প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,১৩ জুলাই : পঞ্চায়েত ভোটের দিন গ্রামে বোমাবাজি ও গুলি চালানোর মত ঘটনা ঘটিয়েও দুই অভিযুক্ত বুক ফুলিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে ।পুলিশ তাদের কাউকেই গ্রেপ্তার করেনি ।এরই প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার বেলায় বাদশাহী রোড রে বিক্ষোভে ফেটে পড়লেন পূর্ব বর্ধমানের রায়নার থানার পলাশন গ্রাম পঞ্চায়েতের মাঠনুরপুর গ্রামের সাধারণ বাসিন্দারা।এই অবরোধ বিক্ষোভের জেরে বাদশাহুী রোড দিয়ে যানবাহন চলাচল পুরোপুরি থমকে যায়।খবর পেয়ে কেন্দ্রীয় বাহিনীকে সঙ্গে
নিয়ে রায়না থানার পুলিশ কর্তারা অবরোধ স্থলে পৌছায়।পুলিশ কর্তারা দুই অভিযুক্ত শামসুদ্দিন মন্ডল ও লিয়াকত মন্ডল কে গ্রেপ্তার করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের আশ্বাস দিলে ঘন্টা খানেক বাদ অবরোধ তুলেনেন মাঠনুরপুর গ্রামের বাসিন্দারা ।
পথ অবরোধ বিক্ষোভে মাঠনুরপুর গ্রামের পুরুষদের পাশাপাশি বহু মহিলাও অংশ নিয়েছিলেন । বিক্ষোভকারীদের হাতে ছিল প্ল্যকার্ড। তাতে লেখা ছিল ,“গ্রামে বোমাবাজি ও গুলি চালানো হল কেন শামসুদ্দিন মন্ডল এবং লিয়াকত মন্ডল জবাব দাও- মানুষের জীবন নিয়ে ছেলে খেলা বন্ধ করতে হবে“। বাসিন্দারা বলেন, কোন কালে আমাদের মাঠনুরপুর গ্রামে বোমাবাজি কিংবা গুলি চালানোর মত ঘটনা ঘটেনি। কিন্তু গত ৮ জুলাই পঞ্চায়েত ভোটের দিন আমাদের গ্রামে সেটাই করছে স্থানীয় শামসুদ্দিন মন্ডল এবং লিয়াকত মন্ডল। এই দু’জন বাইরে থেকে দুস্কৃতি বাহিনী এনে গ্রামে ঢুকিয়ে যথেচ্ছ ভাবে বোমাবাজি করা ও গুলি চালানোর মত ঘটনা ঘটিয়েছে। ভাগ্যের জোরে গ্রামের সাধারণ মানুষজন মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে। অথচ এমন ঘটনার
পরেও পুলিশ শামসুদ্দিন মন্ডল এবং লিয়াকত মন্ডল কে গ্রেপ্তার করে নি । তারা বহাল তবিয়তে বুক ফুলিয়ে এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছে।এরই প্রতিবাদে গোটা গ্রামের মানুষ এদিন শামসুদ্দিন ও লিয়াকতের গ্রেপ্তারের দাবিতে পথ অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখাতে বাধ্য হয়েছে। গ্রাম বাসীরা পুলিশ কর্তাদের স্পষ্ট জানিয়ে দেন, অবিলম্বে শামসুদ্দিন মঢ্ডল ও লিয়াকত মণ্ডলকে গ্রেপ্তার করা না হলে তাঁরা আরো বৃত্তর আন্দোলনে নামবেন।
পঞ্চায়েত ভোট ঘোষণার পর থেকেই রায়নার
পলাশন গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় রাজনৈতিক পালের হাওয়া উল্টোদিকে বইতে শুরু করে । ওয়াকিবহাল মহলের মতে,সম্ভবত সেটাই বুঝে গিয়েছিল শামসুদ্দিন ও লিয়াকত । তাই ভোটের দিন তারই প্রভাব পড়ে পলাশন গ্রাম পঞ্চায়েতের মাঠনুরপুর গ্রামে ।আর হাওয়া যে সত্যি স্রোতের বিপরিতে বইছিল ভোটের ফল ঘোষনা হওয়ার পর আরো স্পষ্ট হয়েযায় । পলাশন গ্রাম পঞ্চায়েতে সংখ্যাগরিষ্ঠতা সিপিএম পেয়ে যায় ।
রায়না নিবাসী সিপিএমের জেলা সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য মীর্জা আকতা আলী বলেন,’মাঠনুরপুর গ্রামের মানুষ অনেকদিন ধরে মুক্তির বাতাস খুঁজছিল । এবার মুক্তির বাতাস পেয়েছেন বলেই বোজাবাজি ও গুলি চালানোর ঘটনার প্রতিবাদে মাঠনুরপুর গ্রামের মানুষ গর্জে উঠেছেন ।’ আর জেলা বিজেপি নেতা মৃত্যুঞ্জয় চন্দ্র বলেন,’নৈরাজ্য ও অপশাসনের বিরূদ্ধে গ্রাম বাংলার সাধারণ মানুষ ভয় মুক্ত হয়ে এবার যে এককাট্টা হতে শুরে করে দিয়েছে তার প্রমান মাঠনুরপুর গ্রামের বাসিন্দাদের এদিনের আন্দোলন ।’
যদিও বিরোধীদের এইসব বক্তব্য নস্যাৎ করেদিয়ে রায়না ১ ব্লক তৃণমূলের সভাপতি বামদেব মণ্ডল বলেন,’একটা পঞ্চায়েতে জয় পেয়েই সিপিএমের নেতারা পুরানো কায়দায় রায়না অশান্ত করার জন্য মানুষজনকে খেপানো শুরু করে দিয়েছে। তবে এইসব করো ওরা কিছু করতে পারবে না ।
সিপিএমের এই ঘৃণ্য রাজনীতির জবাব রায়নার মানুষ আগেও দিয়েছে ,এবারের পঞ্চায়েত ভোটো দিয়েছে ,আগামী দিনেও দিয়ে দেবে ।’।