এইদিন ওয়েবডেস্ক,বাগদাদ,০৭ আগস্ট : ইরাকের সংসদে তুমুল সংঘর্ষে জড়াল শিয়া ও সুন্নি সাংসদরা । একে অপরকে কিল-চড় মারার পাশাপাশি দেদার চটি ও জুতো ছোড়াছুড়িও হয় । ঘটনাটি ঘটেছে গত মঙ্গলবার । ফেডারেল সার্ভিস এবং স্টেট কাউন্সিলের প্রার্থীদের ভোট দেওয়া নিয়ে এই সংঘর্ষ হয় বলে জানা গেছে । উল্লেখ্য,ইরাক একটি প্রধানত শিয়া মুসলিম অধ্যুষিত দেশ, যেখানে দেশের মোট জনসংখ্যার ৫৫-৬৫% শিয়া সম্প্রদায়ের । তবে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে সুন্নি মুসলিম জনসংখ্যাও রয়েছে, যা মোট জনসংখ্যার প্রায় ৩৫-৪০% ।
স্থানীয় ইরাকি সংবাদ সংস্থা আল-সা’র প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রথমে ফেডারেল সার্ভিস এবং স্টেট কাউন্সিলের পদগুলি সুন্নি এবং শিয়া গোষ্ঠীগুলির মধ্যে ভাগ করে নেওয়ার কথা ছিল, কিন্তু তাকাদ্দাম এবং শিয়া গোষ্ঠীর এমপিরা রাজনৈতিক ঐকমত্য উপেক্ষা করে উভয় পদের জন্য শিয়া প্রার্থীদের ভোট দেয়। কিন্তু ফেডারেল সার্ভিস এবং স্টেট কাউন্সিলের প্রার্থীদের ভোট দেওয়ার জন্য তারা শিয়া গোষ্ঠীগুলিতে যোগ দিলে বিরোধের সূত্রপাত । বলা হয়েছে,তাকাদ্দাম জোটের এমপিরা মঙ্গলবার অধিবেশন বর্জন করেছিল । সংস্থাকে একটি সূত্র জানিয়েছে,প্রয়োজনীয় সংখ্যক এমপির অভাবে স্পিকার মাহমুদ আল-মাশহাদানি সংসদ ত্যাগ করার পর সংসদ অধিবেশনে বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়। তবে, অধিবেশনটি প্রথম ডেপুটি স্পিকার মোহসেন আল- মান্দলাভির নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত হয়েছিল।
যার জেরে শিয়া ও সুন্নি সাংসদরা সংসদ ভবনের বাইরে সংসদ ক্যাফেটেরিয়ায় এসে তুমুল হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়ে । স্পিকার মাহমুদ আল-মাশহাদানি চিৎকার করে বলেন,’এটি সুন্নি সম্প্রদায়ের অধিকারের প্রতি অবিচার’ । এই সময়ে, শিয়া এমপি আলা আল-হায়দারি ‘ঘৃণ্য সাম্প্রদায়িক’ গালিগালাজ করেন এবং তারপর সুন্নি এমপি রাদ আল-দাহলাকির সাথে মারামারি শুরু করে দেন । নিমেষের মধ্যে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। প্রায় ৫০ জন সংসদ সদস্য আল-দাহলাকির উপর আক্রমণ করে এবং তাকে নির্মমভাবে মারধর করে । তাকাদ্দাম জোট এবং অন্যান্য সুন্নি দলের সংসদ সদস্যরা আক্রমণ থামাতে ব্যর্থ হন। একজন সুন্নি সংসদ সদস্য, মাহমুদ আল- কাইসি, এগিয়ে এসে আল-দাহলাকিকে হামলার হায় হাত থেকে বাঁচানোর চেষ্টা করেন । সংঘর্ষে বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে বলে জানা গেছে ।
তবে ইরাকি পার্লামেন্টে মারামারির ঘটনা নতুন নয় । এর আগে ২০২৪ সালের মে মাসে, পার্লামেন্টের স্পিকার নির্বাচন নিয়ে বিরোধের জেরে বেশ কয়েকজন এমপির মধ্যে সহিংস সংঘর্ষ হয়েছিল । স্পিকার যে পদটি ছয় মাস ধরে শূন্য ছিল।।