এইদিন ওয়েবডেস্ক,কলকাতা,১৩ আগস্ট : আর জি কর হাসপাতালে তরুনী চিকিৎসককে গনধর্ষণ-হত্যা মামলায় রাজ্য সরকার,কলকাতা পুলিশ,অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের ভূমিকা নিয়ে একাধিক প্রশ্ন তুললেন মাননীয় কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানমের নেতৃত্বে ডিভিশন বেঞ্চ । তদন্ত আরও বিলম্ব হলে আদালত খোদ ‘প্রমাণ নষ্ট’ হওয়া নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন এবং অবিলম্বে এই গনধর্ষণ হত্যাকাণ্ডের মামলার ভার সিবিআইয়ের হাতে তুলে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন । আদালতের পর্যবেক্ষণেই তদন্ত হবে বলে জানা গেছে ।
প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম সরকারি আইনজীবীর যুক্তি প্রত্যাখ্যান করে মমতা ব্যানার্জির সরকারকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন,’সামথিং ইজ মিসিং।’ এমন নয় যে দেহ রাস্তায় পড়ে ছিল । সুপার, অধ্যক্ষ কেন অভিযোগ করলেন না ? সেটা না করে অধ্যক্ষকে পুরস্কৃত করছেন ? একজন ডাক্তারের মৃত্যু, তার পরেও সুপার, প্রিন্সিপাল চুপ ! এটা সন্দেহজনক।কেন একজন অধ্যক্ষ পদত্যাগ করল সেটা না খুঁজে রাজ্য তাকে সমান গুরুত্বপূর্ণ পদে নিযুক্ত করল । এত তাড়া কিসের ? সেটা বোঝা গেল না ! সুপার বা অধ্যক্ষ অভিযোগ করেননি কেন ? আর কিছু বলতে হবে না। ঝুলি থেকে বেড়াল বেরিয়ে এসেছে বলে মন্তব্য করেছেন আদালত ।’
আরজিকর ঘটনায় যে প্রশ্ন এতদিন আন্দোলনকারী ও সাধারণ মানুষ তুলছিল, আজ সেই প্রশ্ন তুলে দিল কলকাতা হাইকোর্ট । ৫ দিন পরেও তদন্তে উল্লেখযোগ্য কোন অগ্রগতি নেই বলে মন্তব্য করল হাইকোর্ট । আদালতের উপস্থিত সিবিআই আধিকারিককে অবিলম্বে কেস ডায়রি হস্তান্তরের নির্দেশ দেন প্রধান বিচারপতি । আজ মঙ্গলবার জনস্বার্থ মামলাকারীর আইনজীবীরা বারবার সওয়াল করেন যে যত সময় নষ্ট হবে তত প্রমাণ লোপাটের আশঙ্কা থাকবে। সেই বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে ডিভিশন বেঞ্চ সিবিআই-কে এই মামলার সব নথি হস্তান্তরের নির্দেশ দিয়েছে । বিচারপতি উল্লেখ করেছেন,’রাইট নাও’। প্রধান বিচারপতি সিবিআই আধিকারিকদের উদ্দেশ্যে বলেন,’এক্ষুনি কেস ডায়রি নিয়ে নিন। এক্ষুনি তদন্ত শুরু করুন ।’ বুধবার সকাল দশটার মধ্যে তদন্ত প্রক্রিয়া শুরু হবে। মামলার নথিপত্র আজই গোয়েন্দা আধিকারিকরা সংগ্রহ করবেন ।
আদালতের কাছে কেস ডায়েরিও জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি । এদিন হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয় আরজিকরের নির্যাতিতার পরিবারও । তাঁরা পুলিশ ও অধ্যক্ষের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন । আদালতের তত্ত্বাবধানে পরিবারও তদন্ত চায় । পাশাপাশি আজ প্রধান বিচারপতি নির্দেশ দেন, সন্দীপ ঘোষ ছুটির আবেদন করলে অবিলম্বে তা গ্রহণ করতে হবে এবং পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত তিনি ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ হিসাবে দায়িত্ব গ্রহণ করতে পারবেন না । সেই সাথে আন্দোলনরত চিকিৎসকদের উদ্দেশ্যে মাননীয় প্রধান বিচারপতি বার্তা দিয়েছে, ‘আমরা চিকিৎসকদের মনের অবস্থা অনুভব করতে পারছি। তারপরও যারা সরকারি হাসপাতালে আসছেন তাদের বিষয় বিবেচনা করবেন । চিকিৎসা শুরু করুন ।।