এইদিন ওয়েবডেস্ক,ভাতার(পূর্ব বর্ধমান),০৭ জুলাই : রেললাইনের পাশে খেলা করার সময় ট্রেনের ধাক্কায় গুরুতর আহত হয় একই পরিবারের এক শিশুকন্যা ও এক কিশোর । কিশোরকে হাসপাতালে ভর্তি করা হলেও শিশুকন্যা মরে গেছে মনে করে কান্নার রোল ওঠে । পরিবারের লোকজন ও প্রতিবেশীরা শিশুকে ঘিরে যখন কান্নাকাটি করছিলেন,ঠিক সেই সময় চোখ মেলে চায় শিশুটি । জল পান করতে চায় । তারপর তড়িঘড়ি তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় । কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি । বুধবার সন্ধ্যায় পূর্ব বর্ধমান জেলার ভাতার থানার কুলচন্ডা গ্রামের এই ঘটনায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে এলাকায় । মৃত শিশুকন্যার নাম শ্রেয়া কোঁয়ার (৩) । আহত কিশোর শ্রেয়ার পিসতুতো দাদা । বর্তমানে সে বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন । তার অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে ।
জানা গেছে,কুলচন্ডা গ্রামের বাসিন্দা পেশায় কৃষক উজ্জ্বল কোঁয়ারের একমাত্র মেয়ে শ্রেয়া । আহত কিশোর তাঁর ভাগনা । অষ্টম শ্রেণীতে পড়াশোনা করে ওই কিশোর । কিশোরের মা অর্থাৎ উজ্জ্বলবাবুর দিদি রুম্পাদেবীর শ্বশুরবাড়ি শীতলগ্রামে । কুলচন্ডা গ্রামের গ্রাম্যপূজো উপলক্ষে বুধবার ছেলেকে নিয়ে তিনি বাপের বাড়িতে এসেছিলেন রুম্পাদেবী ।
জানা গেছে,বুধবার বিকেলে শ্রেয়া,তার পিসতুতো দাদা ও আরও একজনের সঙ্গে কুলচন্ডা গ্রামের পাশ দিয়ে চলে যাওয়া বর্ধমান-কাটোয়া রেললাইনের একটি কালভার্টে বসে খেলা করছিল । তারা যখন কালভার্ট থেকে উঠে নিজেদের মধ্যে খুনসুটি করছিল ঠিক সেই সময় এসে যায় ডাউন ৬ টা ৩০ শের বর্ধমান-কাটোয়া লোকাল ট্রেনটি । তারা সরে যাওয়ার আগেই শ্রেয়া ও রুম্পাদেবীর ছেলের মাথায় গুরুতর আঘাত লাগে । দু’জনেই ঘটনাস্থলে লুটিয়ে পড়ে । ছোট্ট শ্রেয়া অচৈতন্য হয়ে গেলেও বমি করতে করতে থাকে তার পিসতুতো দাদা । খবর পেয়ে গ্রামবাসীরা ঘটনাস্থলে ছুটে এসে ওই কিশোরকে উদ্ধার করে তড়িঘড়ি হাসপাতালে ভর্তি করে । কিন্তু শ্রেয়া মরে গেছে মনে করে তাকে ঘিরে কান্নাকাটি শুরু করে দেয় পরিবার ও পরিজন ।
স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে,ঘটনার ঘন্টা খানেক পর শ্রেয়াকে ঘিরে ধরে যখন সকলে কান্নাকাটি করছিলেন সেই সময় হঠাৎ চোখ মেলে দেখে শিশুটি । জল খেতে যায় । তারপর তাকে উদ্ধার করে তড়িঘড়ি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় শিশুটিকে । কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি । মর্মান্তিক এই ঘটনায় শোকস্তব্ধ পরিবার পরিজন ।।