এইদিন ওয়েবডেস্ক,কলকাতা,১৫ সেপ্টেম্বর : তৃণমূলের ‘দূর্নীতির রিপোর্ট কার্ডে’-এর প্রথম পর্ব প্রকাশ করলেন বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী । বৃহস্পতিবার ‘উদ্বোধন’ করলেন দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলাকে দিয়ে । জেলার এক বিধায়ক ও তিন জন নেতার সম্পত্তির খতিয়ান তুলে ধরেন শুভেন্দু । প্রথমে তিনি কুলতলির এমএলএ গনেশ চন্দ্র মণ্ডলের সম্পত্তির হিসাব তুলে ধরেন । তিনি বলেন,’গনেশ চন্দ্র মণ্ডলের মোট ৩৯ টি দলিল আমরা হাতে পেয়েছি ।একশ দিনের কাজে সব চেয়ে দূর্নীতি হয়েছে কুলতলিতে । এই দলিলগুলির মধ্যে গনেশ চন্দ্র মণ্ডলের নিজের নামে ১৩ টি । তার স্ত্রী মৌসুমি মণ্ডল এর ১৬ টা । মেয়ে রশনির নামে ৪ টি । মেয়ে ঋত্বিকার ৪ টি । বাবা শিবপদ মণ্ডলের নামে ১ টি । মা মৌরিবালা মণ্ডল যিনি গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্যা তার নামে একটা দলিল রয়েছে ।এই ৩৯ টি অবৈধ সম্পত্তি ১৯ থেকে ২১ সালের মধ্যে কিনেছেন ।’
তিনি বলেন,’এগুলো ডায়মন্ড হারবারের মডেল । আপনারা জানেন ডায়মন্ড হারবারের মডেল সবচেয়ে উৎকৃষ্ট মডেল৷ যে মডেলে সিভিক ভলান্টিয়ার থেকে শিক্ষক নিয়োগে টাকা নেওয়া হয় । একশ দিনের কাজে জব কার্ড গ্রাহকদের কাজ না দিয়ে জেসিবি মেশিন দিয়ে কাজ করা হয় । ফলের বাগান মানে কলা গাছের বাগান । ডায়মন্ড হারবারের মডেল মানে মদের বোতল থেকে ৫ টাকা । সঙ্গে বালি পাথর গরু তো আছেই । এই ডায়মন্ড হারবারের মডেল সবচেয়ে বেশি কার্যকর হয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনা । যেহেতু ওই জেলার মধ্যে কুলতলি পড়ে ।’
শুভেন্দু অধিকারী বলেন, দ্বিতীয় ব্যক্তি হলেন জাহাঙ্গির খান । ইনি তোলাবাজ ভাইপোর সবচেয়ে বড় এজেন্ট । ইনি দক্ষিণ ২৪ পরগনার ফলতার পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি এবং ভারপ্রাপ্ত পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ । বকলমে ইনি চালান,তোলাবাজ ভাইপোর নির্দেশে ।একে দক্ষিণ ২৪ পরগনার মিস্টার ১৫ শতাংশ বলা হয় । এরও দলিল আপাতত ৩৯ টি পেয়েছি । আরও পাবো । পিতা আকবর খান ৬ টি, স্ত্রী সারিকা বিবি ৩৩, সুলতানা বিবি খা পুত্রবধূর ২ টি সম্পত্তি । সব মিলে কয়েক কোটি টাকা ।’
তিনি বলেন,’এবার বলবো ডায়মন্ড হারবার ১ পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ এবং ওই ব্লকের লাল চুল কানে দুল যুব তৃণমূলের সভাপতি গৌতম অধিকারীর সম্পত্তির বিষয়ে । এখনো পর্যন্ত ১১ টা সম্পত্তি পেয়েছি । সবই ২০১৯ থেকে ২০২১ এর মধ্যে কেনা । গৌতম অধিকারীর নামে ৬ টি, তার স্ত্রীর ৩ টি, তৃষা ও শিখা অধিকারীর ২ টি । এই সম্পত্তি বিগত ২০১৮ পঞ্চায়েতের হলফনামায় দেখাননি । এই সমস্ত সম্পত্তি ১০০ দিনের টাকা ও ঠিকাদারদের কাছ থেকে মেরে নিয়ে করা হয়েছে ।’
সব শেষে ডায়মন্ড হারবার ২ নম্বর ব্লকের সামিম মহাবেক মোল্লা নামে এক তৃণমূল নেতার সম্পত্তির খতিয়ান তুলে ধরেন শুভেন্দু । তিনি বলেন,’সামিম মহাবেক মোল্লার ১০ টি সম্পত্তি দেখাচ্ছি । ওই সম্পত্তিগুলি তোলাবাজ ভাইপোর পার্সোনাল এসিসট্যান্ট পিএ এস রয় বেনামে কিনেছেন । ৫ টি কেনা হয়েছে রহমতুল্লার নামে এবং ৫ টি মহম্মদ সুজাউদ্দিনের নামে । এর মোট মূল্য ৫০ লাখ টাকারও বেশি । এই সমস্ত তথ্য শনিবার ইডির অফিসে পৌঁছে দেব । তারা তদন্ত করে দেখবেন । দেখা উচিত ।’ পাশাপাশি তিনি জানান,তৃণমূলের ব্লক সভাপতি, জেলা পরিষদের সদস্য, বিধায়ক মিলে ১০০ জনের বেআইনি সম্পত্তির নথিপত্র তাঁর কাছে আছে । আস্তে আস্তে সব প্রকাশ করবেন ।।