জ্যোতি প্রকাশ মুখার্জ্জী,গুসকরা(পূর্ব বর্ধমান),২১ জুলাই : ২১ শে জুলাই – শহীদ দিবস না তৃণমূলের রাজনৈতিক সমাবেশ? এটা নিয়ে তৃণমূল বিরোধী দলগুলো বা ভিন্ন মতের মানুষদের মধ্যে রাজনৈতিক বিতর্ক বা তর্জা থাকতেই পারে। বেসরকারি টিভি চ্যানেলের সান্ধ্যকালীন যুক্তিহীন চিৎকারের বিষয়বস্তু হতেই পারে। যেকোনো অনুষ্ঠানে, সেটা স্মরণ সভা বা পুজোর উদ্বোধন হতে পারে, কোনো রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব উপস্থিত থাকলেই রাজনীতির কথা উঠে আসবেই। তিনি না চাইলেও উপস্থিত মানুষরা তার মুখ থেকে কিছু রাজনীতির কথা শুনতে চাইবেই। তিনিও ‘জনগণের দাবি’ তকমা দিয়ে অনেক রাজনীতির কথা বলবেন। আর ২১ শে জুলাই তো তৃণমূলের ঘোষিত প্রোগ্রাম। বলা ভাল কেন্দ্রীয় সমাবেশ। সুতরাং লক্ষ লক্ষ কর্মী সমর্থকদের উপস্থিতিতে মঞ্চের বক্তারা যে গলার শিরা ফুলিয়ে বিরোধীদের তুলোধনা করবেই সেটা স্বাভাবিক ব্যাপার। সেখানে যাকে উদ্দেশ্য করে সভা সেটা পেছনে চলে যেতেই পারে ।
কিন্তু দিনটিকে কেন্দ্র করে গোটা রাজ্যজুড়ে যেভাবে অলিখিত বা অঘোষিত বন্ধের চেহারা দেখা গেলো সেটা অকল্পনীয় এবং এটা কেউই অস্বীকার করতে পারবে না। উত্তর থেকে দক্ষিণ, পূর্ব থেকে পশ্চিম – রাজ্যের প্রতিটি স্ট্যান্ড থেকে অধিকাংশ বাস উধাও। সবার গন্তব্যস্থল ধর্মতলা। একটা স্ট্যান্ড থেকে নাকি মাত্র কুড়ি শতাংশেরও কম বাস ছেড়েছে। যদিও যাত্রী সেরকম ছিল না। যাত্রী শূন্য স্ট্যান্ডে বাসগুলোকে অসহায় ভাবে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে।পরিস্থিতি আঁচ করে খুব জরুরি কাজ ছাড়া মানুষ সেভাবে বের হয়নি।
সবচেয়ে বড় সমস্যা হয় দীর্ঘ দূরত্বের ট্রাক বা ডাম্পারের চালক ও খালাসীদের। ‘নো এণ্ট্রি’ হওয়ার জন্য কলকাতামুখী ট্রাক বা ডাম্পারগুলোকে কলকাতা থেকে অনেক দূরে দীর্ঘ সময় ধরে বিভিন্ন হাইওয়ের ধারে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। এমনকি তাদের রাস্তার ধারে রান্নাও করতে হয়। হয়তো দুর্ঘটনা রোধ করার জন্যই সাময়িক এই সিদ্ধান্ত।
মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর মমতা ব্যানার্জ্জীর হাত ধরে রাজ্য থেকে বাম আমলের বনধ কালচার কার্যত বিদায় নিয়েছে। কিন্তু ২১ শে জুলাই যে চিত্র দেখা গ্যালো সেটা ভাল বিজ্ঞাপন নয়। হতে পারে বছরে একদিন, তারপরও বিষয়টি নিয়ে ভাবতেই হবে। সবকিছু স্বাভাবিক রেখে কিভাবে দিনটি পালন করা যায় সেটা নিয়ে নতুন উপায় বের করতেই হবে। যেভাবে তার মস্তিষ্ক প্রসূত প্রকল্পগুলো একের পর এক সাফল্য পেয়েছে হয়তো এরকমই কোনো নতুন ভাবনা ভবিষ্যত প্রজন্মকে পথ দেখাবে।।