প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,২০ নভেম্বর : আবাসের তালিকায় এবারও কাটলো না আঁধার। প্রকৃত গরিবের পরিবর্তে সরকারী আবাসের তালিকার জ্বলজ্বল করছে পাকা দোতলা বাড়িতে বসবাসকারী ব্যক্তিদের নাম।আর তা নিয়েই আজ বুধবার পূর্ব বর্ধমানের কালনা ১ ব্লকের বিডিওর কাছে গিয়ে ক্ষোভ উগরে দিলেন নান্দাই গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত কয়েকটি গ্রামের বাসিন্দারা। আবাসের এমন অস্বচ্ছ তালিকা তৈরির নিয়ে তারা অঙ্গনওয়াড়ি সহায়িকা ও পঞ্চায়েত সদস্যদের বিরুদ্ধে বিডিওর কাছে লিখিত অভিযোগও জানান ।আবাসের ঘর পাওয়ার যোগ্য প্রকৃত গরিবের নাম তালিকায় নথিভুক্ত করা নাহলে বৃহত্তর আন্দোলনে নামার হুঁশিয়ারিও এদিন দিয়ে রাখেন কালনার নতুনগ্রাম, ঘুঘুডাঙা,আশ্রমপাড়ার বিক্ষুব্ধ বাসিন্দারা ।
আবাসের তালিকা হাতে নিয়ে কালনা ১ ব্লকের বিডিওর কাছে গিয়ে এদিন গিয়ে ছিলেন নান্দাই পঞ্চায়েত এলাকার বাসিন্দা মকবুল শেখ। তিনি বিডিওকে জানান,২০২২ সালে সরকারী আবাস যোজনার ঘর প্রাপকদের যে তালিকা প্রকাশ হয়েছিল তাতে অনেক গরীব মানুষের নাম ছিল । কিন্তু বর্তমান তালিকায় সেইসব গরিব মানুষের কারুর নাম আর নেই।প্রায় ৩০ জন গরিব মানুষের নাম আবাসের তালিকা থেকে কেটে বাদ দেওয়া হয়েছে। যাঁদের নাম বাদ দেওয়া হয়েছে তাঁদের কেউ টিন দিয়ে ঘেরা বাড়ি আবার কেউ পাটকাঠি দিয়ে ঘেরা বাড়িতে এখনও বসবাস করছেন । এইসব দরিদ্র পরিবারের সদস্যদের কেউ খেত মজুর,কেউ তাঁতের কাজ,আবার কোউ বিড়ি বেঁধে জীবিকা নির্বাহ করেন। মকবুল শেখের অভিযোগ,এইসব দরিদ্র বাসিন্দাদের নাম আবাসের তালিকা থেকে বাদ দিয়ে দোতলা মার্বেল বসানো বাড়ির মালিকদের নাম আবাস তালিকায় জায়গা করে দেওয়া হয়েছে।
এলাকার বধূ সেরিনা বিবি,আনহারা বিবি, রাবলা বিবিরা জানান,’আগে আবাসের তালিকায় আমাদের পরিবারের নাম ছিল। তখন ছবি তুলে তথ্যও নিয়ে যায়।এখন জানতে পারছি,বর্তমান তালিকায় আমাদের নাম বাদ দিয়ে দেওয়া হয়েছে অথচ আমাদের ঘরের অবস্থা খুবই খারাপ। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে খুবই অসহায় ভাবে আমরা আমাদের বাড়িতে দিন কাটাচ্ছি।তবুও কেন আবাসের তালিকা থেকে আমাদের নাম কাটা হল তার কিছুই বুঝে উঠতে পারছি না। আমরা যাতে সরকারী আবাসের ঘর পাই তার জন্য বিডিও কে এদিন জানিয়েছি ।
এ বিষয়ে কালনা ১ ব্লকের বিডিও সুপ্রতীক সাহা জানান,’উর্ধতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ আছে, আবাস তালিকায় যাদের নাম নেই,তারা যদি নিজেদের যোগ্য মনেকরে তবে তাদের সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীকে ফোন করে জানাতে হবে।এরপর যে নির্দেশ আসবে, তার ভিত্তিতে তদন্ত করে দেখা হবে। ২০২২ সালে ২০১৮ সালের মূল তালিকা ধরে সার্ভে হয় ।সেই সার্ভেতে পাকা বাড়ি থাকা অনেকের নাম বাদ যায়।কিন্তু এদিন যাঁরা আমার কাছে এসেছিলেন তাঁদের নাম কি কারণে বাদ গেছে তা বোঝা যাচ্ছে না।বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখা হবে বলে বিডিও জানিয়েছেন।।

