এইদিন ওয়েবডেস্ক,জম্মু-কাশ্মীর,২৩ জুন : জম্মু ও কাশ্মীর সরকার ২০০৯ সালে শোপিয়ানে জোড়া ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় ময়নাতদন্ত রিপোর্ট জাল করে দাঙ্গা ছড়ানোর অভিযোগে দুই চিকিৎসককে বরখাস্ত করেছে । ডাঃ বিলাল আহমেদ দালাল এবং ডাঃ নিঘত শাহীন চিল্লু নামে ওই দুই চিকিৎসক পাকিস্তানের আইএসআই ও বিভিন্ন সন্ত্রাসবাদী সংগঠনের সাথে সক্রিয়ভাবে কাজ করছিল বলে জানতে পেরেছে সিবিআই । ওই দুই চিকিৎসক পাকিস্থানের প্রভুদের নির্দেশে শোপিয়ানের মৃত দুই মহিলা আশিয়া জান এবং নীলোফারের ময়নাতদন্তের ভূয়ো রিপোর্ট পেশ করে উপত্যকায় অশান্তি ছড়ায় । আসলে ওই দুই মহিলা ২০০৯ সালে ২৯ মে জলে ডুবে মারা যায় । পরের দিন তাদের দেহ উদ্ধার হয় । কিন্তু বিলাল আহমেদ ও শাহীন চিল্লু দুই মহিলার ময়নাতদন্তের রিপোর্ট অজানা ব্যক্তিদের (মৃতদের নয়) জৈবিক নমুনা জালিয়াতি করে সংগ্রহ করেছিল । এই দুজনের চূড়ান্ত লক্ষ্য ছিল নিরাপত্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও হত্যার মিথ্যা অভিযোগ করে কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অসন্তোষ তৈরি করা ।একটি নয়, চারটি ভিন্ন ময়নাতদন্ত প্রস্তুত করা হয়েছিল এবং প্রতিটি রিপোর্টে দুই মহিলাকে অন্তঃসত্ত্বা দেখানো হয়েছিল । এছাড়াও বহু অসঙ্গতি এবং দ্বন্দ্বে পরিপূর্ণ ছিল ওই রিপোর্ট ।
উল্লেখ্য, ২০০৯ সালের ৩০ মে জম্মু ও কাশ্মীরের শোপিয়ানে আশিয়া জান এবং লীলোফার নামে দুই মহিলার মৃতদেহ পাওয়া গিয়েছিল । তখন নিরাপত্তা কর্মীদের বিরুদ্ধে ধর্ষণ হত্যার অভিযোগ ওঠে। এই ঘটনার পর জম্মু ও কাশ্মীরে ৪২ দিন ধরে দাঙ্গা চলে। এরপর এই মামলার তদন্তভার সিবিআই-এর কাছে হস্তান্তর করা হয় । এআইআইএম এস-এর বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডঃ টিডি ডোগরা এবং ডঃ অনুপমা রায়নার নেতৃত্বে একটি ফরেনসিক দল মৃতদেহগুলো পুনরায় পরীক্ষা করে দেখেন । যেখানে দেখা যায় যে উভয় মহিলা ধর্ষণ বা খুন করা হননি ।
সরকারি তথ্য অনুযায়ী,এই ভূয়ো রিপোর্টের কারনে ২০০৯ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রায় সাত মাস ধরে হুররিয়াতের মতো বিচ্ছিন্নতাবাদী দলগুলি ৪২ টি ধর্মঘট ডেকেছিল । যার ফলে উপত্যকায় প্রচুর দাঙ্গা ও প্রাণহানির ঘটনা ঘটে । এই সময়ে জম্মু ও কাশ্মীরে ৬০০ টিরও বেশি ছোট-বড় মামলা নথিভুক্ত হয়েছে । প্রাথমিক তদন্তে জেলার এসপিসহ ৪ পুলিশ কর্মকর্তাকে গ্রেফতার করে জেলে পাঠানো হয়েছে । তবে সিবিআই তদন্তে জানা গেছে যে তাদের মিথ্যাভাবে ফাঁসানো হয়েছে।
সিবিআই তার চার্জশিটে ১৩ জনকে উপত্যকায় দাঙ্গা উসকে দেওয়ার এবং একটি ষড়যন্ত্রের জন্য অভিযুক্ত করেছে । আর দাঙ্গার মূল চক্রী ছিল ডাঃ বিলাল আহমেদ দালাল এবং ডাঃ নিঘত শাহীন চিল্লু নামে ওই দুই চিকিৎসক । জম্মু ও কাশ্মীরের লেফটেন্যান্ট গভর্নর মনোজ সিনহা দুই চিকিৎসককে সংবিধানের ৩১১(২ সি) মোতাবেক বরখাস্ত করার জন্য আবেদন করেছেন ।।