এইদিন ওয়েবডেস্ক,কেতুগ্রাম(পূর্ব বর্ধমান),২৬ মার্চ : আগামী বিধানসভার ভোট নিয়ে বৈঠক চলছিল বিজেপির বুথ সভাপতির বাড়িতে । সেই সময় বিজেপি কর্মীদের উপর হামলার অভিযোগ উঠল শাসকদল তৃণমূলের লোকজনের বিরুদ্ধে । বৃহস্পতিবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব বর্ধমানের কেতুগ্রাম-১ ব্লকের রাজুর অঞ্চলের খাসপুর গ্রামে । তৃণমূল কর্মীদের ছোড়া ইঁটের আঘাতে ৪ বিজেপি কর্মী জখম হয় বলে অভিযোগ । তাঁদের কাঁদরা প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসার করানো হয় । একজনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে । রাতেই এনিয়ে ৮ তৃণমূল কর্মীর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছে বিজেপি । অন্যদিকে এক দলীয় কর্মীর পালুইয়ে আগুন লাগানোর পালটা অভিযোগ দায়ের করেছে তৃণমূল । এই ঘটনায় উভয় দলের মোট ৭ জনকে গ্রেফতার করেছে কেতুগ্রাম থানার পুলিশ । তার মধ্যে ৪ জন বিজেপি কর্মী বলে জানা গেছে ।
জানা গেছে, বৃহস্পতিবার রাতে খাসপুর গ্রামের বাসিন্দা বিজেপি বুথ সভাপতি সুশান্ত ঘোষের বাড়িতে একটি বৈঠক ডাকা হয়েছিল । বৈঠকে ১৫-২০ জন বিজেপি কর্মী উপস্থিত হয়েছিলেন । সেই সময় তৃণমূলের ৪০-৫০ জনের একটি দল চড়াও হয়ে সুশান্তবাবুর বাড়ি লক্ষ্য করে এলোপাথাড়ি ইঁটপাটকেল ছুড়তে শুরু করে বলে অভিযোগ ।
বিজেপির কেতুগ্রাম ৪৬ নম্বর মণ্ডল সভাপতি অটল বালা জানিয়েছেন, ইঁটের ঘায়ে তাঁদের ৪ জন কর্মী জখম হন । তার মধ্যে ৪৬ নম্বর মণ্ডলের সম্পাদক অধীর ভৌমিকের মাথা ফেটে যায় । তাঁর অভিযোগ, ‘বৃহস্পতিবার সকালে খাসপুর গ্রামে সভা করেছিলেন কেতুগ্রামের তৃণমূল বিধায়ক শেখ শাহনওয়াজের ভাই কাজল শেখ । তখন তিনি বেশ কিছু উসকানীমূলক কথা বলে যান । তার জেরেই ওইদিন রাতেই তৃণমূল নেতা গোপীনাথ ঘোষের নেতৃত্বে আমাদের কর্মীদের উপর হামলা হয়।’
যদিও বিজেপির এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন কেতুগ্রামের বিধায়ক শেখ শাহনাওয়াজ । তাঁর দাবি, ‘এটা ঘরোয়া বিবাদ । এর সঙ্গে রাজনীতির কোনও সম্পর্ক নেই ।’ পাশাপাশি তাঁর অভিযোগ, ‘বরঞ্চ বিজেপি কর্মীরাই আমাদের এক কর্মীর পালুইয়ে আগুন ধরিয়ে দেয় । তখন গ্রামের লোকজন রুখে দাঁড়ান ।’ যদিও তৃণমূল কর্মীর পালুইয়ে আগুন লাগানোর অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বিজেপির মণ্ডল সভাপতি অটল বালা । তাঁর দাবি, ‘তৃণমূলের লোকজনই নিজেদের পালুইয়ে আগুন ধরিয়ে দেয় । নিজেরাই সেই আগুন নেভায় । পরে আমাদের উপর মিথ্যা অভিযোগ আনে ।’
জানা গেছে,ঘটনার পর রাতেই উভয় দল পরস্পরের বিরুদ্ধে অভিযোগ ও পালটা অভিযোগ দায়ের করে । অভিযোগের ভিত্তিতে ৭ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ । এদিন আহত দলীয় কর্মী অধীর ভৌমিককে কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে দেখতে যান পূর্ব বর্ধমানে বিজেপির সাংগঠনিক কাটোয়া জেলার সভাপতি কৃষ্ণ ঘোষ । কৃষ্ণবাবু বলেন, ‘বাংলায় গনতন্ত্র বলে কিছু নেই । শাসনব্যাবস্থা একেবারে শেষ হয়ে গেছে । তাই বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলিকে বৈঠক, মিটিং, মিছিল করতে দেওয়া হচ্ছে না ।’ পাশাপাশি তিনি জানিয়েছেন,কেতুগ্রামের খাসপুরের ঘটনা নিয়ে তৃণমূলের বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনের কাছে অভিযোগ জানাবেন ।।