এইদিন ওয়েবডেস্ক,উত্তর ২৪ পরগনা,০৬ আগস্ট : ভালোবেসে এক তরুনীকে বিয়ে করেছিলেন এক সেনাকর্মী । তিন বছর সংসারও করেন তারা । কিন্তু ফেসবুকের মাধ্যমে একের পর এক পুরুষের সঙ্গে স্ত্রী সম্পর্ক গড়ে তুলেছিলেন বলে অভিযোগ । সম্প্রতি এক যুবকের প্রেমে মজে স্বামীকে ছেড়ে পালিয়ে গেছে স্ত্রী । ভালোবাসার মানুষটির এমন বিশ্বাসঘাতকতা মেনে নিতে পারেননি স্বামী । শেষে ক্ষোভে দুঃখে জীবিত স্ত্রীর শ্রাদ্ধ করে তার সঙ্গে যাবতীয় সম্পর্ক ছিন্ন করলেন স্বামী । এই হৃদয়স্পর্শী ঘটনার স্বাক্ষী থাকলো উত্তর ২৪ পরগনা জেলার হিঙ্গলগঞ্জ থানার উত্তর মামুদপুর গ্রামের বাসিন্দারা ।
উত্তর মামুদপুর গ্রামের বাসিন্দা প্রতারিত স্বামী নরেন নায়ক সেনাবাহিনীতে চাকরি করতেন । সম্প্রতি তিনি অবসর নিয়েছেন । বছর তিনেক আগে তিনি যখন কর্মরত ছিলেন, সেই সময় পার্শ্ববর্তী ধলতিথা এলাকার বাসিন্দা বছর ত্রিশের যুবতী সুমিতা সরকারের সঙ্গে তার পরিচয় হয় । ক্রমশ প্রেম ও বিয়ের পিঁড়িতে গিয়ে সেই সম্পর্ক পরিনতি পায়৷ নরেন নায়ক জানান,প্রথম দিকে সব ঠিকঠাকই চলছিল । স্ত্রীর আব্দার মেনে কাশী,মথুরা,বৃন্ধাবন এবং দিঘায় স্ত্রীকে নিয়ে বেড়াতেও গিয়েছিলেন তিনি । এজন্য তার অনেক ধারদেনাও হয়ে যায় । কিন্তু বছর তিনেক সংসার করার পর থেকেই তার স্ত্রীর মধ্যে পরিবর্তন লক্ষ্য করেন তিনি । ফেসবুকে একাধিক পুরুষদের সঙ্গে তার স্ত্রী প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলেছিলেন বলে অভিযোগ । অবশেষে সম্প্রতি তার স্ত্রী হঠাৎ করে একদিন বাড়ি থেকে নিখোঁজ হয়ে যায় ।
তিনি বলেন,’আমি অনেক খোঁজাখুঁজি করি । শেষ পর্যন্ত জানতে পারি যে আমার স্ত্রী একজন পুরুষের সাথে নতুন সংসার পেতেছে ।’ তিনি আরও বলেন, ‘সে হয়তো ভেবেছিল আমার অবসরের পর অনেক টাকার মালিক হবে । কিন্তু তার সেই আশা পূর্ণ না হওয়ায় আমার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করে অন্য পুরুষের সাথে পালিয়ে গেছে । তাই আমিও তার শ্রাদ্ধ করে সমস্ত সম্পর্ক ছিন্ন করে দিলাম ।’
মঙ্গলবার নিজের বাড়ির উঠানে হরি মন্দিরের সামনে সামিয়ানা খাটিয়ে স্ত্রী সুমিতা সরকারের শ্রাদ্ধের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করেন । যজ্ঞের আগুনে স্ত্রীর যাবতীয় ছবি পুড়িয়ে দেন । বাড়ির অদূরে একটা পুকুরপাড়ে স্ত্রীর কুশপুতুল দাহ,পিন্ডদান, মস্তক মুন্ডনের পর স্নান করে নতুন ধুতি পরে বাড়ি আসেন তিনি । স্ত্রীর শ্রাদ্ধে মধ্যাহ্ন ভোজেরও ব্যবস্থা ছিল।
নরেনবাবুর এক প্রতিবেশী যুবক বলেন,’নরেন ভালোবেসে বিয়ে করেছিল৷ সে তার স্ত্রীকে খুব ভালোবাসতো । সীমিত সামর্থের মধ্যে রেফ্রিজারেটর থেকে শুরু করে এসি পর্যন্ত স্ত্রী যাবতীয় আব্দার পুরনও করেছিল । কিন্তু স্ত্রীর এই প্রকার বিশ্বাসঘাতকতা সে মেনে নিতে পারেনি । কয়েকদিন খুব মনকষ্টে ছিল । শেষ পর্যন্ত স্ত্রীর শ্রাদ্ধের আয়োজন করে তার সঙ্গে যাবতীয় সম্পর্ক ছিন্ন করলেন তিনি ।’।