এইদিন আন্তর্জাতিক ডেস্ক,০২ জুন : ইউক্রেন FPV ড্রোন ব্যবহার করে রাশিয়ার অন্তত ৪০ টি Tu-95 পারমাণবিক বোমারু বিমান ধ্বংস করে দিয়েছে । এখন ইউক্রেনের বিরুদ্ধে সর্বোত্তম সম্ভাব্য প্রতিশোধের দাবি তুলছে রাশিয়ানরা । ইতিমধ্যেই রাশিয়া ইস্কান্দার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভ সহ অন্যান্য অঞ্চলকে নিশানা করতে শুরু করেছে । তবে এটা যে নিছক ট্রেলার মাত্র সেটা স্পষ্ট করে দিয়েছে রাশিয়ান সেনাবাহিনী । রাশিয়ান সেনাবাহিনী আজ টুইট করেছে,”ইউক্রেন রাশিয়ার উপর আক্রমণ করেছে, আমাদের বোমারু ঘাঁটি ধ্বংস করেছে, কিন্তু মনে রাখবেন, এই আক্রমণের প্রতিশোধ বিপজ্জনক হবে। রাশিয়া যুদ্ধের জন্য সম্পূর্ণ প্রস্তুত।” এর আগে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন সতর্ক করেছিলেন, “আমরা শক্তিশালী, এবং ওরেশনিকের ব্যবহার আজ, আগামীকাল, অথবা যখনই প্রয়োজন হবে সম্ভব।”
তবে শুধু ইউক্রেন নয়,তাকে অস্ত্র ও ড্রোন সরবরাহকারী ন্যাটো দেশের ঘাঁটিগুলিও রাশিয়ার নিশানায় রয়েছে । রাশিয়া কৌশলগত ভারী পারমাণবিক বোমারু বিমান টুপোলেভ টিইউ-৯৫ সক্রিয় করে দিয়েছে । সমস্ত ন্যাটো দেশ এখন উচ্চ সতর্কতায় রয়েছে। রাশিয়া ড্রোন সরবরাহকারীদেরও ওই সমস্ত দেশের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করার সম্ভাবনা রয়েছে । রাশিয়ার স্ট্র্যাটেজিক মিসাইল ফোর্সের প্রধান জেনারেল সের্গেই কারাকায়েভ ঘোষণা করেছেন যে ‘ওরেশনিক ক্ষেপণাস্ত্র ইউরোপের যেকোনো জায়গায় আঘাত হানতে পারে৷’ যাতে উত্তেজনা আরও বাড়িয়ে তুলছে। ন্যাটো এবং ইউক্রেনের সাথে চলমান দ্বন্দ্বের মধ্যে তিনি পুতিনকে সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুতে দ্রুত প্রতিশোধ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন ।এদিকে রাশিয়ার ওরেশনিক কমান্ড পোস্ট সক্রিয় করা হয়েছে। স্যাটেলাইট ডেটায় অস্বাভাবিক পারমাণবিক সম্পর্কিত গতিবিধি দেখাচ্ছে । রাশিয়ার “ওরেশনিক” ক্ষেপনাস্ত্র হল একাধিক ওয়ারহেড সহ একটি উচ্চ-গতির মধ্যম-পাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র, রাশিয়ার সামরিক সক্ষমতাকে তুলে ধরে এবং ইউক্রেনের প্রতি পশ্চিমা সমর্থনের বিরুদ্ধে একটি প্রতিরোধক হিসেবে কাজ করে ।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ লাগানোর পিছনে আমেরিকা ও ন্যাটোর ষড়যন্ত্র
প্রসঙ্গত, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন যুদ্ধ চাননি । তার মূলত তিনটি শর্ত ছিল । এক.মিনস্ক চুক্তির প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকা । দুই,পূর্ব দিকে ন্যাটো সম্প্রসারণ যেন না হয় । এবং তিন,ইউক্রেনকে নিরপেক্ষ রাখা । কিন্তু আমেরিকাসহ ন্যাটো যা চেয়েছিল রাশিয়াকে যুদ্ধে ঠেলে দেওয়া । আর তাতে তারা সফলও । ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ মূলত একটি গৃহযুদ্ধ, যা ন্যাটো/মার্কিন/ইসরায়েল মিলে রাশিয়াকে দুর্বল করার জন্য উস্কে দিয়েছে।রাশিয়ার বোমারু ঘাঁটি ধ্বংস করার পরিকল্পনা ন্যাটো ও আমেরিকার । তারা ইউক্রেনকে মূলত ব্যবহারযোগ্য ঘুঁটি হিসেবে ব্যবহার করছে । রাশিয়ান বোমারু বিমান, রেললাইন, বিমানঘাঁটি এবং সেতুর উপর যে হামলা চালানো হয়েছিল তা কেবল ইউক্রেন একাই করেনি, বরং এগুলো ন্যাটো দ্বারা সমন্বিত, অর্থায়িত এবং অনুমোদিত ছিল। এখন এই যুদ্ধ আর রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই । বরঞ্চ এটি রাশিয়া বনাম ন্যাটোর যুদ্ধে পরিনত হয়েছে । যেকারণে অনেকে মনে করছে রাশিয়ার প্রতিশোধ মূলক হামলার পরেও তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের আনুষ্ঠানিক সূচনা হয়ে যেতে পারে ।।