এইদিন ওয়েবডেস্ক,বর্ধমান,০৯ নভেম্বর : শুক্রবার দুপুরে পূর্ব বর্ধমান জেলার ভাতার থানার আলিনগর এলাকায় কার্যত তান্ডব চালায় বছর ত্রিশের যুবক সাদ্দাম শেখ নামে মানসিক অসুস্থ এক যুবক । বাদশাহী রোড অবরোধ করে লাঠিহাতে রীতিমতো দাদাগিরি চালায় সে । একটা পন্যবাহী লরিতে ভাঙচুর চালায় । তাকে থামাতে গিয়ে বেদম মার খেতে হয় ভাতার থানার এক ভিলেজ পুলিশসহ ৫ জন গ্রামবাসী । যদিও থানা থেকে বিশাল পুলিশবাহিনী গিয়ে তাকে বাগে আনে । পরে তাকে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয় বর্ধমান শহরের একটা বেসরকারি হাসপাতালে । কিন্তু পরিবারের লোকজন ও পুলিশের হাতফস্কে ফের পালিয়ে যায় সাদ্দাম । তারপর থেকে বর্ধমান শহর জুড়ে তন্নতন্ন করে সাদ্দামের সন্ধানে খোঁজ শুরু করে সকলে । কিন্তু তার কোনো হদিশ পাওয়া যায়নি । এরপর আজ শনিবার বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে ধুন্ধুমার কান্ড বাধিয়ে দেয় মুর্তিমান । কখনো সে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসের লহরের জলে কখনও নেমে পড়ে দাপাদাপি করে । কখনো পড়ুয়াদের লক্ষ্য করে ইঁটপাকেল ছুড়তে শুরু করে । শেষে সে সকলের তাড়া খেয়ে সটান উঠে পড়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বোটানি বিভাগের তিন তলায় । তারপর জানালার গ্রিল ধরে ঝুলতে থাকে । তাকে নামাতে গিয়ে কার্যত কালঘাম ছুটে যায় দমকল বিভাগের কর্মীদের । শেষ পর্যন্ত মই লাগিয়ে তাকে নিচে নামানো হয় । পরে ওই যুবককে তুলে দেওয়া হয় পরিবারের হাতে । এই ঘটনায় আলোড়ন পড়ে যায় গোটা শহর জুড়ে ।
দেখুন ভিডিও 👇
আলিনগর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় বাড়ি সাদ্দাম শেখের ৷ বেশ কয়েক বছর আগে সে সুস্থই ছিল । বাড়ির পাশে সিমেন্টের পিলার ও প্লেট তৈরির ব্যবসা করত । কিন্তু ব্যবসা বন্ধ করে দেওয়ার পর থেকেই তার মানসিক অসুস্থতার লক্ষণ দেখা দেয় । গত বুধবার এরুয়ার বাসস্ট্যান্ডে বিধায়ক মানগোবিন্দ অধিকারীর দলীয় কার্যালয়ের সামনে অস্বাভাবিক আচরণ শুরু করে ওই যুবক । সেই সময় বিধায়ক সেখানে ছিলেন । যুবককে শান্ত করতে গিয়ে বিধায়ককেও তার হাতে হেনস্থা হতে হয় । বিধায়কের বুকে সে সজোরে কিল মারে বলে জানা গেছে । যদিও পরিচিত হওয়ায় এনিয়ে কোনো অভিযোগ দায়ের করা হয়নি থানায় । পুলিশ কোনওরকমে তাকে উদ্ধার করে নিয়ে এসে তার চিকিৎসার ব্যবস্থা করে। চিকিৎসার কয়েকঘন্টা সে ভালোই ছিল । কিন্তু শুক্রবার ফের তার মেজাজ সপ্তমে চড়ে যায় ।
দুপুর নাগাদ একটা মোটা কাঠ নিয়ে বাদশাহী রোডের উপর দাঁড়িয়ে যানবাহন আটকাতে শুরু করে সাদ্দাম । এক লরিচালক তাকে সরে যেতে বললে ওই লরিতে ভাঙচুর চালাতে থাকে সে । কিন্তু যুবকের হামলার ভয়ে পরিবারের লোকজন এগিয়ে আসার সাহস করেনি । এরপর আলিনগর গ্রামের বাসিন্দা ভিলেজ পুলিশ আসরাফুল আজিম যুবককে রাস্তা থেকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করতেই সে মারমুখি হয়ে ওঠে । আসরাফুলকে বেদম মারধর শুরু করে । এই দেখে স্থানীয় বাসিন্দা মুন্সি তৌহিদ, এনামুল করিমসহ কয়েকজন তাকে বাঁচাতে এলে তারাও মার খায় । পরে পুলিশ বাহিনী গিয়ে কোনো রকমে তাকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে ।।