এইদিন ওয়েবডেস্ক,কলকাতা,১৩ সেপ্টেম্বর : অবশেষে পুলিশের সহায়তায় মঙ্গলবারের বিজেপির ‘নবান্ন অভিযান’ ব্যর্থ করে দিল রাজ্যের শাসকদল । গ্রেফতার হয়েছে বহু বিজেপি কর্মী । আটক হতে হয়েছিল বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ও রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদারকে । শেষ পর্যন্ত হাইকোর্টের বিচারপতির নির্দেশে ব্যক্তিগত বন্ডে ছাড়া পেলেন তাঁরা ।
এদিকে মঙ্গলবারের ‘নবান্ন অভিযান’-এর সময় শুভেন্দু অধিকারীর একটি ভিডিওকে ঘিরে তৃণমূলকে খুব মস্করা করতে দেখা যাচ্ছে । ভিডিওটি অল ইন্ডিয়া তৃণমূল কংগ্রেসের অফিসিয়াল টুইটার হ্যান্ডেল থেকে টুইট করে ক্যাপশনে লেখা হয়েছে,’ভারতের বিজেপির ৫৬-ইঞ্চি বুকের মডেল ভাঙ্গা ! দিনের ঘোষণা : “আমার শরীর স্পর্শ করবেন না। আমি পুরুষ !” ওই ভিডিওটি রিট্যুইট করেছেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় । তবে তিনি কোনো মন্তব্য না করলেও তাতে হাসির ইমোজি দিয়েছেন ৷ আর তাঁর ও তাঁর দলের এই ‘ইঙ্গিতপূর্ণ’ টুইট ঘিরে শুরু হয়েছে বিতর্ক ।
আসলে নবান্ন যাওয়ার সময় সাঁতরাগাছিতে শুভেন্দু অধিকারী ও সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়কে ব্যারিকেড করে আটকে দেয় পুলিশ । পুলিশের সঙ্গে দুই শীর্ষ বিজেপি নেতার দীর্ঘক্ষণ বাকবিতন্ডা চলে । তারই মাঝে দেখা যায় দুই মহিলা পুলিশকর্মী শুভেন্দু অধিকারীকে ঠেলাঠেলি করছেন । তখন শুভেন্দুকে বলতে শোনা যায়,’ডোন্ট টাচ মি,আই এম এ মেল’ ।পাশাপাশি তিনি কোনো পুলিশ আধিকারিককে তাঁর কাছে পাঠাতে বলেন । এরপর শুভেন্দু অধিকারীকে প্রিজন ভ্যানে তুলে লালবাজার নিয়ে যাওয়া হয় । আর এই ভিডিও নিয়ে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ও তৃণমূলের ‘ইঙ্গিতপূর্ণ’ মস্করা নিয়ে তাঁদের ‘রুচিবোধ’ নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন বহু মানুষ । যদিও তাঁরা ভয়ে কেউ প্রকাশ্যে মুখ খুলছেন না । পাশাপাশি শুভেন্দু অধিকারীকে নিয়ে পুলিশের কোনো ‘গোপন গেমপ্লান’ ছিল কিনা তা ভাবাচ্ছে বিজেপিকে । কারন ঘটনার সময় প্রচুর পুলিশ আধিকারিক মজুত থাকলেও দুই মহিলা পুলিশকর্মীকে কেন শুভেন্দুর কাছে পাঠানো হল এনিয়ে প্রশ্ন উঠছে ।
এদিকে এদিন সন্ধ্যা নাগাদ লালভাজার থেকে ছাড়া পেয়ে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ওই ‘ইঙ্গিতপূর্ণ’ টুইটের কড়া ভাষায় জবাব দিলেন শুভেন্দু অধিকারী । তিনি সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বলেন,’কয়লা ভাইপোর একটা টুইট দেখেছেন ? একটা চরিত্রহীন । যে স্ত্রী এবং শালিকাকে ব্যবহার করে অবৈধ টাকা বিদেশে পাচার করেছে । ও আমার সম্পর্কে টুইট করেছে । আমি একজন লেডি অফিসার ক্রিশ্চেনিয়া বেরি ওনার নাম,উনি যখন আমায় ৪-৫ বার ধাক্কা মারে তখন আমি ওকে বলেছি, ‘ডোন্ট টাচ মি,আই এম মেল’ । মানে তার বাংলা করলে দাঁড়ায় আমি পুরুষ মানুষ,মহিলা আপনি,মায়ের জাত, আপনি আমার গায়ে হাত দেবেন না । এটা নিয়ে টুইট করেছে । একটা চরিত্রহীন, একটা ডাকাত,একটা লম্পট, নিজের বউ আর শালিকে দিয়ে টাকা পাচার করে বিদেশে ।’
পাশাপাশি তিনি পুলিশের গাড়িতে আগুন লাগানোর ঘটনা ও পুলিশের উপর হামলার অভিযোগের বিষয়ে বলেন,’তৃণমূলের জিহাদিরা পুলিশের গাড়িতে আগুন লাগিয়েছে ৷ পুলিশের ছোড়া টিয়ার গ্যাসের সেলে কোনো পুলিশকর্মী আহত হয়ে থাকতে পারেন এখানে বিজেপির কোনো সম্পর্ক নেই । আজ বিজেপি কর্মীরা নিরস্ত্র ছিলেন । অধিকাংশ বিজেপি কর্মীর হাতে থাকা ঝান্ডার সঙ্গে ডান্ডা পর্যন্ত ছিল না । আমাদের ২০০-২৫০ জন নেতা কর্মী আহত হয়েছেন । ৫০ জন হাসপাতালে ভর্তি আছেন ।’
পাশাপাশি শুভেন্দু বলেন,’পুলিশের নিচুতলার কর্মীদের বিরুদ্ধে আমাদের এতটুকু লড়াই নেই । বরঞ্চ এরা যাতে তাদের রেশন ফিরে পায় ডিএ ফিরে পায় তাদের পোশাকের সুবিধাও তুলে দেওয়া হয়েছে । তাঁদের পক্ষে ভারতীয় জনতা পার্টি আছে ।’।