প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,২৯ এপ্রিল : ইংলিশ চ্যানেলের পর এবার মার্কিন মুলুকের মালোকাই চ্যানেল জয় করে ইতিহাস সৃষ্টি করলো বাংলার জলকন্যা সায়নী দাস । শুধু ভারত নয়,এশিয়া মহাদেশের মহিলা সাঁতারু হিসাবে সায়নী প্রথম মালোকাই চ্যানেল জয়ের নজির সৃষ্টি করলেন। জয়ের পর সেখানেই ভারতের জাতীয় পতাকা তুলে ধরেন সায়নী । শুক্রবার সকালে সুদূর মার্কিন মুলক থেকে ফোন করে মেয়ের সেই ইতিহাস সৃষ্টির কথাই ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস কে জানান সায়নীর বাবা তথা কোচ রাধেশ্যাম দাস । মহিলা সাঁতারু হিসাবে সায়নী এই নিয়ে চার চারটি চ্যানেল জয়ের দৃষ্টান্ত তৈরি করতে পারায় উচ্ছশিত সায়নির পরিবার ও দেশের সাঁতারু মহল ।
সায়নীর বাড়ি পূর্ব বর্ধমানের কালনা শহরের
বারুই পাড়ায় ।ছোট বয়স থেকেই বাবা রাধেশ্যাম দাসের হাত ধরে সাঁতারে হাতে খড়ি হয় সায়নীর।তার পর থেকে কঠিন অনুশীলনের মধ্যদিয়ে সায়নী নিজেকে কার্যত জলকন্যা হিসাবেই গড়ে তোলে ।রটনেষ্ট ও ক্যাটলিনা চ্যানেল জয়ের পর ২০১৭ সালে সায়নী ইংলিশ চ্যানেল জয়ের দৃষ্টান্ত তৈরী করে। আর এবার সায়নী মালোকই চ্যানেল জয় করে ইতিহাস সৃষ্টি করলো ।
রাধেশ্যাম দাস জানিয়েছেন , মালোকাই চ্যানেল জয়ের স্বপ্ন নিয়ে সায়নী টানা দু’বছর কঠিন অনুশীলন চালিয়ে যায় । তার পর মালোকাই চ্যানেল জয়ের লক্ষ্যে ২৯ শে মার্চ মেয়ে সায়নীকে নিয়ে তিনি মার্কিন মুলুকে পা রাখেন ।এপ্রিল মাসের প্রথম দু’সপ্তাহের মধ্যে মালোকাইয়ের জলে নামার কথা থাকলেও খারাপ আবহাওয়ার কারণে সায়নী জলে নামতে পারেননি। ওই সময়ে হাওয়ার গতীবেগ প্রতি ঘন্টায় ৩৫-৪৫ কিমি থাকায় জলের ঢেউ ২ মিটারের উপরে থাকছিল ।তাই তখন মালোকাইয়ের জলে নামা ঝুঁকিপূর্ণ ছিল । সায়নীর পাইলটও ভালো আবহাওয়ার জন্য একটু অপেক্ষা করতে বলেন । সায়নী তাঁর পাইলটের বক্তব্য মেনে নেয় । কারণ ২০১৭ সালে ইংলিশ চ্যানেলে নামার আগে সায়নীকে এই ধরনের প্রতিকূল আবহাওয়া জনিত পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হয়েছিল ।
রাধেশ্যাম বাবু আরও জানান, “আবহাওয়া প্রতিকুল থাকার সময়টা মালোকাইয়ের জলে সায়নী নামতে না পারলেও অনুশীলন বন্ধ করে নি । আমেরিকার হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জে টানা বাইশ দিন থাকাকালীনও সায়নী কঠিন অনুশীলনে চালিয়ে যায় ।মালোকাই চ্যানেল সুইমিং অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট বিল গোডিং সায়নীকে দায়িত্ব নিয়ে অনুশীলন করান । আর পাইলট ম্যাথিউ বাকম্যান আবহাওয়ার গতিপ্রকৃতির উপর নজর রেখে চলেন। পরে অনুকুল আবহাওয়া পরিস্থিতি তৈরি হলে ২৮ এপ্রিল ভারতীয় সময় সকাল ১০ টা নগাদ সায়নী মালোকইয়ের জলে নামে । তার পর থেকে টানা ১৯ ঘন্টার বেশী সময় সাঁতার কেটে সায়নী মালোকাই চ্যালেন জয়ের লক্ষে পৌছে যায় বলে রাধেশ্যাম বাবু এদিন জানিয়েছেন । সায়নী জানিয়েছে, মালোকাই চ্যানেল জয় করার লক্ষ ছিল তাঁর । সেই জয় তিনি পেয়েছেন ।একই সঙ্গে সায়নী জানান,এই জয় তিনি উৎসর্গ করেছেন দেশের সকল ক্রীড়া প্রেমী মহিলাদের উদ্দেশ্যে ।।