এইদিন ওয়েবডেস্ক,মঙ্গলকোট(পূর্ব বর্ধমান),০৩ জুলাই : তৃণমূল কর্মীকে খুনের মামলায় জেলবন্দি দলীয় নেতাকে ‘দলের সম্পদ’ বললেন রাজ্যের মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী । আজ সোমবার সকালে বর্ধমান সংশোধনাগার থেকে প্যারোলে মুক্তি পেয়ে স্ত্রীর শেষকৃত্য অনুষ্ঠানে যোগ দিতে পূর্ব বর্ধমান জেলার মঙ্গলকোটের মাঝিগ্রামে নিজের বাড়িতে আসেন বিকাশনারায়ন চৌধুরী নামে ওই নেতা । বিকেল নাগাদ বিকাশ চৌধুরীর সঙ্গে দেখা করতে আসেন রাজ্যের মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী । সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে মন্ত্রী বলেন,’বিকাশবাবু দলের সম্পদ। তিনি এখনও যে জেলে আছেন এটা খুবই দুঃখের বিষয় । মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে তার বিষয়ে আমার কথা হয়েছে ৷ বিকাশবাবুর স্ত্রী বিয়োগ হয়েছেন । আমি সমবেদনা জানাতে এসেছি । আমার হাতে ক্ষমতা থাকলে বিকাশবাবুকে আর জেলে থাকতে হত না । তিনি দ্রুত ছাড়া পেলে আমি খুব খুশি হব ।’ উল্লেখ্য,২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে সিদ্দিকুল্লা চৌধুরীকে মঙ্গলকোটে টিকিট দেয় দল । সেই সময় বিকাশনারায়ন চৌধুরী সিদ্দিকুল্লার নির্বাচনী এজেন্টের দায়িত্ব সামলেছিলেন ।
প্রসঙ্গত,মঙ্গলকোটের তৃণমূলের প্রাক্তন জেলা পরিষদের সদস্য ছিলেন মাঝিগ্রামের বাসিন্দা বিকাশনারায়ন চৌধুরী । যে খুনের মামলায় তিনি জেলবন্দি রয়েছেন সেটি হয়েছিল ২০১৭ সালের ১৯ শে জুন সন্ধ্যা সাড়ে ছটা নাগাদ । ওইদিন দুষ্কৃতীরা মঙ্গলকোটের তৃণমূল নেতা ডালিম শেখকে খুব কাছ থেকে গুলি করে খুন করে পালিয়ে যায় । ঘটনার পরের দিন মৃতের দাদা আশাদুল্লা শেখ মঙ্গলকোট থানায় ১৫ জন তৃনমুল কর্মীর বিরুদ্ধে এফ আই আর রজু করেন । তিনি দাবি করেন তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দলের জেরেই তার ভাইকে খুন হতে হয়েছিল । ওই এফ আই আরে বিকাশ নারায়ন চৌধুরি ও মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরীর এক ভাইয়ের নাম ছিল । প্রথমে পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করে । পরে তদন্ত ভার যায় সিবিআইয়ের হাতে । ২০১৮ সালের এপ্রিল মাসে বিকাশ নারায়ন চৌধুরিকে গ্রেফতার করে সিবিআই । তারপর থেকেই বর্ধমান সংশোধনাগারে রয়েছেন তিনি । যদিও ওই খুনের মামলা আদালতে বিচারাধীন রয়েছে ।
জানা গেছে,গত ২১ জুন বিকাশবাবুর স্ত্রী শ্যামলী চৌধুরি মারা গেছেন । বিকাশবাবু নিঃসন্তান । তাই স্ত্রীর পারলৌকিক ক্রিয়ার জন্য গত ২৭ জুন আদালতে প্যারলে মুক্তির জন্য আবেদন করেন তিনি । সেই আবেদনে সাড়া দিয়ে আদালত কয়েক ঘন্টার জন্য তাঁর প্যারল মঞ্জুর করে । এদিন সকাল দশটা নাগাদ বর্ধমান সংশোধনাগার থেকে কড়া পুলিশি প্রহরায় তাকে মাজিগ্রামে আনা হয় । সন্ধ্যার আগে পুনরায় তাঁকে সংশোধনাগারে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় । কারাগারে ফিরে যাওয়ার আগে বিকাশবাবু বলেন,’আমি তৃণমূলে আছি এবং থাকবও ।’।