এইদিন ওয়েবডেস্ক,কলকাতা,১৭ আগস্ট : দিন কয়েক আগে কলকাতা পুরসভার মেয়র এবং রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের ঘনিষ্ঠ কলকাতার ৮০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আনোয়ার খান স্থানীয় দুই বিজেপি নেতানেত্রীর উদ্দেশ্যে বিতর্কিত মন্তব্য করেছিলেন । তিনি খুনের হুমকি দেওয়ার পাশাপাশি তাদের “কুত্তা” বলেও সম্মোধন করেন । আজ রবিবার সন্ধ্যায় দক্ষিণ কলকাতার তারাতলায় দলীয় জনসভায় ওই তৃণমূল নেতাকে পাল্টা হুমকি দিয়ে শুভেন্দু অধিকারী বলেছেন, ‘দিওয়ালি আর ছট যেতে দাও,তারপর তোমাদের ডুগডুগি বাজিয়ে দেবো ।’
আনোয়ার খানের সেই বিতর্কিত মন্তব্যের ভিডিওটি সোশ্যাল মিডিয়ার ভাইরাল হয় । ভিডিওতে তাকে একটা মন্দিরের চাতালে দাঁড়িয়ে মাইক্রোফোন হাতে বক্তব্য দিতে দেখা গেছে । নিজের ভাষণে ওই কাউন্সিলর হিন্দিতে বলেন,”আজ থেকে যে বিজেপি করবে, কান খুলে শুনে রাখ বাবু, এখন থেকে মানসিকতা পরিবর্তন করো, তা না হলে কাউকে রেহাই দেওয়া হবে না । সব খতম করে দেব ।’ এরপর স্থানীয় দুই বিজেপি নেতাও নেত্রীর উদ্দেশ্যে আনোয়ার বলেন, ‘এখানে এসে রাজনীতি করছিস । আমার কথা যদি শুনতে পাস, দুই কুত্তা এবং এক কুতিয়া , শুনে রাখ খতম করে দেবো ।’
আজ সন্ধ্যায় সেই এলাকাতেই জনসভা করেন শুভেন্দু অধিকারী । তিনি আনোয়ার খানের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘এখানকার একটা ছোট মস্তান, রাম পিয়ারি রাম ওকে সিধা করে দিয়েছিল । ও এখানে এসে খুব হুম্বিতম্বি করেছিল। বিজেপিকে খতম করে দেবে৷ বিজেপির নাম নিশান মিটিয়ে দেবে । কুকুর বলেছিল । আরো কত কি গালাগালি করেছিল ।’ তিনি বলেন,’মাফিয়া, চোর তোলাবাজ ফিরহাদ হাকিম আর ওর এখানকার চ্যালা, ওদের দুজনার ভাষা তো একই হবে। অনেক গালাগালি করেছিল । কোথায় ভাই, আশেপাশে কোথাও আছো নাকি ? আরে বিজেপি বিশ্বের সর্ববৃহৎ রাজনৈতিক দল । কেন্দ্রে আমাদের সরকার আছে । আর এখানে ছয় মাস পর সরকার গঠন করবে । ভাষায় একটু লাগাম লাগাও ।’ শুভেন্দু বলেন, ‘শাহজাহানের অবস্থা দেখছো তো ? ওর আগে অনুব্রত মণ্ডলে হাল দেখেছো তো ? পার্থর অবস্থা দেখেছো তো ? দেড়শ কেজি ওজন,খুব ভারী নেতা, মহাসচিব, সাধারণ সম্পাদক । এখন কোথায় ? সব দেখে নিয়েছো তো ? নাকি আরো কিছু দেখতে বাকি আছে ? হয়ে যাবে । দিওয়ালি আর ছট যেতে দাও,তারপর তোমাদের ডুগডুগি বাজিয়ে দেবো ।’
আজ দক্ষিণ কলকাতার সাংগঠনিক জেলা বিজেপির ডাকে আজ তারাতলায় “ভাষা সন্ত্রাস এবং হিংসাশ্রয়ী রাজনৈতিক অপসংস্কৃতির প্রতিবাদে জনগর্জন সভার” আয়োজন করা হয়েছিল । উপস্থিত ছিলেন দক্ষিণ কলকাতার পৌরমাতা মীনাদেবী পুরোহিত,কাউন্সিল সজল ঘোষ,জেলা সভাপতি অনুপম ভট্টাচার্য প্রমূখ ।
শুভেন্দু অধিকারী অভিযোগ করেছেন যে যথারীতি এক্ষেত্রেও পুলিশ এই সভার অনুমতি দেয়নি । যে কারণে আদালতের কাছ থেকে অনুমতি নিতে হয়েছে। এই বিষয়ে তিনি বলেন,’এটা আমার ৮৯ বার হাইকোর্টের অনুমতি নিয়ে সভা করতে হলো । আরো ৪-৫ মাস নিতে হবে । তারপর হীরক রানী বাই বাই । তারপর সব ঠিক হয়ে যাবে৷ তখন তৃণমূল আমাদের কাছে আসবে । আমরা পুলিশকে বলবো অনুমতি দিয়ে দাও,দিয়ে দাও । এটাইতো গণতন্ত্র, সব দল থাকবে ।’
তিনি বলেন,’সরকার বদল হলে তৃণমূলের সব লোক তো জেলে চলে যাবে । তখন ২০১১ সালের স্লোগান চলবেনা…. বদলা নয় বদল চাই । আমরা বদলও করবো, বদলাও নেব । ছাড়বো না । এরা যা করেছে, দুর্নীতি তো আছেই , তার ওপর নারীদের ওপর নির্যাতন যা হচ্ছে তার বদলা আমরা নেব ।’।