এইদিন ওয়েবডেস্ক,মস্কো,২১ সেপ্টেম্বর : রাশিয়ার দখলে চলে যাওয়া একের পর এলাকা পুনরুদ্ধার করার দাবি করছে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি । পাশাপাশি আমেরিকা ও পশ্চিমিদেশের বলে বলীয়ান জেলেনস্কি ক্রমাগত রাশিয়াকে হুমকিও দিয়ে আসছে । এতদিন চুপ থাকলেও এবার ফুঁসে উঠলেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন । দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর প্রথমবারের মতো সামরিক বাহিনীর সেনাসংখ্যা বাড়ানোর (সামরিক সংহতিকরণ) ঘোষণা করেছে মস্কো । আর বুধবার (২১ সেপ্টেম্বর) থেকেই এ প্রক্রিয়া শুরু হবে বলে জানিয়েছেন পুতিন । ফলে এর ফল সুদুর প্রসারী হতে পারে বলে মনে করছে আন্তর্জাতিক কুটনৈতিক বিশেষজ্ঞরা । তাঁদের আশঙ্কা আমেরিকাসহ পশ্চিমি দেশগুলি যেভাবে সামরিক সহায়তার নামে জেলেনস্কিকে উসকে দিচ্ছে তাতে যেকোনো সময় তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ বেধে যেতে পারে ।
বুধবার জাতির উদ্দেশে দেয়া এক টেলিভিশন ভাষণে পুতিন বলেন, ‘যদি আমাদের দেশের আঞ্চলিক অখণ্ডতা হুমকির মুখে পড়ে, আমরা আমাদের জনগণকে রক্ষা করার জন্য উপলব্ধ সব উপায় ব্যবহার করব।’ ইউরোপ রাশিয়াকে পরমাণু অস্ত্রের হুমকি দিচ্ছে বলে অভিযোগ তুলে পুতিন হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন,’পশ্চিমারা আমাদের দেশকে ধ্বংস করতে চায়। রাশিয়ার সঙ্গে ছায়া যুদ্ধ শুরু করেছে পশ্চিমা দেশগুলো। এটি অব্যাহত থাকলে মস্কো তার বিশাল অস্ত্রাগারের সব শক্তি দিয়ে জবাব দেবে। আর জবাব দেয়ার জন্য রাশিয়ার কাছে পর্যাপ্ত অস্ত্র রয়েছে ।’ পুতিনের ‘সামরিক সংহতিকরণ’ ঘোষণার পর রুশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই শোইগু জানিয়েছে, প্রথম ধাপে সামরিক অভিজ্ঞতা আছে এমন প্রায় ৩ লাখ মানুষকে সেনাবাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত করা হবে ।
উল্লেখ্য,এর আগে রাশিয়ার সামরিক বাহিনীতে ১ লাখ ৩৭ হাজার সদস্য বাড়ানোর এক নির্দেশনায় (ডিক্রিতে) সই করেন পুতিন। বর্তমানে রুশ সামরিক বাহিনীতে মোট সদস্য সংখ্যা ১০ লাখের বেশি। বেসামরিক কর্মী রয়েছে প্রায় ৯ লাখ। পুতিনের ওই নির্দেশনায় বলা হয়,রাশিয়ান ফেডারেশনের সশস্ত্র বাহিনীর সদস্য সংখ্যা ২০ লাখ ৩৯ হাজার জনে উন্নীত করার লক্ষ্য নেয়া হয়েছে, যার মধ্যে সামরিক সদস্য হবে ১১ লাখ ৫০ হাজার ৬২৮ ।
এদিকে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের এই ঘোষণার পরেই নড়েচড়ে বসেছে পশ্চিমি দেশগুলি । পুতিনের সেনা বাড়ানোর নির্দেশের প্রতিক্রিয়ায় ব্রিটিশ মন্ত্রী গিলিয়ান কিগান একটি টিভি চ্যানেলে বলেন, ‘পুতিনের মন্তব্যকে হালকাভাবে নেয়া উচিত নয়। স্পষ্টতই এটি এমন হুমকি, যা আমাদের খুব গুরুত্ব সহকারে নেয়া উচিত। কারণ, আমরা যেমন নিয়ন্ত্রণে নেই, আমি নিশ্চিত যে, তিনিও (পুতিন) নিয়ন্ত্রণে নেই ।’
প্রসঙ্গত,গত ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনের অভ্যন্তরে সেনা পাঠানোকে ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’ বলেই অভিহিত করে আসছে মস্কো । আনুষ্ঠানিকভাবে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণার কথা বলা হয়নি । এবার দেশের সেনা বাড়িয়ে পুতিন যুদ্ধের পথেই হাঁটতে চলেছেন বলে মনে করা হচ্ছে । আর ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রাশিয়া সর্বাত্মক যুদ্ধ শুরু করলে আমেরিকা ও তার সহযোগী দেশগুলিও যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়তে পারে বলে মনে করা হচ্ছে । যার পরিণতিতে হতে পারে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ ।।