প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,২৭ জুন : রাজীব আর মিঠুর প্রেমে বাধা হননি পরিবারের কেউ । বরং পরিবার পরিজন ও প্রতিবেশীরা সকলেই মনেপ্রাণে উপভোগ করেন রাজীব ও মিঠুর হৃদয়স্পর্শী প্রেম ।তবে শুনলে সবাই হয়তো অবাক হবেন এই ’প্রেম কাহানী’ দুই তরুণ তরুণীর ’প্রেম কাহানী’ নয়। পূর্ব বর্ধমানের মন্তেশ্বরের বালিজুড়ি নিবাসী প্রেমিক যুবক রাজীব মণ্ডলের প্রেমিকা মিঠু আদতে কোনও ’নারী’ নয়।সবাই হয়তো এই কথা জানলে অবাক হবেন রাজীবের প্রেমিকা আসলে একটি ’শালিক পাখি ’।
সারাদিন তাঁরাই একে অপরের সঙ্গী হয়ে থাকে । এক মুহুর্তের জন্যেও কেউ কারুর থেকে বিচ্ছিন্ন হতে চায় না। তাঁদের মনের কথা , প্রাণের কথা শুধু তারা দু’ জনেই বুঝতে পারে । রাজীব ও মিঠুর এমন ’প্রেম কাহানী’ একবার স্বচক্ষে দেখার জন্যে মন্তেশ্বরের অনেক বাসিন্দা উৎসুক হয়ে থাকেন ।
ছোট বয়স থেকেই পশু পাখিদের প্রতি ভালবাসা তৈরি হয় মন্তেশ্বরের বালিজুড়ির যুবক রাজীব মণ্ডলের। মাস দুই আগে রাজীব এলাকার একটি গাছের নিচে অসুস্থ অবস্থায় শালিক পাখিটিকে পড়ে থাকতে দেখে । সে শালিক পাখিটিকে উদ্ধার করে নিজের বাড়িতে নিয়ে গিয়ে সেবা-শুশ্রুষা করে তাকে সুস্থ করে তোলে ।তখন থেকেই তাঁরা দু’জনে স্নেহ ভালবাসার বন্ধন আবদ্ধ হয়ে পড়ে । রাজীব ভালবেসে শালিক পাখিটির নাম রাখে ’মিঠু’। জীবন বাঁচানো সহৃদয় রাজীবকে ছেড়ে
আর নিজের সহায়ক পরিবেশে ফিরেও যেতে চায়নি মিঠু । জীবন বাঁচানোর প্রতিদান স্বরূপ মিঠুই এখন রাজীবের সর্বক্ষণের সঙ্গী।
রাজীব জানিয়েছে , মিঠু হতে পারে একটা শালিক পাখি।কিন্তু নিজের উপলব্ধি দিয়ে তিনি বুঝেছেন ওরাও মানুষের মতোই সবকিছু বুঝতে পারে।জীবন বাঁচানোর প্রতিদান দিতে ওরাও জানে। রাজীব বলেন,তার জন্যেই হয়তো তার মিঠু তাঁকে ছাড়া এক মুহুর্ত থাকতে চায়না ।বাড়ি থেকে বেরিয়ে কর্মস্থল,
হাটেবাজার যেখানেই তিনি যান না কেন, শালিক পাখি মিঠুই তাঁর সর্বক্ষণের সঙ্গী । মিঠু কিছুতেই রাজীবকে ছেড়ে থাকতে পারে না । সে রাজীবের কাঁধে চেপেই সর্বত্র ঘুরে বেড়ায় । মনের কথা , প্রাণের কথাও বলে চলে ।রাজীব জানিয়েছে,মিঠুর খাওয়া দাওয়ারও কোন ঝঞ্ঝাট নেই । ভাত,মুড়ি, বিস্কুটেই সে সন্তুষ্ট। রাজীবের পরিবার সদস্যরা মিঠু আর তরাজীবেয় ’প্রেম কাহানী’ একবার স্বচক্ষে দেখার জন্যে অনেক মানুষই তাঁদের বাড়িতে ভিড় জমান । এলাকার বাসিন্দারা বলেন ,
পাখি আর মানূষের এমন নির্ভেজাল ’প্রেম’ তাঁদেরকেও অবাক করে ।।