এইদিন ওয়েবডেস্ক,মালদা,১৭ জুলাই : মালদার মানিকচকের এক বেসরকারি স্কুলের হস্টেলে অষ্টম শ্রেণির ছাত্রের রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনায় কিশোরের দেহটি কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে ফের ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হল । বুধবার রাতে ভূতনীর কেদারটোলা থেকে মৃত ছাত্রের দেহ পুলিশের তদারকিতে কল্যাণীর এইমস হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় । উপস্থিত ছিলেন মৃত কিশোরের পরিবারের লোকজন সহ প্রচুর স্থানীয় বাসিন্দা ।
মৃত কিশোরের নাম শ্রীকান্ত মন্ডল(১৪)। তার বাড়ি ভূতনীর হীরানন্দপুর অঞ্চলের কেদারটোলা এলাকায় । ওই এলাকাতেই রয়েছে বেসরকারি স্কুলটি । গত ২ জুলাই বুধবার গভীর রাতে হস্টেলের তিনতলার বড় হলঘরে ফ্যান ঝোলানোর হুক থেকে চাদরের ফাঁস দিয়ে কিশোরের দেহটি ঝুলতে দেখা যায় । ওই হলঘরে ৪০-৪৫ জন পড়ুয়া থাকে এবং পড়ুয়াদের শোবার জন্য ঘরে ২-৩ সারির থাক করা আছে বলে জানা গেছে । পড়ুয়ার মৃত্যুর পর বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটি আত্মহত্যার ঘটনা বলে দাবি করে । কিন্তু সেই সময় সিসিটিভি অচল থাকা এবং অতজন পড়ুয়ার মাঝে কিশোরের আত্মহত্যা করার বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের দাবি নিয়ে প্রশ্ন ওঠে৷ যেকারণে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের এই দাবি মানতে চায়নি মৃত কিশোরের পরিবার । তাদের অভিযোগ যে শ্রীকান্তকে অত্যাচার করে মেরে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছিল অথবা তাকে আত্মহত্যা করতে প্ররোচিত করা হয়েছিল ।
জানা গেছে,বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কিশোরকে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়৷ কিন্তু চিকিৎসকরা তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন । পরে
পুলিশ কিশোরের মৃতদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মালদা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠায় । ময়নাতদন্তের রিপোর্টেও আত্মহত্যার কথা উল্লেখ করা হয় বলে খবর । যদিও সেই রিপোর্টের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন মৃত কিশোরের পরিবার ও গ্রামবাসীরা । তারা স্কুলের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবী জানান । পাশাপাশি দ্বিতীয়বার ময়নাতদন্তের দাবিতে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন । আদালতের রায় পর্যন্ত তারা কিশোরের মৃতদেহটি বাড়িতেই রেফ্রিজারেটরে সংরক্ষণ করে রাখেন । অবশেষে বুধবার হাইকোর্ট মৃত ছাত্রের দেহ পুনরায় ময়নাতদন্ত করার নির্দেশ দেয়। সেই নির্দেশ অনুযায়ী পরিবারের লোকজনেদের উপস্থিতিতে পুলিশ ফ্রীজে সংরক্ষণ করে রাখা দেহ গাড়িতে চাপিয়ে কল্যাণীর এইমস হাসপাতালে নিয়ে যায় দ্বিতীয়বার ময়নাতদন্তের জন্য।
এদিকে এই ঘটনাকে ভূতনীবাসীর ঐতিহাসিক জয় বলে দাবী করেন বিজেপি নেতা গৌড়চন্দ্র মন্ডল। তিনি বলেন, শুরু থেকেই বিজেপি মৃত ছাত্রের পরিবারের পাশে আছেন। সুবিচার না পাওয়া পর্যন্ত পাশে থাকবেন ।’ তিনি আশা করছেন দ্বিতীয়বার ময়নাতদন্তে সঠিক মৃত্যুর সঠিক কারণ উঠে আসবে এবং মৃত ছাত্রের পরিবার সহ ভূতনীবাসী সুবিচার পাবেন।।