এইদিন বিনোদন ডেস্ক,২২ জানুয়ারী : গত ১৬ জানুয়ারী রাতে ছুরি হামলার পর কয়েকদিন চিকিৎসাধীন থেকে সদ্য বাড়ি ফিরেছেন বলিউড অভিনেতা সঈফ আলি খান । চিকিৎসকের পরামর্শে এখন তিনি বিশ্রামে । এরই মাঝে ফের জোরদার ঝটকা খেলেন অভিনেতা । উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া পতৌদি পরিবারের মালিকানাধীন আনুমানিক ১৫,০০০ কোটি টাকার সম্পত্তি হাতছাড়া হাতছাড়া হতে বসেছে সঈফ আলির । সম্পত্তিগুলির মধ্যে হল সাইফের শৈশব বাড়ি ফ্ল্যাগ স্টাফ হাউস, নূর-উস-সাবাহ প্যালেস, দার-উস- সালাম, হাবিবির বাংলো, আহমেদাবাদ প্যালেস, কোহেফিজা সম্পত্তি ইত্যাদি। মধ্যপ্রদেশের জব্বলপুর থেকে ভোপাল পর্যন্ত এই ১৫ হাজার কোটি টাকার পারিবারিক সম্পত্তি ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে, যা সরকার দখল করতে পারে।শত্রু সম্পত্তি আইন ১৯৬৮- এর অধীনে সরকার কর্তৃক অধিগ্রহণ করা হতে পারে।
খবর অনুযায়ী, সাইফ আলি খানের এই পারিবারিক সম্পত্তিগুলি নিয়ে বিতর্কটি বেশ পুরনো এবং ১৯৬০ সাল থেকে চলে আসছে। সাইফের দাদু নবাব হামিদুল্লাহ খানের মৃত্যুর পর তার সম্পত্তি নিয়ে আইনি বিরোধ শুরু হয়। নবাবের কন্যা আবিদা সুলতানকে সম্পত্তির প্রকৃত উত্তরাধিকারী হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছিল, কিন্তু তিনি পাকিস্তানে চলে গিয়েছিলেন। এর পর, ভারত সরকার এই সম্পত্তিটিকে “শত্রু সম্পত্তি” হিসেবে ঘোষণা করে এবং তার দ্বিতীয় কন্যা সাবিয়া সুলতানকে এর উত্তরাধিকারী হিসেবে বিবেচনা করে।
২০১৪ সালে সঈফ আলি খান এবং তার পরিবার সম্পত্তিটিকে শত্রু সম্পত্তি হিসেবে ঘোষণা করার বিরুদ্ধে আদালতে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছিলেন। তিনি বলেন যে এই সম্পত্তি শত্রু সম্পত্তি নয় এবং এটি অবৈধভাবে অধিগ্রহণের চেষ্টা করা হচ্ছে। ২০১৫ সালে, আদালত এই মামলায় সম্পত্তির উপর স্থগিতাদেশ জারি করেছিল, যার কারণে সরকার এটি দখল করতে পারেনি। তবে, ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে, মধ্যপ্রদেশ হাইকোর্ট এই বিষয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ রায় দেয়। আদালত সঈফ আলি খান, তার মা শর্মিলা পতৌদি খান,তার বোন সোহা আলি খান এবং সাবা আলি খানের আবেদন খারিজ করে দিয়েছে। আদালত তাদের ৩০ দিনের মধ্যে কর্তৃপক্ষের কাছে আপিল করার বিকল্প দিয়েছিল। এখন এই সময়সীমা শেষ হয়ে গেছে। সঈফ আলি খান এবং তার পরিবার আপিল করেননি, যার কারণে হাইকোর্ট কর্তৃক সম্পত্তির উপর আরোপিত স্থগিতাদেশ এখন অকার্যকর হয়ে পড়েছে। যেকারণে ভোপাল জেলা প্রশাসনের জন্য এই সম্পত্তিগুলি দখলের পথ পরিষ্কার হয়ে গেছে।
প্রসঙ্গত, ভোপালের এই সম্পত্তিটি প্রায় ১০০ একর জুড়ে বিস্তৃত। এর মধ্যে রয়েছে কোহেফিজা এবং চিকলোদ এলাকার জমি, যেখানে প্রায় ১.৫ লক্ষ মানুষ বাস করে। এই সম্পত্তিতে পতৌদি পরিবারের একটি ঐতিহাসিক বাড়িও রয়েছে, যার নাম ‘পতৌদি পতাকা ঘর’। এই সম্পত্তির মূল্য মাত্র ১০০০ কোটি টাকা বলে জানা গেছে। সরকার ১৯৬৮ সালের শত্রু সম্পত্তি আইনের অধীনে এই সম্পত্তি অধিগ্রহণের প্রক্রিয়া শুরু করেছিল। সাম্প্রতিক আদালতের সিদ্ধান্তের পর, জেলা প্রশাসন এই প্রক্রিয়াটি দ্রুততর করতে পারে।
তবে, সঈফ আলি খান এবং তার পরিবারের কাছে এখনও একটি শেষ সুযোগ আছে। তারা মধ্যপ্রদেশ হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে আপিল করতে পারবেন। যদি সেখানকার সিদ্ধান্ত তাদের পক্ষে আসে, তাহলে তাদের সম্পত্তির সংকট দূর হতে পারে।
উল্লেখ্য, ২০২৫ সালের ১৬ জানুয়ারি সঈফ আলি খানের উপর হামলা তাকে ইতিমধ্যেই মানসিক ও শারীরিকভাবে নাড়িয়ে দিয়েছিল। এমন পরিস্থিতিতে, এই সময়টি সঈফ আলি খানের জন্য অনেক চ্যালেঞ্জে পূর্ণ। একদিকে, তিনি তার স্বাস্থ্যের সাথে লড়াই করছেন, অন্যদিকে, তার পৈতৃক সম্পত্তি বিপদের মুখে। এখন দেখার বিষয় হলো এই সম্পত্তি বাঁচাতে আইনি লড়াইয়ে তারা কী পদক্ষেপ নেয়।।