এইদিন ওয়েবডেস্ক,মস্কো,১৯ জুন : রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা বুমেরাং হয়ে গেছে । অবসান ঘটেছে এককেন্দ্রিক বিশ্বব্যবস্থার । পুরোনো সেই অবস্থা আর কখনই ফিরে আসবে না । শুক্রবার রাশিয়ার সেন্ট পিটার্সবার্গে আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক ফোরামে ভাষণ দেওয়ার সময় এই কথাই বললেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন । তিনি বলেন, ইউক্রেনে রাশিয়ার বিশেষ সামরিক অভিযান চালানোর পর পশ্চিমি দেশগুলি রাশিয়াকে দুর্বল করতে চেয়েছিল । কিন্তু পারেনি । উলটে তারা চরম অর্থনৈতিক সঙ্কটের মধ্যে পড়েছে । অথচ অথচ এই দেশগুলো এখনো নিজেদের উচ্চ মর্যাদার অধিকারী এবং অন্য দেশগুলোকে তাদের উপনিবেশ মনে করে ।
পুতিন আরও বলেন, ‘রাশিয়ার বিরুদ্ধে পশ্চিমি দেশগুলো বিশেষ করে ইউরোপের দেশগুলো যে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে সেগুলো কোনো সুচিন্তিত সিদ্ধান্ত ছিল না । রাশিয়ার বিরুদ্ধে ইইউর অবরোধ ও নিষেধাজ্ঞা ছিল বাস্তবতা বিবর্জিত সিদ্ধান্ত । এর দ্বারা প্রমাণ হয়, ইউরোপীয় ইউনিয়ন পুরোপুরিভাবে তার রাজনৈতিক সার্বভৌমত্ব হারিয়েছে ।’ পশ্চিমি রাষ্ট্রনেতারা নিজেদের দেশ ও দেশবাসীর ক্ষতি করছে বলে মন্তব্য করেন পুতিন । তিনি বলেন, ‘ইইউর নাগরিকদের এর জন্য মূল্য চোকাতে হবে। রাশিয়ার বিরুদ্ধে আরোপ করা নিষেধাজ্ঞার জেরে চলতি বছরে তাদের ক্ষতির পরিমাণ ৪০ হাজার ডলার ছাড়িয়ে যেতে পারে ।’
পুতিন বলেন, ‘যারা জ্বালানির দাম এবং মুদ্রাস্ফীতির জন্য রাশিয়াকে দায়ী করেন, তারা বোকামি করছেন। আমাদেরকে দোষারোপ করবেন না বরং নিজেদেরকে দোষারোপ করুন । রাশিয়ার সঙ্গে ইউরোপের দেশগুলোর গ্যাস আমদানির ব্যাপারে দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি ছিল। সম্প্রতি সেগুলো বাদ দেওয়ার কারণেই বিশ্বে জ্বালানির দাম বেড়েছে ।’ পাশাপাশি রাশিয়ার সার ও খাদ্যশস্য রপ্তানির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে বিশ্বে খাদ্য সঙ্কট পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ার জন্য আমেরিকা,ব্রিটেনসহ পশ্চিমি দেশগুলিকে দায়ী করেছেন পুতিন । তিনি বলেন, ‘এরপর দরিদ্র দেশগুলোতে দুর্ভিক্ষ শুরু হলে এর জন্য মার্কিন প্রশাসন ও ইউরোপীয় আমলারা দায়ী থাকবেন ।’ আফ্রিকা ও মধ্যপ্রাচ্যের যে সমস্ত দেশে দুর্ভিক্ষ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে সেখানে রাশিয়া খাদ্য পাঠাতে প্রস্তুত কিন্তু এই ব্যাপারে পশ্চিমি দেশগুলোর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে অভিযোগ করেন পুতিন।
পরিশেষে তিনি ইউক্রেন অভিযান সম্পর্কে বলেন, ‘এর জন্যও দায়ী পশ্চিমি বিশ্ব । তারা তাদের দায়িত্ব ঠিকমতো পালন না করার কারণেই মস্কো বাধ্য হয়েছে এই সিদ্ধান্ত নিতে । কারণ একটি স্বাধীন সার্বভৌম দেশ হিসেবে রাশিয়া তাদের স্বার্থ এবং জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার অধিকারী । পাশাপাশি পশ্চিমিদের সমর্থন নিয়ে ইউক্রেনের সরকার দোনবাসের অধিবাসীদের বিরুদ্ধে যে গণহত্যা চালিয়েছিল তা থেকে ওই অঞ্চলের জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা রাশিয়ার কর্তব্য বলে মন্তব্য করেন পুতিন ।।