শ্যামসুন্দর ঘোষ,মন্তেশ্বর(পূর্ব বর্ধমান),১৯ মে : বাবা-মা মাঠে কাজে গিয়েছিল । দুপুরে বাড়িতে একাই ছিল বছর তেরোর এক আদিবাসী কিশোরী । সেই সূযোগে বাড়িতে ঢুকে মেয়েটিকে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে একই গ্রামের বাসিন্দা বছর পঞ্চাশের এক মুসলিম ব্যক্তির বিরুদ্ধে । পূর্ব বর্ধমান জেলার মন্তেশ্বর থানার আমাটিয়া গ্রামের এই ঘটনার পর অভিযুক্ত রফিক মণ্ডলের কঠিন শাস্তির দাবিতে শুক্রবার থানা ঘেরাও করল আদিবাসী সংগঠন ভারত জাকাত মাঝি পরগনা মহল । সংগঠনের শতাধিক কর্মী ও সমর্থক এদিন থানার সামনে তুমুল বিক্ষোভ দেখায় । বেশ কিছুক্ষণ বিক্ষোভ চলার পর তারা নিজেরাই আন্দোলন প্রত্যাহার করে নেয় ।
জানা গেছে,মন্তেশ্বর থানার আমাটিয়া গ্রামের অদূরে বাঁকা নদীর পাড়ে বাড়ি নির্যাতিতা আদিবাসী কিশোরীর । তার বাবা-মা দু’জনেই খেতমজুরির কাজ করেন । অন্যদিকে একই গ্রামের বাসিন্দা আলি মণ্ডলের ছেলে রফিক মণ্ডলও (৫০) পেশায় খেতমজুর । সে বিবাহিত । একাধিক সন্তান রয়েছে তার । ঘটনাটি ঘটে গত ৯ মে দুপুরে । ওইদিন কিশোরীদের বাড়ি পাশে একটি জমিতে বোরো ধান কাটতে গিয়েছিল রফিক ।
মন্তেশ্বর থানায় দায়ের করা অভিযোগে নির্যাতিতা কিশোরীর মা জানিয়েছেন,ঘটনার দিন সকালে মাঠে কাজে বেড়িয়ে যান তিনি ও তার স্বামী । বাড়িতে একাই ছিল তাদের ১৩ বছরের মেয়ে । সেই সূযোগে বেলা ১২ টা নাগাদ তাদের বাড়িতে ঢুকে পড়ে রফিক মণ্ডল । রফিক তার মেয়েকে জোর করে নগ্ন করে তার হাত টিপে ধরে যৌন নির্যাতন করে । সেই সময় তিনি বাড়িতে চলে আসেন এবং রফিককে হাতেনাতে ধরে ফেলেন । কিশোরীর মায়ের অভিযোগ,তিনি তার মেয়ের সম্ভ্রম বাঁচানোর চেষ্টা করলে রফিক তার গলা টিপে ধরে । তিনি চিৎকার করে লোকজন ডাকাডাকি করলে সে পালিয়ে যায় । তারপর থেকে সে এলাকা ছাড়া হয়ে যায় ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে,অভিযুক্ত রফিক মণ্ডল তৃণমূল কংগ্রেসের সক্রিয় কর্মী বলে পরিচিত । সেই কারনে কিশোরী পরিবার নির্দিষ্ট অভিযোগ দায়ের করা সত্ত্বেও মন্তেশ্বর থানার পুলিশ প্রথম দিকে রফিক মণ্ডলের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিতে চায়নি বলে অভিযোগ । শেষ পর্যন্ত গত ১২ মে কুসুমগ্রাম থেকে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে পুলিশ গ্রেফতার করে । ধৃতের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪৪৮,৩২৩,৩৫৪-
এ, ৩৫৪-বি এবং পকসো আইনে একটি মামলা রজু করেছে পুলিশ ।
এদিন মন্তেশ্বর থানায় বিক্ষোভে উপস্থিত হওয়া বিকাশবাবু দাবি করেন, অভিযুক্ত ব্যক্তিকে এমন কঠোর শাস্তি দেওয়া হোক যাতে ভবিষ্যতে এই ধরনের ঘৃণ্য কাজ করার কেউ সাহস দেখাতে না পারে ।’ পাশাপাশি তিনি ধৃতের বিরুদ্ধে ১৯৮৯-এর এসসি/এসটি আইনের সংশ্লিষ্ট ধারায় মামলা রজু করার দাবি তুলেছেন ।।