এইদিন ওয়েবডেস্ক,নয়াদিল্লি,০২ সেপ্টেম্বর : রাশিয়া থেকে আরও কম দামে জ্বালানি তেল পাবে ভারত । চলতি সেপ্টেম্বর ও আগামী মাস অর্থাৎ অক্টোবর থেকে প্রতিটি কার্গোতে ভারতকে ব্যারেলপ্রতি ৩-৪ ডলার ছাড় দেবে রাশিয়া৷ রাশিয়ার তেল কেনা এবং ইউক্রেন যুদ্ধে ইন্ধন জোগানোর অভিযোগ এনে ভারতের শুল্ক দ্বিগুণ করে ৫০ শতাংশে উন্নীত করেছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন। ২০২২ সালে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের শুরুতে দিল্লি রাশিয়ার অপরিশোধিত তেলের একটি প্রধান আমদানিকারক হয়ে ওঠে। এখন ওয়াশিংটনের বারবার সমালোচনার পর মস্কো ও বেইজিংয়ের আরও ঘনিষ্ঠ হয়েছে ভারত ।
চীনে অনুষ্ঠিত হচ্ছে সাংহাই কোঅপারেশন অর্গানাইজেশন (এসসিও) সম্মেলন। তাতে দেখা হয়েছে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ঘনিষ্ঠতা । নিজেদের মধ্যে একান্ত আলোচনা করেছেন এই দুই নেতা। একই গাড়িতে চড়েছেন অনেকক্ষণ। এরপর নিজেদের মধ্যকার সম্পর্ক নিয়ে নতুন মাত্রার কথা উল্লেখ করেছেন। এরপরই ভারতকে অতিরিক্ত ছাড়ে তেল বিক্রির নতুন এই তথ্য সামনে এল।
এই বিষয়ে হোয়াইট হাউসের উপদেষ্টা পিটার নাভারো বলেন, ‘ইউক্রেনে হামলা চালানোর আগে কিন্তু ভারত রাশিয়ার কাছ থেকে এত বেশি তেল কিনতো না। এরপর কী এমন হলো? রাশিয়ার কাছ থেকে এখন ছাড় পাচ্ছে ভারত। আর সেসব তেল কিনে ইউরোপ ও আফ্রিকায় বিক্রি করে ব্যবসা করছে। এই অর্থই রাশিয়ার যুদ্ধ পরিচালনার অন্যতম রসদ।’
এদিকে, দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে আমেরিকার প্রতিনিধিদের সঙ্গে ভারতের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের আলোচনা চলছে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী পীযুষ গোয়েল। আজ মঙ্গলবার দিল্লিতে এক অনুষ্ঠানে এই তথ্য জানান তিনি। তবে এই আলোচনা কতদূর এগিয়েছে এবং শুল্ক নিয়ে আমেরিকা এখন কী চাইছে–সে ব্যাপারে তিনি কিছু জানাননি। এমনকি প্রতিনিধিদের মধ্যে কারা রয়েছেন–সেটিও তিনি উল্লেখ করেননি।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে, ভারতের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্কারোপ করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এরই মধ্যেই এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়েছে। এ ছাড়া রাশিয়ার কাছ থেকে তেল কেনার কারণে ভারতের ওপর আরও ২৫ শতাংশ শুল্কারোপ করেন তিনি। মোট ৫০ শতাংশ শুল্ক নিয়ে এবার আলোচনা করছে দুই দেশ। গত আগস্ট থেকে আমেরিকার সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক টানাপোড়েন শুরু হয়েছে ভারতের। এই টানাপোড়েনের প্রধান কারণ ভারতের ওপর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অতি উচ্চমাত্রার রপ্তানি শুল্ক আরোপ।
রাশিয়ার তেল কিনে ভারত ইউক্রেন যুদ্ধ টিকিয়ে রাখতে সাহায্য করছে বলে অভিযোগ ট্রাম্পের। ভারতের পক্ষ থেকে এই কঠোর শুল্ক আরোপের পর প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। তবে শুল্ক কমানো নিয়ে ট্রাম্পের সাম্প্রতিক মন্তব্যে দিল্লি এখনো কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি। তবে এর আগে ট্রাম্প দাবি করেছিলেন, উচ্চ শুল্কের হুমকির মুখে অন্যান্য দেশ আমেরিকাকে বিশাল অর্থনৈতিক ছাড় দিতে রাজি হয়েছে।।