এইদিন ওয়েবডেস্ক,কলকাতা,০২ ফেব্রুয়ারী : বেছে বেছে বিজেপির নেতাকর্মী ও হিন্দুদের নাম ভোটার তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার অভিযোগ তুললেন বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী । আজ শুক্রবার ডায়মন্ড হারবার এলাকার দলীয় নেতাদের নিয়ে কলকাতায় কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনের দপ্তরে তাদের ভোটার লিস্ট থেকে নাম দেওয়ার অভিযোগ জানান শুভেন্দু । পরে নির্বাচন কমিশনের দপ্তরে সাংবাদিক মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, ‘কেউ ৩০ বছরের ,কেউ ২৫ বছরের, কেউ ২০ বছরের ভোটার, এমন সাতজনকে নিয়ে আজ নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে দেখা করেছি । তাদের সকলেরই ভোটার তালিকা থেকে নাম বাদ দেওয়া হয়েছে । তার মধ্যে ডায়মন্ড হারবারের বিজেপির সহ-সভাপতি নাম রয়েছে । এছাড়া মন্ডল সভাপতি, কিষান মোর্চার সহ-সভাপতি এবং বিজেপির শক্তি কেন্দ্রের প্রমুখরাও রয়েছেন । ১৯৯৫ সাল থেকে ভোট দেওয়া লোকের ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে, তাদের ফর্ম সেভেন জমা করা হয়নি, নোটিশ করা হয়নি । এটা কোন সংবিধানে লেখা আছে?’
শুভেন্দুর দাবি,’গত২২ শে জানুয়ারি প্রকাশিত হওয়া ভোটার লিস্টে শুধু ডায়মন্ডহারবার, ফলতা,সাতগেছিয়া নয় গোটা রাজ্যের মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে । পঞ্চায়েতে তো কাউকে ভোট দিতে দেওয়া হয়নি । পশ্চিমবাংলায় হিন্দুদের ভোট দেওয়ার অধিকার নেই । ভোটার তালিকায় রোহিঙ্গাদের নাম তোলার সুযোগ রয়েছে, এটাই চোর মমতার রাজত্বে তার প্রশাসন নতুন করে বাংলার মানুষের সামনে আনলো ।’
শুভেন্দু অধিকারী অভিযোগ, ‘এটা হিমশৈলের একটা চুড়া মাত্র । এই ধরনের ন্যাক্কারজনক কাজ করছে চোর বিডিওরা, যারা পঞ্চায়েতে চুরি করেছে, অধিকাংশ বিডিওই এই ধরনের নোংরামির সঙ্গে যুক্ত । দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্যি যে ডায়মন্ড হারবার আলিপুর সহ গোটা রাজ্যের এআরও যারা আছেন তারা অনেকেই এই অপকর্মে সামিল হয়েছেন । তাদের মৌখিক নির্দেশ দিয়েছে জেলাশাসকরা । পূর্ণেন্দু মাঝির মত জেলা শাসক, সুমিত গুপ্তর মতো জেলাশাসক, যারা সারাক্ষণ পিসি ভাইপোর পদহেলন এবং চটি চাটার কাজ করে । এবারের ভোটার লিস্টে বিডিওদের নেতৃত্বে চুক্তিভিত্তিক কর্মীদের একাংশ,ডাটা এন্ট্রি অপারেটর এবং আইপ্যাকের লোকদের জোগসাজোসে সংগঠিতভাবে চুরি করা হয়েছে। এটা ভূভারতে কোথাও কখনো হয়নি ।’ রাজ্য পুলিশের ডিজিপি, বীরভূমের জেলা শাসক পূর্ণেন্দু মাঝি, মুর্শিদাবাদের ডিআইজিকে নিয়োগ নিয়েও প্রশ্ন তোলেন শুভেন্দু অধিকারী । রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে পুলিশকে অপব্যবহার ও নির্বাচন কমিশনের আইনকে বুড়ো আঙ্গুল দেখানোর অভিযোগ তুলেছেন তিনি ।
তাঁর আরও অভিযোগ,’জয়েন্ট সিইও থেকে শুরু করে নিচে তলা পর্যন্ত, সৌমেন ব্যানার্জি আর শান্তনু ব্যানার্জি মমতার দুটো দলদাস,নবান্নের ১৪ তলায় বসে থাকে,তারা ভোটার কার্ড সংশোধনের কাজে তৃণমূল কর্মচারী ফেডারেশনের লোকদের বেছে বেছে পাঠিয়েছে । অ্যাডিশনাল সিইও থেকে ইউডি ক্লার্ক পর্যন্ত, ফোর গ্রেডের লোকদের বিরুদ্ধে আমাদের কোন অভিযোগ নেই৷ সেই কারণে আমরা আবেদন জানিয়েছি তৃণমূল কর্মচারী ফেডারেশনের কোন সদস্যকে এই অফিসে রাখা যাবে না। যদি আগে না সরান,ভোট ঘোষণা পর কোন পদ্ধতিতে তাদের সরাতে হয় তা বিজেপি জানে । আমরা সর্বোচ্চ সীমা আজ পর্যন্ত যাব ।’
শুভেন্দু অধিকারী সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘ভোট গননার দিন টক শো করবেন নাকি আপনারা? বিপুল জয় তৃণমূলের । এটা নিয়ে কটা টকশো হয় আমি দেখতে চাই । যারা রাম মন্দির উদ্বোধনের সময় ধর্মনিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল তারা কালকে কি নিউজ করে দেখতে চাই ।’ শুভেন্দু অধিকারী রাজ্য সরকারকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘বিজেপি এর মুখোশ খোলার কাজ করবে । পাশাপাশি মানুষকেও এ বিষয়ে এগিয়ে এসে প্রতিবাদ করার আহ্বান জানান তিনি ।
কলকাতায় সাংবাদিক সম্মেলন শেষে হুগলির চঁচুড়ায় রবীন্দ্রভবনে বন্দেভারত সংস্কৃতি পরিষদের উদ্যোগে আয়োজিত সান্ধ্যকালীন অনুষ্ঠানে ভারত কেশরী ডঃ শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জীর জীবনী আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন শুভেন্দু অধিকারী ।।