ভারতের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধীর ইতালীয় বংশোদ্ভূত ক্যাথলিক খ্রিস্টান স্ত্রী আন্তোনিয়া আলবিনা মাইনো ওরফে সোনিয়ার জীবন কিছু সাংবাদিকের সর্বদা নজরে থাকেন । সোনিয়ার অতীত জীবন আজও একটা প্রহেলিকা । সাম্প্রতিক সময়ে হাঙ্গেরিয়ান-আমেরিকান ইহুদি বিতর্কিত শিল্পপতি জর্জ সোরোস,যিনি বহু দেশের সর্বনাশ করেছেন, বর্তমানে ভারতকে অস্থিতিশীল করার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সরকারের সঙ্গে উঠেপড়ে লেগেছে,তার সঙ্গে সোনিয়া ও তার পুত্র রাহুল(যাকে রাউল ভিঞ্চি বলে সম্বোধন করে বাংলাদেশি সাংবাদিক সালাহ উদ্দিন সোয়েব চৌধুরী)-এর সঙ্গে গোপন সম্পর্ক নিয়ে বিতর্ক উঠছে বারবার । বিশেষ করে বাংলাদেশি সাংবাদিক সালাহ উদ্দিন সোয়েব চৌধুরী এই ‘গোপন সম্পর্ক’ নিয়ে লাগাতার লিখে যাচ্ছেন । রাজীব গান্ধীর হত্যার পর তার স্ত্রী সোনিয়ার সঙ্গেও ‘কুখ্যাত’ জর্জ সোরোসের ‘রহস্যজনক’ যোগসূত্র পাওয়া যায় । যা ঘিরে প্রশ্ন উঠেছে বারবার ।
সনাতনী হিন্দু রাকেশ এই বিষয়ে বহু চাঞ্চল্যকর তথ্য তুলে ধরেছেন তার টেলিগ্রাম চ্যানেলে । তিনি লিখেছেন, রাজীব গান্ধীকে ১৯৯১ সালের ২১ মে হত্যা করা হয়েছিল এবং ঠিক এক মাস পরে, ১৯৯১ সালের ২১ জুন, ‘রাজীব গান্ধী ফাউন্ডেশন’ নামে একটি এনজিও গঠিত হয়েছিল। সোনিয়া গান্ধী ১৯৯৩ সালে ব্রিটেনে রাজীব গান্ধী ফাউন্ডেশনের শাখা খোলেন এবং ব্রিটিশ সরকার তার উপস্থিতিতে এই বিষয়ে একটি প্রস্তাব পাস করে। ওই বছর সোনিয়া গান্ধী রাজীব গান্ধী ফাউন্ডেশন সম্পর্কিত কাজের জন্য আমেরিকা যান। কাজটি কী সে বিষয়ে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি । এদিকে একই বছর ১৯৯৩ সালে, জর্জ সোরোস নিউ ইয়র্কে ওপেন সোসাইটি ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা করেন।
এটা কি কাকতালীয় ?
