এইদিন ওয়েবডেস্ক, মঙ্গলকোট (পূর্ব বর্ধমান),০৫ জানুয়ারী : সন্তোষ ট্রফির প্রস্তুতির জন্য দুমাস আগে বাড়ি থেকে কলকাতায় গিয়েছিলেন। তারপর মিশন সফল।এবছর ৭৮ তম সন্তোষ ট্রফি জিতেছে পশ্চিমবঙ্গ। বাংলার দলের এই জয়ের নায়ক রবি দুমাস পর এদিন রবিবার বাড়ি ফিরলেন। রবিকে উৎসবের মেজাজে বরণ করে নিলেন গ্রামবাসীরা।
মঙ্গলকোটে বর্ধমান কাটোয়া রাজ্যসড়কে সাঁওতা বাসস্ট্যান্ডের কাছেই মুশারু আদিবাসীপাড়া। এই পাড়ায় প্রায় ৭০ টি আদিবাসী সম্প্রদায়ভুক্ত পরিবারের বসবাস। প্রায় সবাই জনমজুর পরিবার। জনমজুর পরিবারেই রবির জন্ম। বিধবা মা তুলসী হাঁসদা এখনও জনমজুরি করেন। অভাবী পরিবারে বড় হওয়া ফুটবলার রবিই এবছরের সন্তোষ ট্রফির সেরা গোলদাতাও। মঙ্গলবার ফাইনাল ম্যাচের একমাত্র জয়সূচক গোলটি তিনিই করেছিলেন। আর টুর্নামেন্টে মোট ১২ টি গোল করে সেরা গোলদাতার পুরষ্কার জিতেছেন তিনি।
এদিন স্ত্রী ভারতী হাঁসদা,দেড় বছরের মেয়ে রিমিকে নিয়ে রবি মুশারু আদিবাসীপাড়ায় বাড়িতে আসেন। তার আগে থেকেই আদিবাসীপাড়ার বাসিন্দারা অপেক্ষা করছিলেন রবির জন্য। ধামসা মাদলের বাজিয়ে আদিবাসী পুরুষ ও মহিলারা নৃত্যের তালে তালে রবিকে পাড়ায় নিয়ে যান। পুরো পাড়া ঘোরানো হয়। মন্দিরে মন্দিরে,জোহার থানে প্রণাম সারেন রবি। এদিন মুসারু আদিবাসীপাড়ায় কেউ কাজে যাননি। রবি ঘরে ফেরার উপলক্ষ্যে ভোজের আয়োজন করা হয়েছে চাঁদা তুলে। রবিকে এদিন সম্বর্ধনা দেন মঙ্গলকোটের বিধায়ক অপূর্ব চৌধুরী,ব্লক তৃণমূল সভাপতি রামকেশব ভট্টাচার্য। শুভেচ্ছা জানাতে ছিলেন আশপাশের গ্রামের মানুষজন। মুসারু ঝাঁকলাই মন্দিরে গিয়ে প্রণাম করে আসেন রবি ও তার পরিবার। এরপর ভাতার বাজারে একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে রবিকে আমন্ত্রণ জানিয়ে সম্বর্ধনা দেওয়া হয়।
রবি বলেন,” আমাদের দলের সব খেলোয়ারদের মধ্যে একতা ছিল। এই বোঝাপড়ার জন্যই আমরা সাফল্য পেয়েছি।” সন্তোষ ট্রফি জয়ী দলের খেলোয়ারদের সবাইকে চাকরি দেওয়ার ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। এজন্য রবি মুখ্যমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন। রবির স্ত্রী ভারতী হাঁসদা বলেন,” আমার স্বপ্ন আমার স্বামী ভারতীয় দলের হয়ে খেলবেন।” রবির মা তুলসী হাঁসদা বলেন,” ওর বাবা এই দিনটা দেখে যেতে পারল না। ছেলেটার চাকরিটা হয়ে গেলে খুব খুশি হব।”।