জ্যোতি প্রকাশ মুখার্জ্জী,গুসকরা(পূর্ব বর্ধমান),২১ জানুয়ারী : আমাদের অজ্ঞতার জন্য প্লাস্টিক জাতীয় জিনিসের অতিরিক্ত ব্যবহার আমাদের জীবন তথা সমাজকে চরম সমস্যায় ফেলে দিচ্ছে। জল নিকাশী ড্রেনের মুখ আটকে নিকাশী ব্যবস্থাকে দুর্বল করে দিচ্ছে। সঙ্গে বিভিন্ন ভাবে পরিবেশ দূষণ তো আছেই। নিয়ন্ত্রণ তো দূরের কথা, দিনের পর দিন পরিস্থিতি আয়ত্বের বাইরে চলে যাচ্ছে। শেষপর্যন্ত, দেরিতে হলেও, সরকারের পক্ষ থেকে প্লাস্টিক ব্যবহার সংক্রান্ত একগুচ্ছ নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে এবং সেগুলি প্রয়োগ করার ক্ষেত্রে স্হানীয় প্রশাসন যথেষ্ট সক্রিয় ভূমিকা নিয়েছে। নিয়মিত তারা বাজার পরিদর্শন শুরু করেছে এবং এর মাধ্যমে ক্রেতা ও বিক্রেতা উভয়কেই সচেতন করার চেষ্টা করছে।
এদিকে রটন্তী পুজোকে কেন্দ্র করে পূর্ব বর্ধমানের গুসকরায় শুরু হয়েছে মেলা। পূণ্যার্থীরা দেবী মায়ের পুজো দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মেলাতেও যাচ্ছে। অতীতে দ্যাখা গ্যাছে প্রতিদিন মেলাতে সাধারণ মানুষের ভিড়ও হয় প্রচুর। করোনা জনিত নিষেধাজ্ঞার কারণে গত দু’বছর সেভাবে ভিড় না হলেও এবছর সেই নিষেধাজ্ঞা না থাকার জন্য ভিড়ের সম্ভাবনা আছে। ফলে টুকিটাকি জিনিস কেনার জন্য প্লাস্টিকের প্যাকেট ব্যবহারের সম্ভাবনাকে উড়িয়ে দেওয়া যায়না। অতীতে মেলার শেষে যত্রতত্র ছড়িয়ে থাকা প্লাস্টিকের প্যাকেট সেই ইঙ্গিতই দেয়। নিজেদের দীর্ঘদিনের প্রচেষ্টাকে ব্যর্থ হতে না দেওয়ার জন্য প্রথম দিনেই যৌথভাবে মাঠে নেমে পড়েছে রাজ্য পৌরনিগম উন্নয়ন সংস্থার (সুডা) স্থানীয় সদস্যরা ও গুসকরা পুরসভার নির্মল সাথীর সদস্যরা।
সবাই যখন মায়ের পুজো দিতে বা মেলায় আনন্দ করতে ব্যস্ত তখন দেখা গেলো ‘সুডা’-র সঙ্গে যুক্ত মাইক্রো প্ল্যানিং এজেন্সি দিগম্বরপুর অঙ্গীকারের সিনিয়র প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর সৌম্যজিৎ লাহিড়ী ও প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর অভিষেক দলুইয়ের নেতৃত্বে ‘নির্মল সাথীর’ সদস্যা করবী, শুক্লা, মন্দিরা, নমিতা, আমিনা, শর্বাণী, তনুশ্রী, প্রিয়াঙ্কা, মণি ও গৌরীরা ঘুরে বেড়াচ্ছে মেলার দোকানে দোকানে। হাতে তাদের লিফলেট। ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়কেই তারা নির্দিষ্ট মানের নীচে প্লাস্টিকের প্যাকেট ব্যবহারের কুফল সম্পর্কে বুঝিয়ে চলেছে এবং এইগুলির ব্যবহার থেকে বিরত থাকার জন্য অনুরোধ করে চলেছে। নিজের প্রাথমিক দায়িত্ব পালন করার পর তাদের সঙ্গে যোগ দেন পুরসভার চেয়ারম্যান কুশল মুখার্জ্জী। স্বাভাবিক ভাবেই সদস্যরা বাড়তি উৎসাহ পায়।
অভিষেক বাবু বললেন,’মেলায় প্লাস্টিকের ব্যবহার বিষয়ে সাধারণ মানুষকে সচেতন করার জন্য আমাদের সদস্যরা যেমন সক্রিয় আছে তেমনি সক্রিয় আছে পুরসভার নির্মল সাথীর সদস্যরা। আশা করা যায় সবার মিলিত প্রচেষ্টার ফলে মানুষ প্লাস্টিক ব্যবহারের ক্ষেত্রে সচেতন হবে এবং আগামী দিনে আমাদের সমাজ তথা মেলা প্রাঙ্গন প্লাস্টিকের ব্যবহার জনিত সমস্যা থেকে রক্ষা পাবে।’
পুরসভার চেয়ারম্যান বললেন,’সমাজকে প্লাস্টিক মুক্ত করার দায়িত্ব সবার। তাই মেলা কমিটির সভাপতি হিসাবে নিজের দায়িত্ব সামলে আমি ওদের সঙ্গে সামিল হয়েছি। এরফলে ওরা যেমন আমাকে পেয়ে উৎসাহিত হয়েছে তেমনি সাধারণ মানুষ প্লাস্টিক ব্যবহারের ক্ষেত্রে কিছুটা কুণ্ঠাবোধ করেছে। তিনি আরও বললেন – আগামী ক’দিন আমাদের কাউন্সিলাররা মেলা প্রাঙ্গনে যথেষ্ট সতর্ক থাকবে।’।