প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,১৩ জুলাই : পঞ্চায়েত ভোট ঘোষনার পর থেকে বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী বলে আসছিলেন ’নো ভোট টু মমতা’।কিন্তু হয়েছে ঠিক উল্টোটাই। চারিদিকে শুধু মমতারই জয়জকার । আর তা দেখে ’নো ভোট টু মমতা ভুলে’ পূর্ব বর্ধমান জেলার বিজেপি কর্মীরা এখন যেন বিজেপিকে বাঁচাতেই বেশী ব্যাকুল হয়ে উঠেছেন।বর্ধমান শহরের বুকে পড়া পোস্টারে লেখা বক্তব্যে অন্তত সেই ব্যাকুলতারই প্রকাশ ধরা পড়েছে। পোস্টারে লেখা রয়েছে,’জেলা সভাপতি অভিজিৎ তা ও সাংসদ সুরেন্দ্রজিৎ সিং আলুওয়ালিয়া জুটি হাটাও,পূর্ব বর্ধমান জেলা বিজেপি বাঁচাও ।’
অভিজিৎ তা ও বর্ধমান-দুর্গাপুরের বিজেপি সাংসদ সুরেন্দ্রজিৎ সিং আলুওয়ালিয়া কে নিয়ে এই প্রথম বর্ধমানে পোস্টার পড়লো এমনটা নয় । ইতিপূর্বে
সাংসদ সুরেন্দ্রজিৎ সিং অহলুওয়ালিয়া ‘নিখোঁজ’ বলেও পোস্টার পড়েছিল। এমনকি বিধানসভা নির্বাচনের আগে ‘নো ভোট টু বিজেপি’ লেখা পোস্টার পড়েছিল বর্ধমান শহরে।এইসব পোস্টার
কারা মারছে তা আজও অজানাই রয়ে আছে। তবে পোস্টার কাণ্ড নিয়ে বিজেপি ও শাসক দলের তর্জায় ভাটা পড়েনি ।
বর্ধমান শহরের কার্জন গেট, জেলা প্রশাসনীক দফতর চত্বর, আলিশা, উল্লাস, বীরহাটা প্রভৃতি
এলাকায় বৃহস্পতিবার সকাল বিজেপিকে বাঁচানো সংক্রান্ত পোস্টার সবার নজরে আসে। বিজেপির প্রতীক পদ্মফুল এবং ভারত মাতা কী জয়’ লেখা পোস্টারের একপাশে জেলা বিজেপি সভাপতি
অভিজিৎ তা ,আর অন্য পাসে সাংসদ সুরেন্দ্রজিৎ সিং অহলুওয়ালিয়ার ছবি । এর নিচেই বড় বড় অক্ষরে লেখা রয়েছে,জেলা সভাপতি ও সাংসদ জুটিকে হটিয়ে বিজেপিকে ’বাঁচানো’ শীর্ষক কথা।
পঞ্চায়েত ভোটের ফলাফলে রাজ্যের নিরিখে বিজেপি সিপিএমকে পিছনে ফেলে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে।কিন্তু অন্য জেলার চেয়ে পূর্ব বর্ধমান
জেলায় বিজেপির ফল মাত্রাতিরিক্ত খারাপ। সেই খারাপর ফলের জন্যেই দলের জেলা সভাপতি ও সাংসদকে দায়ী করে দলেরই কোনও গোষ্ঠী পোস্টার মেরে থাকতে পারে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
কমিশনের তথ্য অনুযায়ী পূর্ব বর্ধমান জেলায় বিজেপি পঞ্চায়েত স্তরে ৪০১০টি আসনের মধ্যে ১৮৩৯টি আসনে প্রার্থী দিয়েছিল। তার মধ্যে মাত্র ১৯৮টি আসনে জিতেছে। আর পঞ্চায়েত সমিতি স্তরে বিজেপি জয় পেয়েছে ১২টি আসনে। এই পরিসংখ্যায়নের পরিপ্রেক্ষিতে বিজেপির জেলার মুখপাত্র সৌম্যরাজ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন,“পঞ্চায়েত ভোট ’লুটের’ ভোট হয়েছে । তবুও জেলায় বিজেপিকে আটকানো যায়নি। আমাদের সংগঠন পূর্ব বর্ধমান জেলার পাশাপাশি গোটা রাজ্যেই বাড়ছে। সেটা বুঝে গিয়ে তৃণমূল রাতের অন্ধকারে পোস্টার লাগিয়ে বিজেপির বদনাম করতে চাইছে।’
যদিও এই অভিযোগ নস্যাৎ করেদিয়ে রাজ্য তৃণমূলের মুখপাত্র প্রসেনজিৎ দাস বলেনি,“ওই পোস্টারেই প্রকাশ পেয়েছে বিজেপির গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। আগেও বিজেপির অন্তর্দ্বন্দ্ব পোস্টারে পড়েছিল শহর বর্ধমানের নানা জায়গায় ।পঞ্চায়েত ভোটের ফলাফলে সারা পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি দ্বিতীয় স্থানে থাকলেও শুধূমাত্র পূর্ব বর্ধমান জেলায় বিজেপি তৃতীয় স্থানে রয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে সিপিএম
। এর জন্যই ওই দলের নিচু স্তরের কর্মীরা হয়তো
পোস্টার মাধ্যমে দলের জেলা নেতৃত্ব ও সাংসদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন ।।