দিব্যেন্দু রায়,কাটোয়া(পূর্ব বর্ধমান),২২ জুন : হাত কেটে নেওয়ার ঘটনায় অভিযুক্ত স্বামীসহ ঘটনায় যুক্ত সকলের যাবৎজীবন কারাদণ্ড চান পূর্ব বর্ধমান জেলার কেতুগ্রামের কোজলসা গ্রামের গৃহবধু রেণু খাতুন । বুধবার গোপন জবানবন্দি দিতে কাটোয়া মহকুমা আদালতে এসেছিলেন রেণু । সেই সময় সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, ‘যারা পরিকল্পনা করে আমার জীবন নষ্ট করে দিতে চেয়েছিল তাদের সকলের যেন যাবৎজীবন কারাদণ্ড হয়,এটাই আমি চাই ।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমি চাকরিতে যোগ দিয়েছি । আমার কর্মজীবনের পাশাপাশি এবার থেকে আইনি লড়াইও শুরু হল ।’ অর্থাৎ হাত কেটে নেওয়ার ঘটনায় কাউকেই রেয়াত করতে চাননা বলে এদিন সাফ জানিয়ে দিলেন রেণু খাতুন । সেই সঙ্গে স্বামী সরিফুল শেখ তাঁর চরিত্র নিয়ে যে প্রশ্ন তুলেছিল তা খারিজ করে দিয়ে রেণু বলেন,’নিজের অপরাধ লঘু করার উদ্দেশ্যেই এই ধরনের মিথ্যা অভিযোগ তুলছে ।’
রেণু খাতুনকে সরকারি নার্সের চাকরি করা থেকে আটকাতে তার হাত কেটে নেওয়ার পরিকল্পনা করেছিল স্বামী সরিফুল শেখ । পরিকল্পনা মোতাবেক গত ৪ জুন রাতে ভাড়াটে দুস্কৃতিদের সঙ্গে নিয়ে শ্বশুর বাড়িতে ঘুমন্ত অবস্থায় থাকা রেণুর ডান হাতের কব্জি থেকে বাকি অংশ কাটারি দিয়ে কুপিয়ে কুপিয়ে বিচ্ছিন্ন করে দেয় সরিফুল । তারপর থেকে দুর্গাপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন রেণু । পরের দিন অর্থাৎ ৫ জুন রেণুর বাবা আজিজুল হক এনিয়ে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন । তার ভিত্তিতে একে একে সরিফুল,রেণুর দেবর চাঁদ মহম্মদ এবং দুই ভাড়াটে দুস্কৃতি আসরফ আলি শেখ ও হাবিবুর রহমানকে গ্রেফতার করে পুলিশ ।
এদিকে হাত কাটা গেলেও চাকরি পেতে বাধা হয়নি রেণুর । মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে মঙ্গলবার দুপুরে তাঁকে ’স্টাফ নার্স গ্রেড ২’ পদে নিয়োগপত্র দেওয়া হয় । তখন থেকেই মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে তাঁকে কৃতজ্ঞতা জানানোর জন্য ইচ্ছা প্রকাশ করছিলেন রেণু । এদিনও রেণু খাতুন ফের বলেন, ‘আমি মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রীর কাছে চিরকৃতজ্ঞ থাকবো । আমি চাই ওনার সঙ্গে দেখা করে কৃতজ্ঞতা জানাতে ।’ জানা গেছে,আগামী আগামী ২৭ জুন রেণুর এই ইচ্ছাপূরণ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে । কারন ওইদিন প্রশাসনিক সভায় যোগ দিতে বর্ধমানে আসছেন মুখ্যমন্ত্রী ।।