এইদিন ওয়েবডেস্ক,কায়রো,২৮ ডিসেম্বর : মিশরীয় ফারাও আমেনহোটেপ প্রথম(Amenhotep I)-এর মমিকৃত দেহাবশেষ ডিজিটালভাবে ‘খোলা’ করা হল । মিশরের ১৮-তম রাজবংশের দ্বিতীয় শাসক ছিলেন
আমেনহোটেপ প্রথম । তিনি ১৫০৬-১৫০৪ খ্রিস্টপূর্বাব্দের কাছাকাছি সময়ে মারা গিয়েছিলেন বলে মনে করা হয় । তারপর তাঁকে মমিকৃত করে সংরক্ষণ করে রাখা হয় । ১৮৮১ সালে দক্ষিণ মিশরের দেইর এল-বাহারিতে রাজকীয় মমিগুলির সাথে তাঁকে আবিষ্কৃত করা হয়েছিল ।
প্রায় সাড়ে তিন হাজার বছরের এই মমির রহস্য উদঘাটন করতে ডিজিটাল কৌশল ব্যবহার করেছেন মিশরীয় বিজ্ঞানীরা । এছাড়া মমির বিষয়বস্তু অধ্যয়নের জন্য তাঁরা ত্রি-মাত্রিক কম্পিউটারাইজড টমোগ্রাফি (CT) স্ক্যানিং ব্যবহার করেছেন ।
কায়রো বিশ্ববিদ্যালয়ের রেডিওলজির অধ্যাপক ও মিশরীয় মমি প্রকল্পের রেডিওলজিস্ট ডঃ সাহার সেলিম বলেছেন, ‘অধ্যয়নে জানা গেছে আমেনহোটেপ প্রথম মারা যাওয়ার সময় বয়স ছিল প্রায় ৩৫ বছর । তিনি প্রায় ১৬৯ সেমি বা ৫ ফুট ৭ ইঞ্চি লম্বা ছিলেন । এছাড়া সুউন্নত এবং ভাল দাঁত ছিল তাঁর । মোড়কের মধ্যে ৩০ টি তাবিজ এবং সোনার পুঁতিসহ একটি সোনার তৈরি অনন্য কোমর বন্ধন ছিল ।’
তিনি বলেন, ”আমেনহোটেপ প্রথম শারীরিকভাবে তাঁর বাবার সাথে অনেক মিল আছে বলে মনে হচ্ছে । তাঁর সরু চিবুক, ছোট সরু নাক, কোঁকড়ানো চুল এবং হালকাভাবে উপরের দিকের দাঁত ছিল । তবে আমরা মৃত্যুর কারণ জানতে পারিনি । কারন শরীরে রোগের কারণে কোনো ক্ষত বা বিকৃতি খুঁজে পাইনি আমরা । তাঁকে প্রথম কবর দেওয়ার পরে সম্ভবত ডাকাতরা অসংখ্য বার দেহ কাটাছেঁড়া করে বিকৃত করেছিল ।’ পাশাপাশি ডঃ সাহার সেলিম বলেন,’প্রথম মমি করার সময় তাঁর অন্ত্রগুলো অপসারণ করা হয়েছিল । কিন্তু তার মস্তিষ্ক বা হৃৎপিন্ড অপসারন করা হয়নি ।’
প্রসঙ্গত,১৯ ও ২০ শতকে আবিষ্কৃত অন্য সব রাজকীয় মমি থেকে ভিন্ন আমেনহোটেপ আই-এর মমি । তবে আধুনিক মিশরবিদরা কখনই মমিটি মুক্ত করার সাহস করেননি ৷ তবে এটি অভিশাপের ভয়ে নয়, বরঞ্চ ফুলের মালা এবং কাঠের মুখোশ দিয়ে সজ্জিত, মমিটি এতটাই ভঙ্গুর ছিল যে, তা খুললেই মমিটি বিকৃত হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা ছিল ।।