ভারত সরকারকে না জানিয়ে সম্প্রতি রাহুল গান্ধী হোয়াইট হাউসে গিয়েছিলেন । দেখা করেছিলেন মার্কিন কর্মকর্তাদের সঙ্গে । করেছিলেন সিক্রেট মিটিং । আলোচনার বিষয়বস্তু কি তা অজানা ৷ কিন্তু যারা আমেরিকার আসল চরিত্র সম্পর্কে অবগত নন,তাদের জানা উচিত যে আমেরিকা যখনই কোন দেশে অভ্যুত্থান ঘটানোর ষড়যন্ত্র করে তখনই সেই দেশের বিরোধী দলের নেতাদের সঙ্গে সখ্যতা শুরু করে। আফগানিস্তানে নূর মুহাম্মাদ সরকারের পতন ঘটানোর জন্য তখন সন্ত্রাসী গোষ্ঠী তালিবান সৃষ্টি করেছিল আমেরিকাই । সিরিয়ায় বাশার আল-আসাদের সরকারের পতন ঘটাতে কুখ্যাত সন্ত্রাসবাদী সংগঠন ইসলামিক স্টেট তৈরি করেছিল । বাংলাদেশের ক্ষেত্রে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ডঃ মুহাম্মদ ইউনূস হল একজন মার্কিন এজেন্ট । তাকে ব্যবহার করেই কাজ হাসিল করে আমেরিকা । প্রাণ বাঁচাতে ভারতে পালিয়ে আসতে হয় প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ৷ এখন ভারতের জন্য আমেরিকার ‘তুরুপের তাস’ হল কংগ্রেসের ‘যুবরাজ’ রাহুল গান্ধী ।
আপনারা যদি রাহুল গান্ধীর জীবনচক্রের দিকে তাকান, তাহলে দেখতে পাবেন যে যখন তিনি জন্মগ্রহণ করেছিলেন, তার ঠাকুমা ছিলেন একজন শাসক। যখন তিনি বড় হয়েছেন, তার বাবা ছিলেন একজন শাসক। রাহুল গান্ধী রাজপুত্রের মতো বড় হয়েছেন। কিন্তু ১৯৮৯ সালে সেই পরিবারের কেউ শেষবার সিংহাসনে বসেন। কংগ্রেসের এই যুবরাজকে মাঝে মাঝেই কখনও চীন অথবা কখনও কখনও ভারতের অন্য কোনও শত্রুর সাথে সাক্ষাৎ করতে দেখা যায় । কিন্তু কেন এটা করেন তিনি ? ইতিহাস না পড়লেও যদি আপনারা লোককাহিনীও পড়ে থাকেন, তাহলে জানতে পারবেন যে অনেক সময় রাজার ছেলে রাজা হতে না পেরে বিশ্বাসঘাতকতার পথ অবলম্বন করত।
বিগত ৪০ বছরের ভারতের রাজনীতির দিকে যদি নজর রাখেন তাহলে দেখতে পাবেন যে শিখদের উপর কোন জোরপূর্বক আক্রমণ হয়নি, কিন্তু তারপরও রাহুল গান্ধী আমেরিকায় এসে বলেছিলেন যে শিখদের ভারতে পাগড়ি পরার অনুমতি নেই। অবিলম্বে, আমেরিকা ভিত্তিক শিখ সন্ত্রাসী গুরপতবন্ত পান্নু এই বক্তব্যকে স্বাগত জানিয়েছেন । রাহুল গান্ধীর মার্কিন সফরে খালিস্তানি সন্ত্রাসী পান্নুর সমর্থন পেয়েছে, কুখ্যাত সন্ত্রাসবাদী সংগঠন ইসলামি স্টেট (ISIS) সমর্থক ইলহান ওমরের সাথে দেখা করেছেন,যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানরত ভারতবিরোধী দেশি সাংবাদিক মুশফিকুল ফজলের সাথে দেখা করেছেন । প্রকাশ্য ভারত বিদ্বেষীদের সাথে রাহুল গান্ধীর ওঠাবসায় তার প্রকৃত উদ্দেশ্য ও মানসিকতা নিয়ে গভীর সন্দেহের উদ্রেগ হয়েছে ।
আমেরিকাও চীনের সাথে একই চেষ্টা করেছে এবং যারা ২০১৪ সালে সংবাদপত্র পড়েছেন তারা নিশ্চয়ই অনুভব করছেন কেন জিনপিংয়ের স্টাইল কেন এত বদলে গেল? একবার জিনপিং এমনকি ৩ দিনের জন্য নিখোঁজ হন এবং সেই সময় তার প্রতিদ্বন্দ্বী লি কেকিয়াং, যিনি আমেরিকার জন্য বিখ্যাত, ওই ঘটনার জন্য দায়ী ছিলেন । এটি যদি ২০১৪ সালের জিনপিং হত, তবে তিনি রাশিয়ার কাছে প্রকাশ্যে অস্ত্র বিক্রি করতেন, নীরবে নয়। আপনারা বিশ্বাস করুন বা না করুন, আমেরিকা চীনের কাছে মাথা নত করেছে। সম্ভবত সে কারণেই এখন তার চোখ ভারতের দিকে।
বর্তমানে ভারতের সবচেয়ে দুর্বল লিঙ্ক হল কংগ্রেস। যারা ৬৫ বছর ধরে শাসন করেছে কিন্তু গত ১০ বছর ধরে ক্ষমতায় ফিরতে এখন সংগ্রাম করছে। রাহুল গান্ধী, যিনি ৩৫ বছর ধরে স্বপ্ন দেখছেন যে তিনি একদিন দিল্লির সম্রাট হবেন, এই অপেক্ষার মধ্যে যে ভারতে একটা অস্থিরতা সৃষ্টি হবে, আর সেই লুকিয়ে টুক করে তিনি প্রধানমন্ত্রী হয়ে যাবেন। ভারতের ভাগ্যে কি আছে তা আমরা কল্পনাও করতে পারি না।
রাজপরিবারে কেউ নিহত হলে হয়তো ব্রিটেন বা ফ্রান্সের মতো ভারতেও বিপ্লব ঘটবে। জনসাধারণের পক্ষে এটা করা কঠিন কিন্তু আমরা জানি যে প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ছাড়াও কিছু গুপ্ত শক্তি আছে যারা আসলে এই দেশ চালাচ্ছে। সেই ক্ষমতাধররা আসলেই দেশের প্রতি অনুগত এবং দুর্নীতিপরায়ণ নন, সম্ভবত এই সংক্ষিপ্ত বিবরণটি পড়লে সাধারণ মানুষ সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন তাদের কী করা উচিত? যারা জাতির পাশে কাঁটা হয়ে থাকবে তাদের সরিয়ে ফেলাই ভালো । কিন্তু ভারতের দুর্ভাগ্য যে এই সমস্ত ‘বিভিষণ’দেরই মাথায় তুলে নাচানাচি করে এক শ্রেণীর মানুষ । তাদের কাছে দেশ নয়,যেনতেন প্রকারেণ তাদের দল ক্ষমতায় আসুক এবং তারা সেই সুযোগে সমাজের উপর ছড়ি ঘুরিয়ে নিজেদের আখের গোছাবে! অন্যদিকে এই সময়ে চীনের সঙ্গে সত্যিকার অর্থে শান্তি প্রতিষ্ঠিত হলে অনেক স্বস্তি হবে কারণ সাত সাগর পাড়ি দিয়ে আসা গুপ্তচর কী রহস্য উন্মোচন করেছে কে জানে ।।