এইদিন ওয়েবডেস্ক,কলকাতা,০১ এপ্রিল : সন্দেশখালির ‘ত্রাস’ তৃণমূল নেতা শেখ শাহজাহানকে ১২ দিনের এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)-এর হেফাজত দিল কলকাতায় নগর দায়রা আদালত । আগামী ১৪ এপ্রিল ফের তাকে আদালতে তোলা হবে ।গত ৫ জানুয়ারি ইডির উপর হামলার ঘটনার পর দীর্ঘদিন বেপাত্তা ছিলেন শেখ শাহজাহান । পরে গত ৩০ মার্চ শাহজাহানকে গ্রেফতার করে পুলিশ । পরে তাকে সিবিআইয়ের হাতে তুলে দেওয়া হয় । তার পর থেকে সিবিআইয়ের হেফাজতেই ছিল শেষ শাহজাহান । জিজ্ঞাসাবাদের সময় ওই তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে ওঠে অসহযোগীরা অভিযোগ । পরে শাহজাহানকে বসিরহাট আদালতে তোলা হলে ১২ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয় । জেলে গিয়ে জেরার সময় সন্তোষজনক জবাব না পাওয়ায় সম্প্রতি শেখ শাহজাহানকে পিএমএলএ-মামলায় শোন অ্যারেস্ট করে ইডি । আজ সোমবার ইডি শাহজাহানকে নিজেদের হেফাজতে চেয়ে আবেদন জানায়, অনুমতিও মেলে ।
শাহজাহানের বিরুদ্ধে ইডির আইনজীবী আদালতে মারাত্মক সব অভিযোগ তোলেন । সাধারণ মানুষের জমি ও মাছের ভেড়ি কেড়ে নিতে রীতিমতো একটা একটি সিন্ডিকেট তৈরি করা হয়েছিল । যে চক্রের ‘মাস্টারমাইন্ড’ ছিল শাহজাহান । চিংড়ি মাছ কেনা বেচার মাধ্যমে কালো টাকা সাদা করার একটা চক্র চালিয়ে যাচ্ছিল শাহজাহান । ইডির আইনজীবীর কথায়, সমগ্র দেশের স্বার্থে শাহজাহানকে ইডি হেফাজতে পাঠানো উচিত ।
শুধু সন্দেশখালির বাসিন্দাদের জমি জায়গা কেড়ে নেওয়াই নয়,এলাকার মহিলাদের রাতে পার্টি অফিসে ডেকে ধর্ষণ বা গনধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে শাহজাহান ও তার বাহিনীর বিরুদ্ধে । এছাড়াও শাহজাহানের অকুত সম্পত্তির হদিশও পেয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী দল । ইডি সূত্রের খবর, ইতিমধ্যে শাহজাহানের জমি, ফ্ল্যাট, মাছের ভেড়ি মিলে প্রায় ১৩ কোটি টাকার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। সন্দেশখালি, সরবেড়িয়া এবং কলকাতায় সেই সব সম্পত্তি রয়েছে । সন্দেশখালিতে শাহজাহান মার্কেটের কাছে একটি মুদির দোকানের গুদাম থেকে দু’টি বিলাসবহুল গাড়িও উদ্ধার হয়েছে। তার মধ্যে একটি গাড়ি শাহজাহানেট এবং অন্যটি তাঁর ভাই আলমগির শেখের ।
আজ শাহজাহানকে বসিরহাট জেল থেকে বিচার ভবনে পেশ করার আগে কলকাতায় নগর দায়রা আদালতের সামনে পোস্টার হাতে নিয়ে তৃণমূলের ওই কুখ্যাত নেতার ফাঁসির দাবিতে সরব হন আইনজীবীদের একাংশ ৷ আইনজীবীরা মন্তব্য করে শাহজাহান যে নিকৃষ্ট কাজ করেছে তাতে গোটা দেশের কাছে রাজ্যবাসীর মাথা হেঁট হয়ে গেছে । শুধু বসিরহাটের শেখ শাহজাহানই নয়,রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে এমন অসংখ্য শাহজাহান রয়েছে । তাই সন্দেশখালি শাজাহানকে ফাঁসি দিয়ে আদালত নজির সৃষ্টি করুক, যাতে নতুন করে কোন শাজাহানের সৃষ্টি না হয় ।।