এইদিন ওয়েবডেস্ক,শাহজাহানপুর,৩১ মে : দিল্লির ১৬ বছরের হিন্দু কিশোরী সাক্ষীর পর এবার ফের একই ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি হল উত্তরপ্রদেশের শাহজাহানপুরে । লিভ-ইন পার্টনার মহম্মদ নাভেদের (Mohammad Naved) হাতে খুন হলেন সীমা গৌতম (Seema Gautam) নামে ২১ বছরের এক গর্ভবতী দলিত তরুনী । দাবি করা হচ্ছে যে সীমাকে প্রেমের “ফাঁদে” ফেলে তাকে ইসলাম গ্রহণের জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছিল ।
শাহজাহানপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুধীর জয়সওয়াল একটি প্রেস বিবৃতিতে বলেছেন, মৃতার পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে রোজা থানায় ২৮ মে একটি এফআইআর নথিভুক্ত করা হয়েছিল । অভিযোগের পর পুলিশ মহম্মদ নাভেদকে গ্রেপ্তার করে । এফআইআর-এ দু’জন অভিযুক্তের নাম উল্লেখ আছে -মূল অভিযুক্ত মহম্মদ নাভেদ এবং ফরহাদ খান নামে আরও একজন । তিনি জানান, মহম্মদ নাভেদ লখিমপুর খেরির বাসিন্দা এবং শাহজাহানপুরের একটি জিও মোবাইলের দোকানে কাজ করেন। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি স্বীকার করেছেন যে তিনি গত এক বছর ধরে সীমার সাথে লিভ-ইন সম্পর্কে ছিলেন। তিনি সীমাকে তার লোকজনের কাছে জোয়া সিদ্দিকী নামে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন। দুই দিন আগে তারা সীমা ওরফে জোয়াকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় সদর হাসপাতালে ভর্তি করলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ময়নাতদন্তের সময়ও জানা যায় ওই মহিলা গর্ভবতী। মামলার অধিকতর তদন্ত চলছে ।’
সংবাদ মাধ্যম অর্গানাইজ উইকলির প্রতিবেদনে জানা গেছে, মৃতার ভাই বিজয় কুমারের দায়ের করা
এফআইআরে পুলিশকে জানিয়েছেন, তিনি খেরি জেলার কাছে নাগলা-পালিয়া গ্রামের বাসিন্দা। তার দিদি সীমা গৌতম এসএফআই চ্যারিটেবল মোহাম্মদী (সেহদেবা) ট্রাস্টে কাজ করতেন এবং ভাড়ায় মুস্তাকিম আলীর বাড়িতে ভাড়া থাকতেন।
সেখানেই নাভেদের সাথে তার পরিচয় হয় । নাভেদ তার আসল পরিচয় গোপন করে সীমাকে ফাঁদে ফেলে । নাভেদের সঙ্গে ছিল মুস্তাকিম ও ফরহাদ নামে আরও দু’জন । ওই তিনজন মিলে তার বোনকে যৌন শোষণ করে এবং আপত্তিকর মুহুর্তের ভিডিও রেকর্ড করে রাখে । পরে তার বোন গর্ভবতী হয়ে পড়ে এবং তারপরে তারা তাকে ইসলাম গ্রহণের জন্য চাপ সৃষ্টি করতে থাকে ।
এফআইআরে তিনি আরও জানান,গর্ভাবস্থার কথা জানার পর নাভেদ তাকে কোনো ধর্মগুরুর কাছে নিয়ে যেতে চেয়েছিল । কিন্তু তার দিদি বাবা-মাকে বিষয়টি জানায়। একথা জানতে পেতে নাভেদ বিষ খাইয়ে সীমাকে মেরে ফেলেছে । বিজয়ের অভিযোগ, তার বোন ‘লাভ জিহাদের’ শিকার হয়েছেন ।
জানা গেছে,খেরি জেলার নাগলা-পালিয়া গ্রামের বাসিন্দা সীমা গৌতমের বাড়িতে রয়েছেন বাবা-মা, দু’ভাই এবং এক বোন । তাদের বাবা পেশায় শ্রমিক । অত্যন্ত হতদরিদ্র পরিবার । দারিদ্রের মধ্যেই শাহজাহানপুর থেকে নার্সিংয়ে ডিপ্লোমা করছিলেন সীমা । মহম্মদী চ্যারিটেবল ট্রাস্টে কাজ করে বেতনের টাকার একাংশ তিনি বাড়িতে পাঠাতেন । ওই টাকার উপর অনেকাংশে নির্ভরশীল ছিল পরিবারটি । সীমার ভাই বিজয় জানিয়েছেন,তার দিদি কখনোই জানায়নি যে সে একজন মুসলিম বাড়িতে ভাড়া থাকে । তার দিদির ‘ব্রেনওয়াশ করা হয়েছিল’ বলে তিনি অর্গানাইজ উইকলির কাছে দাবি করেছেন । পুলিশ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইপিসি ৩২৮,৩০৪, ৪১৯, ১২০ বি, ৩৫৪ ডি এবং উত্তরপ্রদেশের ধর্মের স্বাধীনতা আইন এবং নৃশংসতা প্রতিরোধ আইনসহ একাধিক ধারায় মামলা রজু করেছে ।।
তথ্যসূত্র ও ছবি সৌজন্যে অর্গানাইজ উইকলি ।

