এইদিন ওয়েবডেস্ক,বর্ধমান,২১ সেপ্টেম্বর : একটি বেসরকারি সংস্থার কাছে মায়ের নামে ঋণ নিয়েছিল ছেলে । কিন্তু সেই ঋণ সে পরিশোধ করতে পারেনি । তাই সংস্থার তাগাদা থেকে বাঁচতে সে পরিবার নিয়ে বাড়ি থেকে একদিন উধাও হয়ে যায় । এদিকে ঋণগ্রহীতাকে খুঁজে না পেয়ে তার বাবা-মায়ের উপর ঋণ পরিশোধের জন্য তাগাদা দিচ্ছিল সংস্থার লোকজন । তাদের লাগাতার তাগাদায় অতিষ্ট হয়ে শেষ পর্যন্ত আত্মহননের পথ বেছে নিলেন এক প্রৌঢ় দম্পতি । মর্মান্তিক এই ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব বর্ধমান জেলার শক্তিগড় থানার দক্ষিণ গোপালপুর গ্রামে । আজ বৃহস্পতিবার সকালে বাড়ির একটি ঘর থেকে দম্পতির ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করে শক্তিগড় থানার পুলিশ । পরে ময়নাতদন্তের জন্য মৃতদেহ দুটি বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয় । পুলিশ জানিয়েছে,মৃতদের নাম হেমন্ত মালিক( ৫৬) ও তাঁর স্ত্রী রেখা মালিক ( ৫৩)।
স্থানীয় ও পরিবার সূত্রে খবর,শক্তিগড় থানার দক্ষিণ গোপালপুর গ্রামের বাসিন্দা হেমন্ত মালিক ও রেখা মালিক জনমজুরের কাজ করতেন । তাদের দুই ছেলে । দু’জনেই বিবাহিত এবং পৃথক সংসারে থাকে । বড় ছেলে সনাতন মালিক জানান,তার ভাই রমেশ মায়ের নামে স্থানীয় ক্ষুদ্র ঋণদানকারী সংস্থার থেকে কিছু টাকা ঋণ নিয়েছিল । কিন্তু ভাই সেই টাকা পরিশোধ করতে পারেনি । একদিন স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে বাড়ি থেকে উধাও হয়ে যায় তার ভাই । এদিকে
ঋণদানকারী সংস্থার লোকজন ঋণ পরিশোধের জন্য প্রায়ই বাড়িতে হানা দিচ্ছিল । তার মাকে ঋণ পরিশোধের জন্য চাপ দেয় তারা ৷ তাদের লাগাতার তাগাদায় অতিষ্ট হয়ে তার মা দিন দুয়েক আগে বাপের বাড়ি জামদহে চলে যান । কিন্তু খবর পেয়ে সেখানেও হানা দেয় সংস্থার লোকজন । এমনকি তারা ভয় দেখিয়ে তার মাকে গোপালপুর চলে আসতে বাধ্য করে বলে অভিযোগ সনাতন মালিকের । তিনি আরও বলেন,’সংস্থার হুমকির কারনে মা একমাস সময় চেয়েছিলেন তাদের কাছে । কিন্তু মা- বাবা যে এই সাংঘাতিক ঘটনা ঘটিয়ে ফেলবে তা আমরা কল্পনাও করতে পারিনি ।’
জানা গেছে,বেশ কিছুদিন ধরেই মনমরা ছিলেন ওই দম্পতি । বুধবার রাতে তারা খাওয়া দাওয়ার পর যথারীতি নিজেদের ঘরে ঘুমতে চলে যান । এদিন সকালে মাঠে কাজে যাওয়ার জন্য বাবাকে ডাকতে গিয়েছিলেন মৃত দম্পতির বড় ছেলে । সেই সময় তার নজরে পড়ে ঘরের সিলিং থেকে গলায় ফাঁস দেওয়া অবস্থায় তার বাবা-মায়ের দেহ ঝুলছে । খবর পেয়ে পুলিশ মৃতদেহ দুটি উদ্ধার করে নিয়ে যায় । মর্মান্তিক এই ঘটনায় শোকস্তব্ধ পরিবার পরিজন ও প্রতিবেশীরা ।।