এইদিন,ওয়েবডেক্স,২৫ ফেব্রুয়ারী : কট্টর ইসলাম বিদ্বেষী ইরাকি বংশোদ্ভূত সালওয়ান মোমিকা বিশ্বজুড়ে সুপরিচিত নাম। ইরাকে থাকাকালীন কুখ্যাত সন্ত্রাসবাদি সংগঠন ইসলামী স্টেট (আইএসআইএস)-এর মানবতাবিরোধী ও নৃশংস কর্মকাণ্ড দেখে ইসলামের উপর ঘৃণার সৃষ্টি হয় মোমিকার । তারই প্রতিফলন লক্ষ্য করা যায় তিনি সুইডেনে শরণার্থী হিসাবে আসার পর থেকে । ইতিপূর্বে বহুবার পুলিশের নিরাপত্তায় প্রকাশ্য রাস্তায় এবং কোরান পুড়িয়ে ইসলামের উপর তার ঘৃণা প্রদর্শন করেছিলেন । ফের একবার সুইডেনের স্টকহোমের রাস্তায় কোরানের কপি নিয়ে লাথি মেরে ও পুড়িয়ে তার ঘৃণা প্রদর্শন করলেন মোমিকা । পূর্ব ঘোষিত এই কর্মসূচি চলাকালীন মোমিকার ওপর কয়েকজন মুসলিম যুবক হামলা চালানোর চেষ্টা করে । কিন্তু সুইডেন পুলিশ তাদের ধরে ফেলে এবং তাদের গ্রেপ্তার করা হয় ।
কোরান পোড়ানোর পর মোমিকা তার এক্স হ্যান্ডেলে ইউরোপীয় দেশে মুসলিম অভিবাসীদের নিয়ে কটাক্ষ করে লিখেছেন, ‘ইসলাম পশ্চিমের অংশ নয় এবং হবেও না। তোমরা যদি মনে করো যে তোমরা পশ্চিমে খেঁজুর রোপণ করতে পারো তবে তোমরা ভুল করছ, কারণ এটি ফল দেবে না। তোমরা যদি মনে কর যে আমাদের জলবায়ু তোমাদের উটের জন্য উপযুক্ত, তাহলে তোমরা ভুল। তোমার উট এখানে ঠাণ্ডায় মারা যাবে। তাই তোমার খেজুর গাছ ও তোমার উটগুলো নিয়ে যাও এবং যেখান থেকে এসেছিলে সেখান থেকে চলে যাও।’
দিন কয়েক আগে সুইডেনের অভিবাসন আদালত ইরাকি শরণার্থী সালওয়ান মোমিকাকে নির্বাসনের নির্দেশ দিয়েছে । সুইডিশ রেডিও স্টেশন ইকোট জানিয়েছে যে আদালত তাকে নির্বাসনের অভিবাসন সংস্থার সিদ্ধান্তকে বহাল রেখেছে এবং গত বছর সালওয়ানের দ্বারা আদালতের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা আবেদন প্রত্যাখ্যান করেছে। আদালত আরও পর্যবেক্ষণ করেছে যে সালওয়ান বসবাসের অনুমতির আবেদন সম্পর্কে মিথ্যা তথ্য দিয়েছিলেন।
সালওয়ান মোমিকাক ২০২১ সালে সুইডেনে একটি স্থায়ী বসবাসের অনুমতি পেয়েছিলেন। বিতর্কের পর, মাইগ্রেশন এজেন্সি গত বছরের ২৬ অক্টোবর,সালওয়ানকে নির্বাসন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। তবে, ইরাকে নির্যাতনের আশঙ্কায় এই আদেশ কার্যকর করা হয়নি। তারপর একটি অস্থায়ী বসবাসের পারমিট জারি করা হয়। এর মেয়াদ ২০২৪ সালের এপ্রিল পর্যন্ত।
গত বছরের ২৮ জুন থেকে সুইডেনে বেশ কয়েকবার প্রকাশ্যে কোরান পুড়িয়ে সংবাদে শিরোনামে চলে আসেন সালওয়ান মোমিকা । এর ফলে বিভিন্ন দেশ প্রতিবাদ করে এবং সুইডিশ রাষ্ট্রদূতদের তলব করা হয়। স্টকহোমে কোরান পোড়ানোর প্রতিবাদ জানিয়েছে মুসলিম দেশগুলোর সংগঠন ওআইসি । ওআইসি, ৫৭ টি মুসলিম দেশ নিয়ে গঠিত । ওই সংগঠনটি কোরান অবমাননাকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার এবং মুসলিম বিরোধী আন্দোলনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য আন্তর্জাতিক স্তরে আইন প্রবর্তনের দাবি জানায় । ওআইসি বলেছে, মতপ্রকাশের স্বাধীনতার অবসান ঘটিয়ে একটি ধর্মীয় গোষ্ঠী এবং তাদের পবিত্র ধর্মগ্রন্থকে অবমাননা করার প্রথা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয় । যদিও এটা ওআইসির দ্বিচারিতা বলে মনে করছে অনেকে । কারণ পাকিস্তান ও বাংলাদেশ হিন্দু মন্দির ও খ্রিস্টানদের গির্জার ওপর লাগাতার হামলা হয়ে আসছে । কিন্তু এযাবৎ ওই দুই ইসলামি রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে মুখ খোলেনি ওআইসি । এছাড়া ওআইসির অন্তর্ভুক্ত এমন কিছু রাষ্ট্র আছে যারা ভারতে ইসলামের প্রসার ঘটনার জন্য হাওলার মাধ্যমে ভারতের ইসলামী কট্টরপন্থী সংগঠন ও ব্যক্তিদের অর্থ সরবরাহ করে আসছে ।।