এইদিন ওয়েবডেস্ক,কলকাতা,১০ মে : ভারতের “অপারেশন সিঁদূর”-এ একতরফা মার খাচ্ছে ইসলামি সন্ত্রাসবাদের আঁতুরঘর পাকিস্তান । শুক্রবার রাতেও পাকিস্তানের রাওলপিন্ডি, করাচিসহ অন্তত ৪ টি বিমান ঘাঁটি গুঁড়িয়ে দিয়েছে ভারতীয় বায়ূসেনা । এই দেখে বুক ফাটছে ভারতের তথাকথিত মানবতাবাদী বামপন্থীদের । যারা গত ২২ এপ্রিল ইসলামি সন্ত্রাসবাদীদের দ্বারা ২৬ জন হিন্দু পর্যটকের নরসংহারের ঘটনায় মুখে কুলুপ এঁটে ছিল, তাররাই এখন ” যুদ্ধ নয়,শান্তি চাই” বুলি আওড়াচ্ছে । বাংলার সিপিএমের বর্ষীয়ান নেতা বিমান বসু ও রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম বলছেন সিপিএম যুদ্ধের পক্ষে নয় ।
কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্ম দিবস উপলক্ষ্যে শ্রদ্ধার্ঘ জানাতে শুক্রবার জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়িতে গিয়েছিলেন বিমান বসু, মহম্মদ সেলিমরা। সেখানেই সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে একথা বলেন তারা । বিমান বসু বলেন, ‘কাশ্মীরে জঙ্গিহানার জবাবে ইন্ডিয়ান আর্মি প্রাথমিকভাবে যে কাজটা করেছে, সেটা ভালো। তবে এখন যুদ্ধের পরিবর্তে দর কষাকষি করা উচিত। রবীন্দ্রনাথও যুদ্ধের বিরুদ্ধে ছিলেন। কারণ, যুদ্ধ ধ্বংসের প্রতীক।’ একই সুর মহম্মদ সেলিমের গলাতেও । তিনি বলেন, ‘যুদ্ধ বলুন বা শান্তি, সব প্রসঙ্গে রবীন্দ্রনাথ এখনও প্রাসঙ্গিক। সেজন্যই উনি বিশ্বকবি।’ সেলিমের কথায়, ‘এরকম যুদ্ধে কেউই জয়ী হয় না। কারণ, সেনায় সেনায় যুদ্ধ হলে সীমান্তের সাধারণ মানুষের জীবন দুর্বিষহ হয়ে ওঠে।’
সিপিএমের সুরে সুর মিলিয়েছে আর এক কথিত ধর্মনিরপেক্ষ দল সিপিআই৷ ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা প্রসঙ্গে সিপিআই সাংসদ ডি রাজা সংবাদ সংস্থা এএনআইকে বলেছেন,’সীমান্ত এলাকার মানুষের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে… মানুষকে রাতে ভয়ের মধ্যে থাকতে হচ্ছে। তাদের সুরক্ষার জন্য কিছু একটা করতে হবে… আমাদের কাছে যুদ্ধ মানে ধ্বংস, ক্ষতিগ্রস্ত অর্থনীতি এবং জনগণের দুর্ভোগ বৃদ্ধি। এই কারণেই আমাদের দল দৃঢ়ভাবে বলে আসছে যে যুদ্ধ সমাধান নয় এবং এটি কোনও স্থায়ী সমাধান দিতে পারে না। আমাদের শান্তির জন্য প্রচেষ্টা করতে হবে। এর জন্য, উভয় দেশেরই যুদ্ধ বন্ধ করে রাজনৈতিক সংলাপে অংশ নেওয়া উচিত। সন্ত্রাসবাদ কেবল ভারতের জন্যই নয়, পাকিস্তানের জন্যও একটি সমস্যা। এটি একটি সাধারণ হুমকি এবং উভয়েরই চিন্তা করা উচিত কীভাবে এটির বিরুদ্ধে সাধারণভাবে লড়াই করা যায়…।’
