এইদিন ওয়েবডেস্ক,কলকাতা,০১ নভেম্বর : ‘তৃণমূল কংগ্রেসকে আবার পঞ্চায়েতে লাইসেন্স পাইয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে তাঁবেদার রাজ্য নির্বাচন কমিশনার’- মঙ্গলবার এমনই কড়া ভাষায় রাজ্য নির্বাচন কমিশনারকে আক্রমণ করলেন বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী । তাঁর কথায়,’তৃণমূল কংগ্রেসের একটা অর্গানাইজেশন হয়ে গেছে রাজ্য নির্বাচন কমিশন । একটা দূর্নীতিগ্রস্থ আইএএস অফিসার । তৃণমূলকে জেতাতে এই সমস্ত কাজকর্ম করছেন ।’
এদিন শুভেন্দু অধিকারী ত্রিস্তরের নির্বাচনের জন্য প্রকাশিত সংরক্ষিত তালিকা নিয়ে আপত্তি জানাতে কলকাতায় রাজ্য নির্বাচন কমিশনারের অফিসে এসেছিলেন ৷ কমিশনের অফিস থেকে বের হয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে শুভেন্দু বলেন, ‘ত্রিস্তরের নির্বাচনের জন্য রাজ্য নির্বাচন কমিশনারের পক্ষ থেকে ১৮ অক্টোবর রিজার্ভেশনের তালিকা বের করা হয়েছে । সেই তালিকায় কোন আসনগুলি মহিলা,এসটি, এসসি, ওবিসিদের জন্য সংরক্ষিত হবে তার একটা খসড়া বের করা হয়েছে৷ তার আপত্তি জানানোর শেষ দিন হচ্ছে আগামী কাল বুধবার ৷ প্রথমত, ছুটির আবহে এটা করা হয়েছে । ছুটি ছেড়ে দিয়ে হাতে মাত্র ১০ থেকে ১১ দিন সময় পাওয়া যাবে ।’
তিনি বলেন,’তাও এদিন ১১ টার সময় নির্বাচন কমিশনের অফিসে এসে দেখছি কমিশনার, সচিব নেই, একটা গ্রুপ ডি স্টাফ রয়েছেন । বাধ্য হয়ে ওনার কাছেই আমার আপত্তিপত্র রিসিভ করালাম । এই হচ্ছে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের অফিসের অবস্থা !’
শুভেন্দু বলেন,’আমি নন্দীগ্রাম গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার ভোটার । আমারও অধিকার আছে ২ নভেম্বরের মধ্যে রোস্টারের বিরুদ্ধে অবজেকশন দেওয়ার । সেটা আমি বিডিও অফিসেও দিতে পারতাম,এসডিও অফিসেও দিতে পারতাম,জেলা শাসকের কাছেও দিতে পারতাম । কিন্তু সেখানে না দিয়ে আমি এখানে দিয়েছি কারন পুরো রাজ্যের তালিকাই ভুল ।’
শুভেন্দু বলেন,’গত ২৭/৭/২০২২ রাজ্য নির্বাচন কমিশনের অফিস থেকে একটা সার্কুলার সব জায়গায় দেওয়া হয়েছিল যে কি পদ্ধতিতে রিজার্ভেশন ক্যালকুলেশন হবে । পরে ৩১/৮/২০২২ এটা পরিবর্তন করলেন সচিব নীলাঞ্জন শান্ডিল্য । তিনি তাতে বলেছেন লোকাল সার্ভে অথবা লোকার এনকোয়ারি করার কথা । কিন্তু এনকোয়ারি ও লোকাল সার্ভে দুটো এক নয় । এসসির ক্ষেত্রে ২০১১-এর সেনসাস রিপোর্ট আমাদের হাতে আছে । সেখানে কোনো সমস্যা হওয়ার কথা নয় । কিন্তু অনান্য অনেক রাজ্যের তুলনায় পশ্চিমবঙ্গে যেহেতু ওবিসি অনেক বেশি, তার উপর রাজ্য তার নিজের মত করে ওবিসি করেছে । সেখানে সার্ভে করা উচিত । জনগননায় ওবিসির সঠিক সংখ্যা পাওয়া যাবে না । এদিকে এত অল্প সময়ের মধ্যে সার্ভেও করতে পারবে না কমিশন । তাই তৃণমূল কংগ্রেসকে আবার পঞ্চায়েতে লাইসেন্স পাইয়ে দেওয়ার জন্য সৌরভ দাসের নেতৃত্বে তাবেদার স্টেট ইলেকশন কমিশনার বলেছেন লোকাল এনকোয়ারির কথা । আমি এর ভিত্তিতেই আপত্তি জানিয়েছি । আমি দাবি জানিয়েছি এই ড্রাফট সার্ভে সম্পূর্ণ বাতিল করে, ওবিসি সার্ভে কমপ্লিট করে ৭.৫ শতাংশ ধরে নতুন রিজার্ভেশন তালিকা বের করতে হবে ।’
শুভেন্দু বলেন,’লোকাল এনকোয়ারি মানে যে সমস্ত তৃণমূল নেতারা ১০০ দিনের টাকা চুরি করেছে, মানুষকে বঞ্চিত করেছে, সীমাহীন তোলাবাজি- কাটমানি- সিন্ডিকেটের সৃষ্টিকর্তা যারা তাদের সঙ্গে বসে বিডিওরা সর্বত্র এই কাজ করবে । তার ফলে মূল গাইডলাইন মানা হবে না ।’ তাঁর কথায়,’তৃণমূল কংগ্রেসের একটা অর্গানাইজেশন হয়ে গেছে রাজ্য নির্বাচন কমিশন । একটা দূর্নীতিগ্রস্থ আইএএস অফিসার । তিনিই এই সমস্ত কাজ করছেন ।’
শুভেন্দু হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন,’নির্বাচন কমিশন ক্ষমতার অপব্যবহার করে ড্রাফট লিস্টকে যদি ফাইনাল লিস্ট বলে চালায় তাহলে আমরা আদালতের দ্বারস্থ হব ।’
এদিন তৃণমূলের মুখপাত্র কুনাল ঘোষের একটি মন্তব্য প্রসঙ্গে সাংবাদিকেরা শুভেন্দু অধিকারীর প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে তিনি বলেন,’ওর মুখ ব্লিচিং ফিনাইল দিয়ে পরিষ্কার করা উচিত । নিকৃষ্ট লোক । একটা লোক চুরির দায়ে সাড়ে তিন বছর জেলে ছিল । একটা প্রতিষ্ঠিত চোর । ডকুমেন্টারি চোর । তার সম্পর্কে কেন বলান আমাকে দিয়ে ?’