জ্যোতি প্রকাশ মুখার্জ্জী,কলকাতা,১০ মে : সকাল থেকেই মেঘের মুখ ভার। মাঝে মাঝে বৃষ্টি পড়ছে। আবহাওয়া দপ্তরের ইঙ্গিত ঘূর্ণিঝড় ‘অশনি’ প্রবল গতিতে এগিয়ে আসছে। মনের মধ্যে একরাশ আশঙ্কা প্রাকৃতিক বিপর্যয় জনিত কারণে তাহলে কি এবারও কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্ম জয়ন্তী পালন করা যাবেনা ? এদিকে প্রস্তুতি শেষ। রবীন্দ্র জয়ন্তী তো কোনো ব্যক্তির জন্মদিন নয়, একটা জাতীয় উৎসব। স্বাভাবিক কারণেই উল্টোডাঙার বিধান শিশু উদ্যানের শিশুদের মন খারাপ। শেষ পর্যন্ত কর্তৃপক্ষ বিধান শিশু উদ্যানের কালিকাপ্রসাদ মুক্তমঞ্চের পরিবর্তে অন্য জায়গায় অনুষ্ঠানের আয়োজন করার সিদ্ধান্ত নিলে মুহূর্তের মধ্যে বিষাদের কালো মেঘ সরে গিয়ে শিশুদের মুখে ফিরে আসে সেই চির পরিচিত অমলিন হাসি। অনুষ্ঠান শুরু হয় বৈকাল পাঁচটায় ।
অনুষ্ঠানের সূচনা হয় কবিগুরুর চির পরিচিত “হে নূতন, দেখা দিক আর – বার” গানের মধ্য দিয়ে। সেই শুরু। তারপর বিধান কলাকেন্দ্রের প্রায় দেড় শতাধিক শিশু-কিশোর নাচ, গান, আবৃত্তি প্রভৃতির মাধ্যমে কবিগুরুর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে। অনুষ্ঠানের সবচেয়ে বড় আকর্ষণ ছিল ‘ঋতুরঙ্গ’।
প্রসঙ্গত করোনা জনিত নিষেধাজ্ঞার কারণে গত দু’বছর ধরে রবীন্দ্র জয়ন্তী সহ কোনো উৎসব বা অনুষ্ঠান স্বতঃস্ফূর্তভাবে বিধান শিশু উদ্যানে পালন করা সম্ভব হয়নি। এবছর করোনা জনিত নিষেধাজ্ঞা না থাকলেও দুর্যোগের ভ্রূকুটি ছিল। শেষ পর্যন্ত মুক্ত আবহাওয়ায় সুস্থ পরিবেশে রবীন্দ্র জয়ন্তী পালন করা সম্ভব হয়। প্রায় দেড় ঘণ্টা ব্যাপী এই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারী শিশুদের সঙ্গে সঙ্গে তাদের অভিভাবক ও অভিভাবিকাদের উপস্থিতি ও উচ্ছ্বাস ছিল চোখে পড়ার মতো ।
বিধান শিশু উদ্যানের সম্পাদক গৌতম তালুকদার বললেন,:গত দু’বছর ধরে গৃহবন্দী থাকার ফলে একরাশ হতাশা শিশুদের গ্রাস করে ফেলে। ঘূর্ণিঝড়ের আশঙ্কার জন্য এবারও রবীন্দ্র জয়ন্তী পালনের ক্ষেত্রে একটা অনিশ্চয়তা দেখা দেয়। শেষ পর্যন্ত স্থান পরিবর্তন করে সমস্যার সমাধান হয় এবং শিশুদের মন আনন্দে ভরে ওঠে ।’।