প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,০৫ নভেম্বর : এসআইআর (SIR) আবহে বস্তাবন্দি অবস্থায় জলাশয় থেকে উদ্ধার হল বাণ্ডিল বাণ্ডিল আধার কার্ড।তা নিয়ে বুধবার ব্যাপক চঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে পূর্ব বর্ধমানের পূর্বস্থলীতে।পুলিশ এই ঘটনার খবর পেয়েই ওই জলাশয়ের কাছে পৌছে যায়।জলাশয় থেকে উদ্ধার হওয়া সমস্ত আধার কার্ড পুলিশ বাজেযাপ্ত করে থানায় নিয়ে যায়। জলাশয়ে এত আধার কার্ড কি ভাবে পৌছাল তার তদন্ত পুলিশ শুরু করেছে। তরই মধ্যে এই ঘটনা নিয়ে চরমে উঠেছে শাসক ও বিরোধীদের রাজনৈতিক তর্জা। বিজেপি নেতারা দাবি করছে এসআইআর এখন কার্বলিক অ্যাসিডের মতোন কাজ করছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে পূর্বস্থলী ২ নম্বর ব্লকের পিলা পঞ্চায়েত এলাকার প্রত্যন্ত গ্রাম ললিতপুর ।এই গ্রামের একটি বিলে জমে থাকা পানা পরিস্কারের কাজ শুরু হয়েছিল। বুধবার সকালেও চলছিল পানা পরিস্কারের কাজ ।তখনই একধীক বস্তা ভর্তি অবস্থার উদ্ধার হয় বান্ডিল বান্ডিল আধার কার্ড। ঘটনা জানাজানি হতেই এলাকায় তুমুল চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। কালনা মহকুমা পুলিশ আধিকারিক (এসডিপিও) রাকেশ চৌধুরী জানিয়েছেন,“উদ্ধার হওয়া সমস্ত আধার কার্ড পুলিশ বাজেয়াপ্ত করেছে। এত আধার কার্ড করা বিলে ফেললো তার তদন্ত শুরু হয়েছে“।
এদিন পানা পরিস্কারের কাজ চলার সময়ে ললিতপুর গ্রামের কয়েকজন বাসিন্দা ওই বিলের কাছে পিঠে ছিলেন।তাঁরা বলেন ,’পানা পরিস্কারের কাজ চলার সময়ে শ্রমিকরা ওই বিলের মধ্যে ৩ টি বস্তাভর্তি অবস্থায় কিছু পড়ে থাকতে দোখেন । সন্দেহ হওয়ায় তারা ওই বস্তা বিল থেকে পাড়ে তুলে নিয়ে এসে বস্তার মুখ খোলেন । তখনই সবার চোখ কপালে ওঠে।দেখাযায় ওই বস্তায় ভর্তি রয়েছে বাণ্ডিল বাণ্ডিল আধার কার্ড । বিলের পাড়ে ওই অধার কার্ড ছড়িয়ে দেওয়া হলে তা দেখার জন্য বহু মানুষ সেখানে ভিড় জমান । তারা দেখেন উদ্ধার হওয়া বেশীরভাগ আধার কার্ডে পিলা ও স্থানীয় হামিদপুর এলাকার ঠিকানা লেখা রয়েছে। এদিন বেলা ১২ টা নাগাদ পূর্বস্থলী থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে ওই সমস্ত আধার কার্ড গুলি নিয়ে যায় ।
এদিকে এসআইআর আবহে বিল থেকে বাণ্ডিল বাণ্ডিল আধার কার্ড উদ্ধারে ঘটনা জানাজানি হতেই শুরু হয়ে গিয়েছে শাসক ও বিরোধীদের রাজনৈতিক তর্জা। এলাকার তৃণমূল বিধায়ক তপন চট্টোপাধ্যায় বলেন, কারা বিলে এত আধার কার্ড ফেলে গেল তা জানি না । তবে উদ্ধার হওয়া আধার কার্ড গুলি দেখে আমার মনে হয়েছে সেগুলি ’ডুপ্লিকেট’ আধার কার্ড । আগে ৫০০-৭০০ টাকার বিনিময়ে আধার কার্ড হতো। এখন সেসব বন্ধ করা হয়েছে। আগের আধার কার্ড গুলোকেই কেউ ফেলে গেছে বলে আমার মনে হচ্ছে। তবে বিল থেকে আধার উদ্ধার কাণ্ড নিয়ে বিধায়ক তপন চট্টোপাধ্যায় বিজেপিকেই কাঠগড়ায় তুলেছেন।
যদিও জেলা বিজেপি নেতা মৃত্যুঞ্জয় চন্দ্র বলেন,আমাদের মনে হচ্ছে ওই আধার কার্ড গুলি ভুয়ো ভোটারদের ভুয়ো আধার কার্ড হবে। এইজন্যই তো ‘আদাদের দলের নেতা শুভেন্দু আধিকারী বলেছেন এসআইআর (SIR) কার্বলিক অ্যাসিডের মতোন কাজ করছে। এসআইআর লাগু হতেই দলে দলে অবৈধ অনুপ্রবেশ কারীদের বাংল ছেড়ে পালানো এবং বিল থেকে বাণ্ডিল বাণ্ডিল আধার উদ্ধারের ঘটনা,শুভেন্দু অধিকারীর বক্তব্যকেই কার্যত সত্য প্রমাণ করছে ।’ মৃত্যুঞ্জয়বাবু দাবি করেন,’SIR -এর দৌলতে বাংলার মানুষ আগামী একমাস এমন আরো নানা ঘটনা দেখতে পাবেন ।’।

