এইদিন ওয়েবডেস্ক,কলকাতা,১১ নভেম্বর : সোমবার সন্ধ্যায় দিল্লির ঐতিহাসিক লাল কেল্লার কাছে এক গাড়ি বিস্ফোরণে প্রচুর হতাহত হয়েছে, যা দেশজুড়ে ব্যাপক আতঙ্কের সৃষ্টি করেছে । এটি ছিল একটি সন্ত্রাসী হামলা । গণমাধ্যমের খবর অনুসারে, এটি একটি ইকো ভ্যান ব্যবহার করে করা একটি আইইডি বিস্ফোরণ ছিল। হতাহতদের ২৮ জনের নামের তালিকা প্রকাশ করেছে দিল্লি পুলিশ । তার মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ৮ জনের । হতাহতদের মধ্যে রয়েছে বেশ কয়েকজন মুসলিমের নামও । তালিকাটি এক্স-এ শেয়ার করে “মৃত্যুর পর ৭২ হুরের আশায় নিরীহ মানুষ হত্যাকারী” ও সেকুলারিজমের নামে যারা সন্ত্রাসী হামলাকে লঘু করে দেখাতে ভায় তাদের উদ্দেশ্যে কিছু প্রশ্ন রেখেছে রাজ্য বিজেপির যুবমোর্চার সহ-সভাপতি ও কলকাতা হাইকোর্টের আইনজীবী তরুনজ্যোতি তিওয়ারি ।
তরুনজ্যোতি লিখেছেন,’ মানবতার নামে এক প্রশ্ন :
যে মানুষ জান্নাতের আশায়, মৃত্যুর পর ৭২ হুরের আশায় নিরীহ মানুষ হত্যা করে— তার কাছে প্রশ্ন থাকে।আর যারা এসব জানার পরও চোখ বন্ধ রাখে, তারা নিজের বিবেককে প্রশ্ন করুক।’ তিনি লিখেছেন,
‘দিল্লির বিস্ফোরণে ধর্মের দোহাই দিয়ে ব্লাস্ট করা হয়েছে। অনেক পরিকল্পনা করে কাজ চলছিল। শেষ ৩০ দিনে আমাদের সিকিউরিটি এজেন্সি ভারতবর্ষকে ৮ বার ভয়াবহ ঘটনা থেকে বাঁচিয়েছে। দিল্লির ক্ষেত্রে পারেনি । বিশ্বের কোন দেশ পারেনা সব সময় রক্ষা করতে। কিন্তু এখান থেকেও কতগুলো জিনিস আমাকে ভাবাচ্ছে বিশেষত দিল্লির ঘটনার মৃত এবং আহত ব্যক্তিদের নামের তালিকা দেখার পর। যে বিস্ফোরণে প্রাণ গেছে— সেখানে হিন্দু মুসলমান সবাই রক্তাক্ত। যারা বোম ব্লাস্ট করালো তারা বুঝতে পারেনি তার শিকারদের মধ্যে নিজের ধর্মের মানুষও আছে? আসলে তাদের কাছে মানুষ খুন আসল ছিল। নিজের ধর্মের লোক আছে সেটা বুঝতে পারেনি হয়তো।’
তরুনজ্যোতির প্রশ্ন,’তাহলে তারা কাকে খুশি করছে? যে আল্লাহ নাকি তাদের দয়া, শান্তি আর মানবতার শিক্ষা দিয়েছেন— তাঁর নামে মানুষ খুন করে তাঁকেই কি অসম্মান করা হচ্ছে না?মানুষ মেরে কিসের জে হা দ? কিসের যুদ্ধ এটা? এই যুদ্ধ করতে এসে ওদের মৃত্যু তো কুকুরের থেকেও খারাপ হয়। জান্নাত কি এমন পথে মেলে, যেখানে অন্যের রক্তে হাত রঞ্জিত?যেখানে ৭২ হুর নয়, ৭২ অভিশাপ অপেক্ষা করছে?’
তিনি লিখেছেন,’মানব সভ্যতায় এমন কোনও মতবাদ, কোনও চিন্তা, কোনও শিক্ষার জায়গা নেই—যা মানুষকে বিভক্ত করে, বিদ্বেষ শেখায়, কিংবা হত্যার যুক্তি দেয়।মানবতা কখনও ধর্মের শত্রু নয়— কিন্তু যারা ধর্মের নামে ঘৃণা ছড়ায়,তারা মানবতার শত্রু। শান্তি হোক— সকল ধর্মের প্রকৃত মর্ম যেন মানবতার পথেই ফিরে আসে।’
তাঁর কথায়,’যে ধর্ম বিধর্মীদের হত্যার কথা বলে সেটা মানবজাতির ধর্ম হতে পারে না। যে ধর্ম বলে যে আমার ধর্ম একমাত্র সঠিক এবং অন্যান্য ধর্ম শয়তানের সেটা মানবজাতির ধর্ম হতে পারে না। যে ধর্ম অন্য ধর্মের বা অন্য ধর্মের উপাস্য দেবদেবীর অস্তিত্বকে অস্বীকার করে সেটা মানবজাতির ধর্ম হতে পারে না। কেউ একজন ঠিকই বলেছিল, ” THE WORLD WOULD HAVE BEEN A PEACEFUL PLACE WITHOUT THE SELF CLAIMED RELIGION OF PEACE “
একদিকে “হোয়াইট -কলার সন্ত্রাসী বাস্তুতন্ত্র”-এর উন্মোচন এবং প্রচুর অস্ত্র বিস্ফোরক উদ্ধারের প্রক্রিয়ার মধ্যেই দিল্লিতে সন্ত্রাসী হামলার পর “সন্ত্রাসবাদের ধর্ম” হয় কি হয়না , তা নিয়ে জোর চর্চা চলছে সোশ্যাল মিডিয়ায় । বর্ষীয়ান সাংবাদিক রাহুল শিবশঙ্কর বলছেন, ‘সন্ত্রাসের একটা ধর্ম আছে। ৪ জন ডাক্তার জিহাদি হয়ে ওঠা তার প্রমাণ। “RAW DISPATCH FROM MY DESK” বইয়ে আমি ব্যাখ্যা করেছি যে, যদি মৌলবাদ চাকরির বিষয় হত, তাহলে “সাদা কোট পরা সন্ত্রাসীদের” কোনও কারণ থাকত না। এবং এটাই সত্য যে আমাদের “জাগ্রত” বুদ্ধিজীবীরা মুখোমুখি হতে অস্বীকার করে।’
অন্যদিকে এআইএমআইএম দলের ওয়ারিশ পাঠানের কথায়, ‘সন্ত্রাসবাদীদের কোনো ধর্ম হয় না । সন্ত্রাসবাদকে কোনো ধর্মের সঙ্গে জুড়ে দেওয়া উচিত নয় ।’ তিনি নাথুরাম গডসে কে স্বাধীন ভারতের প্রথম সন্ত্রাসী এবং ইন্দিরা-রাজীব হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় কারা জড়িত প্রশ্ন তোলেন৷।