১৯৯৪ সালের ডিসেম্বরে, ফোরাম অফ ডেমোক্রেটিক লিডারস ইন দ্য এশিয়া-প্যাসিফিক (FDL-AP) নামে একটি এনজিও শুরু হয়েছিল। আরও কিছু লক্ষ্য ছাড়াও এই এনজিওর মূল লক্ষ্য ছিল ‘স্বাধীন কাশ্মীর‘! হ্যাঁ, আপনি ঠিকই পড়েছেন, ‘স্বাধীন কাশ্মীর’ এর পরবর্তী ঘটনাগুলো শুনলে হতবাক হয়ে যাবেন ।
সোনিয়া গান্ধী, ‘রাজীব গান্ধী ফাউন্ডেশনের চেয়ারপার্সন’ হিসাবে, এই ফোরামের সহ-সভাপতি ছিলেন। আবারও বলছি, রাজীব গান্ধী ফাউন্ডেশনের চেয়ারপার্সন ! প্রায় সব এফডিএল-এপি সদস্যই ছিল মার্কিন-পন্থী! সোরোস ফাউন্ডেশন (ওপেন সোসাইটি ফাউন্ডেশন) এই এনজিওর অন্যতম প্রধান অর্থদাতা ছিল। হ্যাঁ, সোরোস ফাউন্ডেশন মুক্ত কাশ্মীরের লক্ষ্যে এনজিওকে অর্থায়ন করছিল এবং সোনিয়া গান্ধী এতে অংশ নিয়েছিলেন।
এখন কান্দাহার বিমান ছিনতাই সংক্রান্ত চমকপ্রদ তথ্য পড়ুন…কান্দাহার বিমান ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছিল ১৯৯৯ সালে। কান্দাহারে পৌঁছানোর আগে, বিমানটি জ্বালানি ভরার জন্য সংযুক্ত আরব আমিরাতে অবতরণ করেছিল। সংযুক্ত আরব আমিরাত কর্তৃপক্ষ মার্কিন রাষ্ট্রদূতকে বিমানবন্দরে প্রবেশের অনুমতি দিলেও ভারতীয় রাষ্ট্রদূতকে প্রবেশ করতে দেয়নি। এটা কি জঘন্য কাজ নয়? এর পরে, সন্ত্রাসীরা বিমান নিয়ে আফগানিস্তানের কান্দাহারে পৌঁছেছিল, যেটি তখন তালিবানের নিয়ন্ত্রণে ছিল। এখানে আরেকটি সত্য হল যে আমেরিকা তখন রাশিয়াকে মোকাবেলা করার জন্য তালিবানদের সমর্থন করেছিল।
বিমান ছিনতাইকারীরা প্রথমে ৩৬ জন সন্ত্রাসীর মুক্তি দাবি করলেও দর কষাকষির পর মাসুদ আজহারসহ ৩ সন্ত্রাসীকে মুক্তি দিতে রাজি হয় । আর সেই ৩৬ জনের ওই তালিকায় একজনের নাম ছিল সন্ত্রাসী লতিফের, কিন্তু তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়নি। এখন এই মজার নামটি মনে রাখবেন এবং পরবর্তী ঘটনাগুলি পড়তে থাকুন ।
মাসুদ আজহারের প্রতি এফবিআইয়ের বিশেষ আগ্রহ ছিল। ১৯৯৫ থেকে ১৯৯৮ সালের মধ্যে বেশ কয়েকবার এফবিআই তার ‘সাক্ষাৎকার’ নিয়েছিল, যখন তিনি ভারতীয় জেলে ছিলেন! মনে রাখবেন যে ‘সাক্ষাৎকার’…কার? সন্ত্রাসী মাসুদ আজহারের । কে নিল? মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই। মুক্তির পর সন্ত্রাসী মাসুদ আজহার আইএসআই-এর সহায়তায় পাকিস্তানে পৌঁছে জইশ-ই-মোহাম্মদ নামে একটি সন্ত্রাসী সংগঠন শুরু করে, যার লক্ষ্যও ‘মুক্ত কাশ্মীর‘!
মুক্ত কাশ্মীরের এই পোস্ট থেকে কিছু মিস করেছেন? এখন আরও পড়ুন….২০০১ সালে জুন মাস, সোনিয়া গান্ধী তার সহকর্মীদের (মনমোহন সিং, নটওয়ার সিং, মুরলি দেওরা, জয়রাম রমেশ) সঙ্গে পাঁচ দিনের জন্য আমেরিকা যান। কিন্তু সেখানে পৌঁছানোর আগেই তিনি ব্রিটেন ও আইসল্যান্ড সফর করেন। দুই দেশই ট্যাক্স হেভেন ! আমেরিকায় কাউন্সিল অন ফরেন রিলেশন ও হেনরি কিসিঞ্জারের সঙ্গে ‘বন্ধ কক্ষ’ বৈঠকে বসেন সোনিয়া গান্ধী! কাউন্সিল অফ ফরেন রিলেশন কী এবং এর ক্ষমতা কী? এটি সম্পর্কে জানতে এই ছবিটি দেখুন। তিনি ‘দ্য আমেরিকান এমপায়ারস এন্ড ইটস মিডিয়া’ শীর্ষক একটি নামের তালিকাসহ ছবিও পোস্ট করেন । যদিও তালিকার ব্যক্তিদের ছবি ও নাম স্পষ্ট নয় ।
এরপর তিনি লিখেছেন, এই লোকেরাই এর অংশ এবং সবকিছু ঠিক করে, এমনকি আমেরিকার রাষ্ট্রপতিও!