এদিকে কলকাতা পুরসভার কাউন্সিলর ও বিজেপি নেতা সজল ঘোষ এক বামপন্থীর ফেসবুক পোস্ট শেয়ার করেছেন । কুশল দেবনাথ নামে ওই বামপন্থী একটা বড়সড় পোস্ট করে “অন্যায় যুদ্ধ জিগির”-এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদে “যুদ্ধ নয়,শান্তি চাই” বার্তা দিতে দুপুর ৩টের সময় কলকাতার মৌলালি মোড়ে জমায়েতের ডাক দিয়েছেন । কয়েকজনের নামও লেখা হয়েছে ওই পোস্টে । প্রতিক্রিয়ায় সজল ঘোষ লিখেছেন,’আমি বাংলার সমস্ত শুভবুদ্ধির সম্পন্ন রাষ্ট্রবাদী মানুষের কাছে দলমত নির্বিশেষে আবেদন জানাই, এ ধরনের একটি ও কার্যকলাপ যাতে পশ্চিমবঙ্গের মাটিতে সংগঠিত না হতে পারে আসুন আমরা সকলে মিলে সেই লড়াইতে শামিল হই l কোন ব্যক্তি একার পক্ষে এদেরকে আটকানো সম্ভব নয় তাই আমি জাগ্রত জনতার কাছে আবেদন জানাচ্ছি, শিক্ষিত সমাজের কাছে আবেদন জানাচ্ছি আপনারাও ১২ তারিখে ঐ একই স্থানে একই সময় সমবেত হন l শুধু প্রতিবাদ নয় প্রতিরোধ করে এই ধরনের রাষ্ট্রবিরোধীদের যাতে আমরা প্রতিহত করতে পারি শুধুমাত্র জাতীয় পতাকা হাতে l আমার ব্যক্তিগত কোনো রাজনৈতিক পরিচয় থাকতে পারে কিন্তু এই ইসুতে সমগ্র ভারতবাসী এক সূত্রে গাথা এটা আমাদেরও প্রমাণ করতে হবে।’
রাজ্য বিজেপির যুবনেতা সিপিএমের ইস্তেহারে বৈদেশিক নীতির ঘোষিত বয়ানের কপি শেয়ার করে লিখেছেন, ‘বামপন্থীদের মুখোশ খুলে দেওয়ার সময় এসেছে: CPI(M) ভারতের নিরাপত্তার জন্য এক গভীর হুমকি ।
CPI(M)-এর ২০২৪ সালের ইশতেহার শুধু বিভ্রান্তিকর নয়—এটা ভারতের সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র। দেখে নিন ওদের বিপজ্জনক পরিকল্পনাগুলো:
- Sanctions on Israel
যে ইসরায়েল ভারতের প্রতিরক্ষা ও প্রযুক্তির অন্যতম ঘনিষ্ঠ মিত্র, CPI(M) চায় তার উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে! - Break alliance with the US
যেখানে আমেরিকার সঙ্গে ভারত কৌশলগত অংশীদারিত্বে বিশ্বমঞ্চে শক্তিশালী হয়ে উঠছে, CPI(M) চায় সেই সম্পর্ক ছিন্ন করতে। - Befriend China
যে চীন গালওয়ানে ভারতীয় জওয়ানদের হত্যা করেছে, তাদের সঙ্গে “সীমান্ত মীমাংসা”র নামে সম্পর্ক গড়ে তুলতে চায় CPI(M)। মনে রাখুন: ১৯৬২ সালের যুদ্ধে ওরাই ভারতের বিরুদ্ধে ছিল। - Scrap QUAD, I2U2, and other defense ties
এই জোটগুলো চীনা আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ভারতের ঢাল—CPI(M) চায় সেই ঢাল ভেঙে ফেলা হোক। - Eliminate India’s nuclear weapons
পাকিস্তান ও চীনের মতো শত্রুরাষ্ট্রের পাশে থেকেও CPI(M) চায় ভারত যেন নিরস্ত্র হয়ে পড়ে! - Resume talks with Pakistan
সন্ত্রাসবাদ ও সীমান্তে রক্ত ঝরানোর পরেও CPI(M) চাইছে আলোচনার নামে পাকিস্তানকে ছাড় দেওয়া হোক। - Interfere in Sri Lanka
নিজের দেশের সমস্যা সমাধান না করে অন্য দেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ করতে চায় CPI(M)। - Demilitarize cyberspace & weaken surveillance
ভারতের সাইবার নিরাপত্তা দুর্বল করে শত্রুদের সুবিধা করে দিতে চায় CPI(M)। এটাই ওদের আসল চেহারা।
Bottom Line:
CPI(M)-এর ইশতেহার মানে দুর্বল ভারত, সুরক্ষাহীন সীমান্ত, বিচ্ছিন্ন কূটনীতি । দেশপ্রেমিকদের একত্রিত হতে হবে। দেশদ্রোহীদের প্রতিহত করো। ভারতকে রক্ষা করো।’ তিনি ভারতে বামপন্থী পার্টি নিষিদ্ধ ঘোষণার দাবিও জানান ।।

