এইদিন ওয়েবডেস্ক,কলকাতা,১৬ অক্টোবর : বছর ঘুরলেই রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন। এসআইআর (SIR) নিয়ে ক্রমশ ছড়াচ্ছে উত্তাপ। এসবের মাঝেই এবার চাঞ্চল্য ছড়াল উত্তর ২৪ পরগনা জেলার নৈহাটিতে৷ সেখানে স্বামী ও দুই সন্তানকে দিব্যি সংসার পেতেছেন পাকিস্তানের সালেহা খাতুন ওরফে সালেহা ইমরান৷ নৈহাটির ভোটার লিস্টে পাকিস্তানের করাচির বাসিন্দার ওই মহিলার । এই তথ্য প্রকাশ্যে এনেছেন বিজেপি নেতা অর্জুন সিং। পড়শি দেশের নাগরিকের নাম কীভাবে নৈহাটির ভোটার তালিকায় উঠল সেই প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। চিঠি পাঠিয়েছেন রাজ্যের মুখ্য নির্বাচন কমিশনারের কাছে । এদিকে এসআইআর শুরুই আগেই খাস কলকাতাতেই বিএলও-দের ‘হুমকি’র অভিযোগ উঠেছে । ফলে বিএলও-দের মধ্যে প্রবল আতঙ্ক ছড়িয়েছে ।আধা সেনার নিরাপত্তা চেয়ে সিইও-কে পাঠিয়েছেন বিএলও-দের একাংশ ।
ব্যারাকপুরের প্রাক্তন সাংসদ অর্জুন সিং সিইও-কে পাঠানো চিঠিটি নিজের ফেসবুক পেজে পোস্ট করে লিখেছেন, “কি চলছে পশ্চিমবঙ্গে ?? পাকিস্তান থেকে এখানে এসে ভোটার কার্ড আধার কার্ড করিয়ে নিয়ে দিব্ব্যি সরকারি সামাজিক প্রকল্পের সুবিধা গ্রহণ করছে। অথচ তৃণমূলের জেহাদি তোষণ কারী প্রশাসন সব জেনেও চুপ করে আছে।উত্তর ২৪ পরগনার বাসিন্দা সালেহা খাতুন ওরফে সালেহা ইমরান এবং তাঁর পরিবারের সঙ্গে সম্পর্কিত ব্যক্তিরা পাকিস্তানের নাগরিক। এই সংক্রান্ত সকল প্রমান নথিপত্র আছে।
সালেহা খাতুন ওরফে সালেহা ইমরানঃ । জন্মস্থানঃ করাচি, পাকিস্তান (০১/০২/১৯৭১)। জাতীয়তার প্রমাণঃ পাকিস্তানি পাসপোর্টধারী (পাসপোর্ট নং EU4173171)৷ জালিয়াতির মাধ্যমে অর্জিত ভারতীয় পরিচয়পত্রঃ ভারতীয় আধার কার্ড (নং 2797 4242 4102) এবং ভারতীয় ভোটার পরিচয়পত্র (ইপিক নং FKY0779223)। বাসস্থানঃ ২৩, এ.১, ঘোষ রোড, নৈহাটী (মিউনিসিপ্যালিটি), গরিফা, উত্তর ২৪ পরগনা, পশ্চিমবঙ্গ – ৭৪৩১৬৬। তাঁর ভোটার কার্ড ১০৪- নৈহাটী বিধানসভা কেন্দ্রে নিবন্ধিত।”
তিনি লিখেছেন,”সালেহা খাতুনের সন্তানঃ ইয়াওয়ার ইমরান এবং জাজবা ইমরান । ইয়াওয়ার ইমরান (জন্মতারিখঃ ১৪/০৬/১৯৯৭) এবং জাজবা ইমরান (জন্মতারিখঃ ১১/০১/২০০০) – উভয়েরই জন্ম পাকিস্তানে, এবং তাঁদের ভারত আনা হয় পাকিস্তানি পাসপোর্টে। জাজবা ইমরানের পাকিস্তানি পাসপোর্ট নম্বর হলো AA8833732। জন্ম ও প্রবেশের অবস্থান পাকিস্তান হওয়া সত্ত্বেও, উভয়েই ভারতের ভোটার পরিচয়পত্র (ইপিক কার্ড) অর্জন করেছে, যা ১০৪-নৈহাটী বিধানসভা কেন্দ্রে নিবন্ধিত। ইয়াওয়ার ইমরানঃ ইপিক নং IQN1159078 । জাজবা ইমরানঃ ইপিক নং IQN1159003 ।”
সব শেষে অর্জুন সিং লিখেছেন,”ইপিক কার্ডের অবৈধ ইস্যু করা স্থানীয় স্তরের নির্বাচন ব্যবস্থার সরাসরি ব্যর্থতার প্রমাণ। এটি নির্বাচন প্রশাসনিক কাঠামোর গুরুতর ত্রুটি নির্দেশ করে। উত্তর চব্বিশ পরগনার জেলা শাসক ও ব্যারাকপুরের মহকুমা শাসক এই দায় কোনো মোটেই এড়াতে পারে না। আমি পশ্চিমবঙ্গের মুখ্য নির্বাচন কমিশনারের কাছে দাবী জানাচ্ছি যেন একটি উচ্চপর্যায়ের, নির্দিষ্ট সময়সীমাবদ্ধ তদন্ত শুরু করা হয় — যাতে নির্ধারণ করা যায় কে বা কারা ফর্ম-৬ আবেদনপত্রে (ইপিক কার্ডের জন্য) অনুমোদন দিয়েছে, এবং কোন কোন কর্মকর্তা — নৈহাটী ইআরও, ব্যারাকপুর এসডিও বা অন্য কেউ — এবং কোন মধ্যস্থ ব্যক্তিরা ইচ্ছাকৃতভাবে এই জাল নথিপত্রের ইস্যু প্রক্রিয়ায় সহায়তা করেছে, তা সনাক্ত করা যায়।”
অন্যদিকে সিইও-কে পাঠানো চিঠিতে কলকাতার বিএলওরা অভিযোগ করেছেন যে তাঁদের ভয় দেখাতে বন্দুকও দেখানো হয়েছে৷ আবার কোনও ক্ষেত্রে প্রলোভনও দেখানো হচ্ছে বলে অভিযোগ। প্রশ্ন উঠছে, যেখানে এনুমেরেশন ফর্মই এখনও ছাপা হয়নি, তার আগে থেকেই কীভাবে হুমকির শিকার হতে হচ্ছে? কলকাতার বিভিন্ন জায়গা থেকে আসা এই ধরনের হুমকিতে উদ্বেগ ছড়িয়েছে ।।

