার ব্যবহৃত বোরকাটি পাশের একটি জমি থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ । তবে শনিবার পর্যন্ত পুলিশ খুনি জামাইয়ের কোনো হদিশ করতে পারেনি ।।