এইদিন বিনোদন ডেস্ক,২৮ এপ্রিল : ইসলামি হানাদার আওরঙ্গজেবকে নিয়ে বলিউডের কথিত সেকুলার পরিচালক, অভিনেতা বা অভিনেত্রীকে কোনো নেতিবাচক মন্তব্য করতে শোনা যায়নি । বরঞ্চ তারা নৃশংস ঘাতক আওরঙ্গজেবকে মহিমান্বিত করারই চেষ্টা চালিয়ে যান । কিন্তু তেলেগু সুপারস্টার বিজয় দেবেরকোন্ডা হানাদার মুঘল আর সাম্রাজ্যবাদী ব্রিটিশদের প্রতি তার ঘৃণা উগলে দিয়েছেন । বিজয় দেবেরকোন্ডা বলেছেন, ‘মাঝে মাঝে, আমার আওরঙ্গজেবকে ধরে খুব পেটাতে ইচ্ছা করে । যদি কখনও অতীতে ফিরে যাওয়ার সুযোগ পাই, আমি অবশ্যই তা করব। ভারতের বিরুদ্ধে আওরঙ্গজেব যে অত্যাচার করেছিলেন তা কখনও ভোলা যাবে না ।’
উল্লেখ্য,গাজায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযানের সময় বলিউড অভিনেত্রী মাধুরি দীক্ষিত, সোনাক্ষি সিনহা, স্বরা ভাস্কররা “অল আইস ফর রাফাহ” ট্রেন্ড চালিয়েছিল সোস্যাল মিডিয়ায় । কিন্তু পহেলগামে ইসলামি সন্ত্রাসবাদীদের দ্বারা হিন্দু নরসংহারের পর আজ সেই সমস্ত ছদ্ম ধর্মনিরপেক্ষবাদীরা গর্তে ঢুকে আছে । কিন্তু বিজয় দেবেরকোন্ডা পহেলগামে ইসলামি সন্ত্রাসবাদীদের হামলা নিয়ে খোলামেলা নিজের মতামত রেখেছেন । তিনি কাশ্মীরকে যেমন ভারতের অভিচ্ছেদ্য অংশ বলেছেন,পাশাপাশি তিনি মুসলিম যুব সমাজের মধ্যে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পরা রোধ করতে সুশিক্ষার উপর জোর দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন ।
অভিনেতা বিজয় দেবেরকোন্ডা পাহেলগামে সাম্প্রতিক সন্ত্রাসী হামলার তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়ে হায়দ্রাবাদে একটি সাংবাদিক সম্মেলনে তার ক্ষোভ এবং উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। অভিনেতা সুরিয়া অভিনীত “রেট্রো” ছবির মুক্তির পূর্ববর্তী অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার সময় পরিস্থিতি সম্পর্কে তার মতামত ভাগ করে নেন এবং এই ধরনের সংকট মোকাবেলায় ঐক্যের আহ্বান জানান। বিজয় মৌলবাদ এবং সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে শিক্ষার গুরুত্বের উপর জোর দিয়েছেন । তেলেগু এবং ইংরেজি উভয় ভাষাতেই তিনি বলেন, “কাশ্মীরে যা ঘটছে তার সমাধান হল তাদের (সন্ত্রাসীদের) শিক্ষিত করা এবং তাদের মগজ ধোলাই করা থেকে বিরত রাখা। তারা কী অর্জন করবে? কাশ্মীর ভারতের, এবং কাশ্মীরিরা আমাদের । দুই বছর আগে, আমি কাশ্মীরে কুশির শুটিং করেছি, এবং স্থানীয় মানুষের সাথে আমার খুব ভালো স্মৃতি রয়েছে।
অভিনেতা পাকিস্তানের পরিস্থিতি সম্পর্কেও কথা বলেছেন, দেশটি তার জনগণের মৌলিক চাহিদা পূরণের জন্য লড়াই করছে বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন,’পাকিস্তান তার নিজের জনগণের যত্নও নিতে পারে না, যাদের কাছে সঠিক বিদ্যুৎ এবং জল নেই। তারা এখানে কী করতে চায়? ভারতের পাকিস্তানে আক্রমণ করার দরকার নেই কারণ সেখানকার জনগণ ইতিমধ্যেই তাদের দেশের সরকারের উপর বিরক্ত। যদি পরিস্থিতি এভাবে চলতে থাকে, তাহলে তারা তাদের দেশের সরকারের বিরুদ্ধে যাবে।’ তিনি বলেন,তারা যেভাবে লড়াই করে তা ৫০০ বছর আগের উপজাতি যুদ্ধের মতো। আমাদের জাতি হিসেবে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে এবং একে অপরকে ভালোবাসতে হবে। তবেই আমরা সমাজ হিসেবে এগিয়ে যেতে পারব। শিক্ষাই মূল বিষয়। আসুন আমরা সবাই সুখী থাকি, আমাদের বাবা-মাকে খুশি রাখি, এবং তবেই আমরা উন্নতি করতে পারব।
২২শে এপ্রিল পাহেলগামের কাছে বৈসরান তৃণভূমিতে ২৬ জনকে হত্যা করে পাকিস্তানি সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর সন্ত্রাসবাদীরা । নিহতদের মধ্যে ২৫ জন হিন্দু পর্যটক । তাদের হিন্দু পরিচয়ের জন্যই হত্যা করে সন্ত্রাসীরা । এই ঘটনায় বিজয় সোশ্যাল মিডিয়ায় তার ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। এক্স-এ তার পোস্টে তিনি লিখেছেন,’দুই বছর আগে পাহেলগামে আমার জন্মদিন উদযাপন করেছিলাম, একটি ছবির শুটিংয়ের সময়, হাসির মাঝে, আমার স্থানীয় কাশ্মীরি বন্ধুদের সাথে ঘিরে যারা আমাদের সবচেয়ে বেশি যত্ন নিয়েছিল। গতকাল যা ঘটেছিল তা হৃদয়বিদারক এবং ক্ষোভজনক – নিজেকে একজন বাহিনী হিসেবে দাবি করা এবং পর্যটকদের গুলি করা বন্দুকের আড়ালে লুকিয়ে থাকা অর্থহীন সন্ত্রাসবাদের সবচেয়ে লজ্জাজনক, বিব্রতকর এবং কাপুরুষোচিত কাজ।’।