আকাশ ভরা একথালা হেমন্তের চাঁদ!
নাম দিয়েছি “আশ্চর্য প্রদীপ”–
হয়তো প্রযোজ্য নাম অন্যকিছু হওয়া উচিৎ ছিল!
কিন্তু নামে কি আসে যায়!
“কথা”-নামের মেয়েটিকে দেখছি গোঙাতে–
“শ্রুতি”-নামের বাচ্চাটা সদ্য শ্রবণযন্ত্র লাগিয়েছে,
আবার “নয়ন”-নামের ছেলেটি কখনও আলো দেখেনি।
ভবিতব্য! নাকি ভাগ্যের পরিহাস!
যাইহোক না, লড়াই যার যার–কিচ্ছু থেমে থাকেনি।
জোছনার সাথে আকাশের সঙ্গমে রাত যেমন নির্বাক–
তেমনি মোমের মত জোছনা গলে পড়ায় হইনি অবাক!
প্রতিফলক পৃষ্ঠগুলো থেকে হচ্ছে আলোর বিচ্ছুরণ।
মাটি কেবলমাত্র শুষে নিচ্ছে বুক পেতে —
শিশিরে ভিজে নিঃশব্দে নীরবে!
বিভোর হয়ে চেয়ে আছি আকাশের দিকে,
তারাগুলো আজ বড্ড অস্পষ্ট–
ভিজছি আষ্টেপৃষ্ঠে মরমে মরমে ভিতরে-বাইরে।
যে ছেলেটা ভুরি ভুরি ডিগ্রি অর্জন করে ভেবেছিল উচ্চপদস্থ কোনো চাকরি করবে কিংবা ব্যবসা!
সে এখন পাড়ার মোড়ে চায়ের ঠ্যালা চালায়–
মেয়েটার মাধ্যমিকে মেধাতালিকায় নাম ছিল,
আজ শপিং মলের সিকিউরিটির একটা চাকরি জুটেছে।
চাঁদ তুমি “আশ্চর্য প্রদীপ” হও–
ঐ ছেলেমেয়েগুলোর চোখের জল মুছিয়ে, মনে প্রেম জাগিয়ে স্নিগ্ধ আলো ঢেলে পথটা মসৃণ করে দাও।
ওদের লড়াইয়ে মশাল হয়ে মনের জোর জোগাও–
আর মরে মরে বাঁচা নয়, বাঁচার মত বাঁচতে পথ দেখাও।
যারা বিপথগামী, কুপথে চলে গেছে– তাদের সুষ্ঠু সমাজে ভিড়িয়ে জনজোয়ারে ফিরিয়ে আনো!
অন্ধকার ঘুচিয়ে আলোয় বানভাসি হোক গোটা যুবসমাজ।
ওগো ‘চাঁদ’! জীবন মধ্যাহ্নে দাঁড়িয়ে আজ নিজের জন্য চাওয়ার আমার কিছু নেই —
আমার চাওয়া-পাওয়ার খাতায় উত্তর মিলিয়ে ভাসিয়ে দিয়েছি সময়ের স্রোতে জীবন-সাগরের মোহনায়।
পূর্ণিমার চাঁদ যেন আর ঝলসানো রুটি নাহয়–
খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান আর একটু ভালোবাসায়
ওদের উঠোন ভরিয়ে দিও তুমি আমরণ–
বাকি দিনগুলো এই হোক তবে জীবনের একান্ত অভিপ্রায় ।।