এইদিন ওয়েবডেস্ক,হুগলি,০৩ এপ্রিল : হাওড়া ও হুগলিতে রামনবমীর শোভাযাত্রায় পাথরবাজি ঘটনায় ষড়যন্ত্রকারীদের নাম প্রকাশ করলেন বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী । সোমবার হুগলির উত্তরপাড়ায় একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন দলীয় বিধায়ক বিমান ঘোষের স্বাস্থ্যের খোঁজ নিতে গিয়েছিলেন শুভেন্দু । এই বিষয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় তিনি লিখেছেন, ‘গতকাল(রবিবার) রিষড়ায় রামনবমীর শোভাযাত্রায় দুষ্কৃতী হামলায় আহত পুরশুড়ার বিজেপি বিধায়ক বিমান ঘোষ মহোদয়কে দেখতে গিয়েছিলাম। ওনার মাথা ফেটেছে, কাঁধে চোট আছে। ডাক্তারবাবু ওনাকে কিছুদিন বিশ্রাম নিতে বলেছেন। উনি দ্রুত সুস্থ হয়ে নিজের কর্মক্ষেত্রে ফিরুন এই কামনা করছি।’
পরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন বিধানসভার বিরোধী দলনেতা । আর তখনই তিনি বলেন, ‘শিবপুরে ঘটিয়েছে কে? শামিম আহমেদ ড্যাডি । তিনি কে? তিনি ওয়ার্ড সভাপতি । তিনি কে ? কাউন্সিলারের স্বামী । তিনি ওড়িশা থেকে এসে ওই এলাকায় সাম্রাজ্য বিস্তার করেছেন । রিয়েল এস্টেট থেকে টাকা তোলেন । সমস্ত বেআইনি অটো পিছু ৫০ টাকা করে নেন । এরকম কয়েক’শ অটো চালককে প্রতিদিন সকালে তাকে টাকা দেওয়ার পর তাদের অটো রাস্তায় নামাতে হয় ।’
হুগলির রিষড়ায় শোভাযাত্রায় হামলাকারীদের নামও জানান শুভেন্দু । তিনি বলেন,’এখানে কে ঘটিয়েছে? তৃণমূল কংগ্রেসের ওই এলাকার নেতা সাকির আলি এবং তার সঙ্গে নেতৃত্ব দিয়েছে ভাইস চেয়ারম্যান জাহিদ হাসান খান । এদের দু’জনের নেতৃত্বে এই ঘটনা ঘটিয়েছে এবং ভিডিও ফুটেজ দেখলে পরিষ্কার হয়ে যাবে কারা এই ঘটনা প্ররোচিত করেছে ।’ তিনি বলেন,’বিমান ঘোষের সিআইএসএফ নিরাপত্তাবাহিনী তাকে গাড়িতে তুলতে যাচ্ছিল । কোনো প্ররোচনা নেই । অথচ তার মাথা লক্ষ্য করে পাথর ছোড়া হয়েছিল । কানে লেগেছে বলে তার প্রাণটা বেঁচে গেছে । রিষড়ায় শান্তিপূর্ণ শোভাযাত্রায় হামলা কাদের প্ররোচনায় হয়েছে তা ভিডিও ফুটেজে পরিষ্কার হয়ে গেছে ।’
পাশাপাশি এই ঘটনাগুলির জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেই দায়ি করেছেন শুভেন্দু অধিকারী । তিনি মুখ্যমন্ত্রীকে নিশানা করে বলেন,’এটা কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, এটা সম্পূর্ণভাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উসকানিতেই হচ্ছে । সাগরদিঘি, রামপুরহাটের বগডুইয়ের ঘটনার পরে মুসলিম ভোটব্যাঙ্ক হাতছাড়া হচ্ছে দেখে পরিকল্পনা অনুযায়ী তিনি তার দলের মুসলিম নেতৃত্বদের দিয়ে এই ধরনের ঘটনা ঘটাচ্ছেন । আর এটার শুরু হয়েছে রেডরোডের ধর্ণামঞ্চ থেকে । রামনবমীর মিছিল হওয়ার আগেই উনি উসকানি দিয়েছিলেন ।’
সেই সঙ্গে রাজ্য পুলিশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন শুভেন্দু অধিকারী । তিনি বলেন,’একই মডেল,পুলিশ নিষ্ক্রিয়,ঘটনা ঘটিয়ে দেওয়ার পরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পুলিশ বেছে বেছে রামনবমী উদযাপন কার্যকর্তাদের ধরেছে । হাওড়াতেও ধরেছে, রিষড়াতেও ১২ জন রামনবমী উদযাপন কমিটির সদস্যকে গ্রেফতার করেছে । যাদের ধরা হয়েছে তারা কেউ গোলমালের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না, সিসিটিভি ফুটেজ দেখলেই বোঝা যাবে । তাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রমাণ করতে চায় তার সংখ্যালঘু ভোটব্যাঙ্ক তার হাতে সুরক্ষিত । আর দ্বিতীয় বিষয় হল সনাতনী সংগঠনগুলির সদস্যদের গ্রেফতার ও বাড়িতে পুলিশি তল্লাশি চালিয়ে তাদের মধ্যে ভীতি প্রদর্শন করা ।’ তৃণমূলের দূর্নীতি ও ডিএ আন্দোলন ধামাচাপা দিতেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই ধরনের ঘটনার পিছনে সংখ্যালঘু ভোটব্যাঙ্ক ফেরানো, চাকরিসহ বিভিন্ন দূর্নীতি,ডিএ আন্দোলন প্রভৃতি থেকে মানুষের নজর ঘোরানোই মূল উদ্দেশ্য বলে অভিযোগ তুলেছে শুভেন্দু অধিকারী ।।