এইদিন ওয়েবডেস্ক মন্তেশ্বর(পূর্ব বর্ধমান),২৬ সেপ্টেম্বর : খেয়াল চাপলে মানুষের কাঁধের উপরে চড়ে বসে । খিদে পেলে সোজা গৃহস্থের হেঁসেলে । ঘুম পেলে গৃহস্থের শোবার ঘর ঢুকে খাটের উপর শুয়ে ঘুমোয় । এত কিছু ‘বাঁদরামি’ সত্ত্বেও পূর্ব বর্ধমান জেলার মন্তেশ্বরের হাটপাড়া এলাকাবাসীর নয়নের মণি হয়ে উঠেছে ‘রামু’ । তবে রামু কোনও মানব শিশু নয় । সবেমাত্র কৈশোরে উত্তীর্ণ একটি বাঁদর । মানুষ ঘেঁষা স্বভাব ও মজার আচরনের জন্য আজ সকলের প্রিয়পাত্র হয়ে উঠেছে বাঁদরটি । রবিবার সকালে দেখা গেলে হাটপাড়া বাসষ্ট্যান্ডের একটি চায়ের দোকানে কয়েকজন মিলে চা পান করতে করতে আড্ডা দিচ্ছেন । নজরে পড়তেই সোজা তাঁদের মাঝে চলে গেল রামু । শুরু হয়ে গেল তার খুনসুটি । তবে কাউকে বিরক্ত হতে দেখা গেল না । বরঞ্চ কেউ কেউ বিস্কুট কিনে সস্নেহে রামুর দিকে বাড়িয়ে দিলেন । তা নিমেষের মধ্যে গলাদ্ধকরন করে সোজা গাছের মগডালে উঠে পড়ল বাঁদরটি ।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন,মাস খানেক আগে এলাকায় একটি হনুমানের দলের আবির্ভাব হয় । তখন ওই বাঁদরটি ছিল খুব ছোট । কোনওভাবে সে দলছুট হয়ে যায় । পরে বাঁদরের দলটি চলে গেলে মন্তেশ্বরের হাটপাড়া এলাকাতেই থেকে যায় ছোট্ট বাঁদরটি । স্থানীয় ব্যাবসায়ী ও বাসিন্দারাই তার খাবার জোটাতো । দেখভাল করত । তারপর থেকে পুরো এলাকাটাকেই নিজের বাসস্থান বলে মনে করে বাঁদরটি । বিভিন্ন জনে বিভিন্ন নামে ডাকে তাকে । তবে আজ সে এলাকায় ‘রামু’ নামেই বিখ্যাত ।
স্থানীয় বাসিন্দা নাজির শেখ,সূর্য কৈবর্ত্যরা জানান, কুকুর-ছাগল এমনকি বাচ্ছাদের সঙ্গে বাঁদরটি খেলাধূলা করতে ভালোবাসে । খিদে পেলেই আবার পৌঁছে যায় এলাকার কোনও না কোনও দোকানে অথবা গৃহস্থের বাড়িতে । ভাত,মুড়িসহ মানুষের সকল খাদ্যই রয়েছে রামুর খাদ্যতালিকায় । মোটর সাইকেল,সাইকেল এমনকি মানুষের কাঁধে চড়তেও ভালোবাসে । ক্লান্তি এলে সটান গৃহস্থের বাড়ির বিছানায় গিয়ে শুয়ে পড়ে । হেঁসেলে ঢুকে খাবার খায় । তাঁরা বলেন, ‘বাঁদরটি ছোট থেকেই এলাকায় রয়েছে । তাই সকলেই তার প্রতি দূর্বলতা তৈরি হয়েছে । তাই তার এই সমস্ত আচরনে কেউই ক্ষুব্ধ হয়না ৷ বরঞ্চ মজা উপভোগ করেন সকলে ।’।