এইদিন ওয়েবডেস্ক,ঢাকা,০৪ সেপ্টেম্বর : মিয়ানমার থেকে প্রাণ বাঁচিয়ে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের জন্য দরজা খুলে দিয়েছিল বাংলাদেশ । বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তখন জানিয়েছিলেন, বাংলাদেশীরা দু’বেলা দু’মুঠো খেতে পেলে উদ্বাস্তু রোহিঙ্গারাও খেতে পাবে । কিন্তু এখন সেই রোহিঙ্গারাই বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশের কাছে । রোহিঙ্গাদের বিভিন্ন অপরাধমূলক কাজকর্মে জড়িয়ে পড়া এবং প্রতি বছরে এক লাখের উপর বংশবৃদ্ধির কারনে চাপ পড়ছে বাংলাদেশের প্রশাসন ও অর্থনীতির উপর । বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোহিঙ্গা উদ্বাস্তুদের “একটি বড় বোঝা” হিসাবে আখ্যায়িত করে তাদের স্বদেশে ফেরত পাঠানোর জন্য ভারতের কাছে সহযোগিতা চেয়েছেন ।
এদিকে পরপর দু’দিন মিয়ানমার থেকে মর্টার শেল এসে পড়ায় ও গোলাগুলি চলায় বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম-তুমব্রু সীমান্তে শূন্যরেখায় বসবাসকারী হাজার চারেক রোহিঙ্গাও বাংলাদেশের ভিতরে ঢুকে পড়ার তোড়জোড় শুরু করে দিয়েছে বলে খবর । কিন্তু বাড়তি বোঝা পড়ার আশঙ্কায় বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রী ডঃ একে আব্দুল মোমেন সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, আর কোনো রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশে ঢুকতে দেওয়া হবে না । শনিবার তিনি সিলেটে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বলেন, ‘মিয়ানমারে বিভিন্ন সশস্ত্র গোষ্ঠী সংঘাতে জড়িয়েছে। এই পরিস্থিতিতে সেদেশের নাগরিকরা ভয়ে বাংলাদেশের দিকে চলে আসছে । কিন্তু যত উস্কানিই দেওয়া হোক না কেন আর কোনো রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশে ঢুকতে দেওয়া হবে না ।’
রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশকারী প্রসঙ্গে এএনআই-এর সাথে কথোপকথনের সময় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্বীকার করেছেন যে বাংলাদেশে লক্ষাধিক রোহিঙ্গার উপস্থিতি জন্য তাঁর সরকারকে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হচ্ছে । তিনি বলেন,’আপনি জানেন এটা আমাদের জন্য একটি বড় বোঝা । আমাদের দেশে ১১ লাখ রোহিঙ্গা রয়েছে। আমরা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এবং আমাদের প্রতিবেশী দেশগুলির সাথেও পরামর্শ করছি, তাদেরও কিছু পদক্ষেপ নেওয়া উচিত যাতে তারা দেশে ফিরে যেতে পারে।’ তিনি বলেন, মানবিক কারণে আমরা তাদের আশ্রয় দিয়েছি এবং সবকিছু নাগরিক সুবিধা দিচ্ছি । এই কোভিডের সময় আমরা সব রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে টিকা দিয়েছি । কিন্তু কতদিন তারা এখানে থাকবে ? এদিকে কিছু লোক মাদক ব্যবসা, নারী পাচারে লিপ্ত হচ্ছে এবং দিন দিন তা বাড়ছে। তাই তারা যত তাড়াতাড়ি দেশে ফিরবে, তা আমাদের দেশের জন্য এবং মিয়ানমারের জন্যও মঙ্গলজনক ।’ রোহিঙ্গাদের স্বদেশে ফেরানোর জন্য ভারত প্রধান ভূমিকা পালন করতে পারে বলে তিনি জানান । প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সোমবার থেকে চারদিনের জন্য ভারত সফর শুরু করতে যাচ্ছেন । ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে তাঁর রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়েও আলোচনা হতে পারে বলে খবর ।।