এর পর আপনিও বুঝতে পারবেন সোশ্যাল মিডিয়া ও মিডিয়ার ভূমিকা! এই সফরে সোনিয়া গান্ধীর সহযোগী নটবর সিং-এর মতে, সোনিয়া গান্ধী সেখানে খুব বিশেষ লোকের সঙ্গে দেখা করবেন বলে আশা করেছিলেন। তবে এই বিশেষ ব্যক্তিরা কারা তা তিনি প্রকাশ করেননি। মাত্র কয়েক মাস পরে,২০০১ সালের ১৩ ডিসেম্বর, জইশ-ই-মোহাম্মদ সন্ত্রাসীরা ভারতীয় সংসদে হামলা চালায়। সংসদে হামলা হলে সোনিয়া গান্ধী সকলের আগেই সংসদ ত্যাগ করেছিলেন!
২০০৪ সালের নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পর, সোনিয়া গান্ধী সরকার চালানোর জন্য একটি NAC গঠন করেন। হর্ষ মান্ডার এবং অরুন্ধতী রায় (The Kashmir Files মুভিতে পল্লবী যোশী চরিত্রটি মনে আছে?) এই NAC-এর অংশ ছিল! মজার ব্যাপার হলো, দুজনেই ভারতে জর্জ সোরোসের হয়ে কাজ করেছেন ! একটি এনজিও, ‘এইচআরএলএন’, রাজীব গান্ধী ফাউন্ডেশনের সহযোগিতায় শহুরে নকশাল এবং বিচ্ছিন্নতাবাদীদের জন্য সক্রিয়ভাবে কাজ করছে।
এমনকি এই এনজিও সোরোস এবং আমেরিকা থেকে তহবিল পেয়েছে। ২০০৪ সালে ক্ষমতায় আসার পর সোনিয়া গান্ধীর প্রথম সিদ্ধান্ত ছিল সন্ত্রাসবিরোধী আইন POTA বাতিল করা। ২০১০ সালের ২৮ মে, ইউপিএ সরকার ২৫ জন সন্ত্রাসীকে শুভেচ্ছার ইঙ্গিত হিসাবে মুক্তি দেয়। হ্যাঁ,২৫ জন সন্ত্রাসবাদী এবং তাও একটি শুভেচ্ছার অঙ্গভঙ্গি হিসাবে। এর মধ্যে সবচেয়ে চমকপ্রদ ব্যাপার হল ‘লতিফ’ও মুক্তি পেয়েছিল, মাসুদ আজহারের সাথে যার নাম ছিল সেই তালিকায়, এবং সে সময় তাকে মুক্তি দেওয়া হয়নি।
আরটিআই রিপোর্ট অনুসারে, ২০০৪ থেকে ২০১৪ সালের মধ্যে সোনিয়া গান্ধীর বিদেশ সফরের কোনও রেকর্ড সরকারের কাছে নেই। ২০১১ সালের পর, সোনিয়া গান্ধী ‘চিকিৎসা’র কারণে বেশ কয়েকবার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে গিয়েছিলেন। এই তথ্য কংগ্রেসের মুখপাত্রও দিয়েছেন এবং তাও তিনি ভারত ছাড়ার পর!
একইভাবে, ২০১৫ সালের ৩০ নভেম্বর, তিনি ‘মেডিকেল চেকআপ’-এর জন্য তিন দিনের জন্য আমেরিকা যান। ২০১৬ সালের ২ জানুয়ারী পাঠানকোটে একটি হামলা হয়েছিল। সেই হামলার মূল সন্ত্রাসী কে ছিল জানেন? একই ‘লতিফ‘! যাকে ২০১০ সালে ইউপিএ সরকার একটি শুভেচ্ছা ইঙ্গিত হিসাবে মুক্তি দিয়েছিল!