এইদিন ওয়েবডেস্ক,নাটোর,২৪ আগস্ট : কীর্তন তখন জমে উঠেছে । ভক্তিভাবে বিভোর মহিলা পূণ্যার্থীরা ৷ ঠিক সেই সময় হিন্দু বধূর বেশে আবির্ভাব ৩ মহিলার । তাদের প্রত্যেকের মাথায় ঘোমটা, সিঁথিতে চওড়া সিঁদূর, হাতে শাঁখাপলা । একদৃষ্টিতে তাদের কোনো সংস্কারী হিন্দু পরিবারের কুলবধূ বলেই মনে করেছিল কীর্তনের আসরের পুরুষ সদস্যরা । তিন মহিলা মেয়েদের ভিড়ে বসে হরিনাম সংকীর্তন শুরু করে দেয় । কিন্তু তাদের মধ্যে একজন এক হিন্দু প্রৌঢ়াকে হঠাৎ জড়িয়ে ধরে গলার চেইন ছিনতাই করতে গেলে ধরা পড়ে যায় । তারপর ধরা পড়ে যায় ছদ্মবেশী ছিনতাইকারী দলের তিন মহিলা । শনিবার (২৩ আগস্ট) সন্ধ্যায় বাংলাদেশের নাটোরের বড়াইগ্রা মউপজেলার লক্ষিকোল বাজারের শ্রী শ্রী কালী মাতার মন্দিরে মহাহরিনাম ও লীলা কীর্তন চলাকালীন এই ঘটনা ঘটে। ধরা পড়া সবাই মুসলিম হলেও তারা হিন্দু নারীর ছদ্মবেশে অনুষ্ঠানে প্রবেশ করে । ওই তিন মহিলা ছিনতাইবাজ হল : ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলার আব্দুর রহমানের মেয়ে শামসুন্নাহান বেগম (২৮), একই গ্রামের কাজল হোসেনের মেয়ে লিপি আক্তার (৩০) এবং আবু মিয়ার মেয়ে রোজিনা খাতুন (২৬)। গতকাল গ্রেপ্তারের পর আজ রবিবার তাদের আদালতে তোলা জেলে পাঠানো হয় ।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দিনাজপুরের বিরামপুর থেকে চায়না রানী (৫৫) কীর্তন উপলক্ষে বড়াইগ্রাম পৌরসভার লক্ষিকোল মহল্লায় মেয়ের বাড়ি বেড়াতে আসেন। শনিবার সন্ধ্যায় শ্রী শ্রী কালী মাতার মন্দিরে কীর্তন চলাকালে তিনি অংশগ্রহণ করেন। এ সময় শাঁখা-সিঁদুর পড়া তিন মহিলা তার পাশে বসে। কীর্তন জমে উঠলে তাদের একজন হঠাৎ চায়না রানীকে জড়িয়ে ধরে কৌশলে গলার স্বর্ণের চেইন খুলে নেয়।
চায়না রানী বিষয়টি টের পেয়ে পাশে থাকা মেয়ে জামাই মন্টু কুমার কুন্ডুকে জানান। তিনি স্থানীয়দের সহায়তায় ওই তিন নারীকে ধরে ফেলেন এবং পুলিশকে খবর দেন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে এক নারীর কাছ থেকে চুরি হওয়া স্বর্ণের চেইন উদ্ধার করে।
বড়াইগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম সারোয়ার হোসেন বলেন, “আটককৃত নারীরা সবাই মুসলিম। তারা হিন্দু সেজে পরিকল্পিতভাবে কীর্তন অনুষ্ঠানে গিয়ে নারীদের কাছ থেকে স্বর্ণালংকার ছিনিয়ে নিচ্ছিল। তারা সংঘবদ্ধ ও আন্তঃজেলা প্রতারক দলের সদস্য। তাদের সাথে আর কারা জড়িত আছে, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।” এ ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে এবং ধৃত তিন নারীকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।।

