এইদিন ওয়েবডেস্ক,কলকাতা,২৩ এপ্রিল : সন্দেশখালির তৃণমূল নেতা শেখ শাহজাহান ও তার বাহিনীর বিরুদ্ধে এলাকার ‘সুন্দরী মহিলা’দের দলীয় কার্যালয়ে ডেকে এনে গনধর্ষণ, খুন,জমিতে সমুদ্রের জল ঢুকিয়ে দখল করে মাছের ভেড়ি বানানো প্রভৃতি সব মারাত্মক অভিযোগ উঠেছে । এছাড়া মাছের ভেড়ি কাজে লাগিয়ে রেশন দুর্নীতির কোটি কোটি কালো টাকা সাদা করারও অভিযোগ উঠেছে শাহজাহানের বিরুদ্ধে । আপাতত সন্দেশখালির “ত্রাস” ইডির হেফাজতে । এদিকে ইডি জানতে পেরেছে যে শাহজাহানের এই সমস্ত অসামাজিক কাজকর্মে দোসর ছিল তার ভাই শেখ সিরাজুদ্দিন । সন্দেশখালি কান্ডে সেও একটা গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র । তাকে জেরা করে মিলতে পারে বহু নতুন তথ্য, এমনই মনে করছে ইডি। তবে গুনধর দাদা গ্রেফতার হওয়ার পর থেকেই বেপাত্তা ভাই সিরাজুদ্দিন । ইডির সন্দেহ যে কেন্দ্রীয় সংস্থার চোখে ধুলো দিয়ে বিদেশে পালিয়ে গেছে সিরাজুদ্দিন । সেজন্য শেখ সিরাজুদ্দিনের বিরুদ্ধে লুক আউট নোটিস জারি করেছে ইডি । ইডির তরফে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ থেকে শুরু করে বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্সের(বিএসএফ) কাছে তার ছবি ও যাবতীয় তথ্য পাঠিয়ে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে ।
এদিকে ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে হাটগাছি অঞ্চলের ৫৬ নম্বর বুথ এলাকার বাসিন্দা প্রদীপ মণ্ডলসহ দুই বিজেপি কর্মীকে খুনের ঘটনায় চার্জশিট থেকে শেখ শাহজাহানের নাম তুলে নেওয়ায় আইওকে (তদন্তকারী অফিসার) ব্যাখ্যা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত। যদিও ওই পুলিশকর্মী অবসর নিয়েছেন । কিন্তু বিচারক সাফ জানিয়েছেন যে তৎকালীন তদন্তকারী অফিসারকেই জানাতে হবে কেন তিনি বক্তব্য জানতে হবে কেন তিনি চার্জশিট থেকে শেখ শাহজাহানের নাম তুলে নিয়েছিলেন ।
প্রসঙ্গত, ওই বুথটিতে বিজেপি জয়ী হয়েছিল । ভোটগণনার ঠিক এক সপ্তাহের পরই প্রদীপ মণ্ডলের বাড়িতে ঢুকে খুন করেছিল শাহজাহান ও তার বাহিনী । খুন হন আরও এক বিজেপি কর্মী । ওই জোড়া খুনের ঘটনায় আসামি ছিল শেখ শাহজাহান, কাদের মোল্লা, আখের আলি গাইন, জিয়াউদ্দিন মোল্লা, আইফুল মোল্লারা সহ শাহজাহান রোহিঙ্গা বাহিনীর বেশ কয়েকজন দুষ্কৃতী । কিন্তু মূল আসামি শেখ শাহজাহানের নাম চার্জশিট থেকে বাদ দিয়ে দেয় সন্দেশখালি থানার পুলিশ । সোমবার এই মামলার শুনানি হয় কলকাতা হাইকোর্টে । পরবর্তী শুনানির দিন ১৬ মে ধার্য করা হয়েছে । ওইদিন রাজ্যকে জোড়া খুনের কেস ডায়েরি হাজির করার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি । উল্লেখ্য,সন্দেশখালির থানার পুলিশের বিরুদ্ধে দীর্ঘ দিন ধরেই শাসকদলের হয়ে কাজ করা এবং একাধিক অনিয়মের অভিযোগ উঠছে ।
এদিকে আজ শেখ শাহজাহানকে আদালতে তোলা হলে ১৪ দিনের জন্য জেল হেফাজতে পাঠানো হয়। বিজন ভ্যানে বসে পরিবার-পরিজনদের দেখে ফুঁপিয়ে কাঁদতে দেখা যায় গুরুতর অভিযোগের আসামি প্রাক্তন তৃণমূল নেতা শেখ শাহজাহানকে । সন্দেশখালীর মানুষের চোখের জল ফেলার কারণ ওই কুখ্যাত আসামিকে এভাবে কাঁদতে দেখে অনেকে হতবাক হয়ে গেছেন । দীর্ঘদিন ধরে ইডির হেফাজতে থাকার পর শাহজাহানের মধ্যে সেই ঔদ্ধত্য আর লক্ষ্য করা যায়নি ।।